তমলুকের শ্রীরামপুর থেকে পাঁশকুড়া যাওয়ার গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তায় ধস নেমে চলে গেল ২৫টি দোকানঘর
সোমবার সকালে তমলুকের শ্রীরামপুর থেকে পাঁশকুড়া যাওয়ার গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তায় দোবাঁধি এলাকায় ধস নেমে প্রায় ২০ ফুট নীচে চলে গেল ২৫টি …
তমলুকের শ্রীরামপুর থেকে পাঁশকুড়া যাওয়ার গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তায় ধস নেমে চলে গেল ২৫টি দোকানঘর
সোমবার সকালে তমলুকের শ্রীরামপুর থেকে পাঁশকুড়া যাওয়ার গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তায় দোবাঁধি এলাকায় ধস নেমে প্রায় ২০ ফুট নীচে চলে গেল ২৫টি দোকানঘর। ভেঙে পড়েছে পঞ্চায়েত সমিতির একটি টয়লেট। ৮০ ফুট রাস্তাজুড়ে ধস নামে। গতবছর কংসাবতী নদীতে খননের কাজ হওয়ার ওই এলাকায় নদী অনেকটা খরস্রোতা হয়ে গিয়েছিল। কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় ফাটল দেখা যায়। তাই ধসের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু, সেই ধস এতটা ভয়াবহ রূপ নেবে, তা কেউ কল্পনা করতে পারেননি। খবর পেয়েই এদিন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা, তমলুকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল প্রমুখ ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার পর রাস্তায় যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। সৌমেনবাবু বলেন, মঙ্গলবার থেকেই মেরামতের কাজ শুরু হবে।
জানা গিয়েছে, গত বছর কংসাবতী নদীতে খনন কাজ হয়েছে। তারপর নদীর জলধারণ ক্ষমতা বেড়েছে। সম্প্রতি কংসাবতী নদীর জল অনেকটাই কমেছে। তাই পলির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার কারণেই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দোবাঁধি এলাকায় ওই ধস নামে। তাতে রাস্তার ধার বরাবর মাটি আড়াআড়িভাবে ২০ ফুট বসে গিয়েছে। শ্রীরামপুর থেকে প্রতাপপুর পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার অংশজুড়ে ওই রাস্তায় ট্রেকার, টোটো সহ অনেক যানবাহন চলাচল করে। ময়না, তমলুক ও পাঁশকুড়ার সংযোগকারী ওই রাস্তায় আচমকা ধস নামার পর থেকেই ওই এলাকা ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। ধসের খবর শুনেই পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মানুষজন ভিড় জমান। ধস কবলিত এলাকার ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। ধসে বসে গিয়েছে শ্রীমন্ত সাউয়ের চায়ের দোকান, মৃত্যুঞ্জয় মান্নার ফলের দোকান, অদ্বৈত সাউয়ের স্টেশনারি দোকান। তাঁরা বলেন, কয়েকদিন ধরে এখানে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তাই আগাম সাবধানতা হিসেবে দোকানঘর থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তারজন্য সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেল। আমরা চাই, সেচদপ্তর দ্রুত ওই ধস মেরামত করে রাস্তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনুক।
এদিন ধস নামার পর সেচ ও জলপথ দপ্তরের তমলুক ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নদীতে জল অস্বাভাবিক কমে যাওযায় পলির স্তর নেমে গিয়েই ধস বলে তাঁরা রিপোর্ট দিয়েছেন। ওই এলাকায় আরও অনেক দোকানপাট রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরাও আতঙ্কে আছেন। তমলুকের বিডিও বলেন, নদীতে পলির স্তর নেমে যাওয়াতেই এই ধস বলে সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন। আপাতত ব্যারিকেড করা হয়েছে। ওই জায়গায় আরও অনেক দোকানপাট রয়েছে। স্বস্তির খবর, কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নদীতে খনন কাজ চলার সময় আমরা পিচ রাস্তা ঘেঁষে মাটি কাটার বিরোধী ছিলাম। স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যও সেটা সেচদপ্তরের নজরে এনেছিলেন। কিন্তু, সেই আপত্তি মানা হয়নি। মাটি কাটার সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে হয়তো আজ এভাবে ধস নামত না। এই ঘটনা নিয়ে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, দোবাঁধি এলাকায় ধস নেমেছে। বিডিও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে।
No comments