করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিল্পসংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি।ওমিক্রনের সতর্কতা জারি রেখেই ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করছে হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলি। বাজারের চাহিদা ও উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে কর্মী সংখ্যা কমানো স…
করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিল্পসংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি।
ওমিক্রনের সতর্কতা জারি রেখেই ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করছে হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলি। বাজারের চাহিদা ও উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে কর্মী সংখ্যা কমানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি সংস্থাগুলির। তাছাড়া হলদিয়ার সিংহভাগ শিল্পসংস্থা জরুরি পরিষেবামূলক ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। সেজন্য হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসেবে দ্রুত করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিল্পসংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি। অভিযোগ, করোনার টিকাকরণ শুরুর সময় বার বার আবেদন সত্ত্বেও হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের দ্রুত ভ্যাকসিনেশন নিয়ে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্যদপ্তর ও পুর কর্তৃপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ দেখা যায়নি। বরং শ্রমিকদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসেবে দেখানো নিয়ে প্রশাসন ও পুরসভার সঙ্গে শিল্প সংস্থাগুলির টানাপোড়েন রয়েছে। শিল্পাঞ্চলের ৩০-৩৫ হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক কর্মচারীকে কীভাবে দ্রুত বুস্টার ডোজ দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তায় শিল্প সংস্থাগুলি।
শিল্প সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া বন্দর, আইওসি, পেট্রকেম, বিভিন্ন ভোজ্যতেল কারখানা দৈনন্দিন এবং জরুরি উৎপাদনমূলক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। হলদিয়া পূর্ব ভারতের একমাত্র পেট্র-রাসায়নিক শিল্পাঞ্চল ও এলপিজি আমদানির কেন্দ্র হওয়ায় করোনা ও লকডাউনের সময়েও হাজার হাজার শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করতে হয়েছে। এক্সাইড বা পেট্রকেমের মতো কয়েকটি কারখানা অবশ্য বন্ধ ছিল। সিংহভাগ শিল্প সংস্থা নিজেদের খরচে ভ্যাকসিন কিনে শ্রমিকদের টিকাকরণ করে। শিল্প সংস্থাগুলির বক্তব্য, লকডাউনের সময় বন্ধ থাকায় বা উৎপাদন কমে যাওয়ায় তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। তবুও কারখানা বন্ধ থাকাকালীন শ্রমিক কর্মচারীদের সম্পূর্ণ বেতন দিয়েছে। বেশিরভাগ কারখানা কর্তৃপক্ষ লকডাউনের সময় বাড়তি মজুরি দিয়ে শ্রমিকদের কাজ করিয়েছে। এখন উৎপাদন হঠাৎ কমিয়ে দিলে শ্রমিক ও মালিক উভয়েই ক্ষতির মুখে পড়বে।
শিল্প সংস্থার আধিকারিকরা বলেন, প্রতিটি কারখানার প্রায় ১০০ শতাংশ শ্রমিক কর্মচারীর করোনা ভ্যাকসিনের ডবল ডোজ হয়ে গিয়েছে। ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট ছাড়া এখন কাউকে কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাছাড়া বাজারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রতিটি কারখানায় পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন হচ্ছে। এখন তা হঠাৎ করে বন্ধ করা যায় না। প্রথমদিকে শ্রমিকদের মধ্যে ওমিক্রনের আতঙ্ক থাকলেও এখন তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। কারও জ্বর বা শরীর খারাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্টং করতে বলা হচ্ছে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। কড়াভাবেই নজরদারি করা হচ্ছে এবং শ্রমিকরাও খুব সচেতন হয়ে গিয়েছেন। শ্রমিকরা কেউ কাজ বন্ধ করতে চাইছেন না। এই পরিস্থিতিতে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলির শ্রমিক ও কর্মচারীদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসেবে দ্রুত বুস্টার ডোজ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন হলদিয়া এনার্জির আধিকারিক বিদুষরঞ্জন সেন, এক্সাইডের কর্মী সংগঠনের নেতা গোলক দাসের মতো সকলেই।
এক্সাইডের এক আধিকারিক বলেন, বহিরাগত কেউ বা ভিন রাজ্যের কাউকে কারখানায় ঢুকতে হলে আরটিপিসিআরের নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। ওমিক্রনের জন্য এই কড়াকড়ি করা হয়েছে। হলদিয়া বন্দরে ওমিক্রনের জন্য বন্দর এলাকায় মাস্ক ছাড়া ঘুরলেই ১ হাজার টাকা ফাইন করা হবে বলে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আইএনটিটিইউসির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মাইতি বলেন, হলদিয়ায় প্রায় ৩০-৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মচারী রয়েছেন। সংক্রমণের মধ্যেই তাঁদের কাজ করতে বাধ্য হতে হচ্ছে বৃহত্তর সামাজিক প্রয়োজনে। গতবার তাদের সংস্থাগুলি উদ্যোগ নিয়ে ভ্যাকসিন দিয়েছিল। এবার স্বাস্থ্যদপ্তর এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বুস্টার ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।
No comments