২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নয়াচরে ফিশিং হাব কাম ইকো ট্যুরিজম স্কিমের রিপোর্ট নবান্নে
অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের ভিজিটের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নয়াচরে ফিশিং হাব কাম ইকো ট্যুরিজম স্কিমের রিপোর্ট নবান্নে পাঠাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জে…
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নয়াচরে ফিশিং হাব কাম ইকো ট্যুরিজম স্কিমের রিপোর্ট নবান্নে
অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের ভিজিটের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নয়াচরে ফিশিং হাব কাম ইকো ট্যুরিজম স্কিমের রিপোর্ট নবান্নে পাঠাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি নিজের অফিসে অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) দিব্যা মুরুগেসন, অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি) অনির্বাণ কোলে, জেলা পরিকল্পনা অফিসার বুদ্ধদেব পান সহ প্রশাসনের অফিসারদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পর রিপোর্ট তৈরি করে এদিনই নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নয়াচর এলাকাটি সিআরজেড(কোস্টাল রেগুলেশন জোন) এর আওতায় পড়ে। তাই ওই জায়গাটি মৎস্য চাষ এবং ইকো ট্যুরিজমের পক্ষে আদর্শ হবে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছে প্রশাসন।‘যশ’ সাইক্লোনের সময় আস্ত নয়াচর জলের তলায় চলে গিয়েছিল। তাই পরিকাঠামোগত বেশকিছু কাজের সুপারিশ করা হয়েছে। তারমধ্যে রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য, কটেজ এবং সৌর বিদ্যুতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট মুখ্যসচিব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনবেন। তারপরই সরকারিভাবে নয়াচরে ওই স্কিম নিয়ে ঘোষণা হবে। মৎস্য দপ্তর, পর্যটন, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, বনদপ্তর সহ সরকারের একাধিক বিভাগ একযোগে ওই কাজে শামিল হবে। হলদিয়া থেকে নয়াচরে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে যাওয়া ব্যয় সাপেক্ষ। তাই সেখানে সোলার এনার্জি ফার্ম গড়া হবে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বুধবার রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অত্রি ভট্টাচার্য নয়াচর ভিজিট করেন। প্রস্তাবিত ফিশিং হাব এবং ইকো ট্যুরিজম প্রকল্পের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেন নবান্নের প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা নয়াচরের ওই প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ওই প্রকল্পের রূপায়ণ হলে নয়াচর থেকে রাজ্যের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে। বেদখল হওয়া জমি সরকারি আয়ত্তে আসবে। তৈরি হবে কর্মসংস্থানও।জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, নয়াচরে জমির পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার একর। তারমধ্যে প্রায় দেড় হাজার একর জমি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের। বাম জমানায় সালেম গোষ্ঠীকে কেমিক্যাল হাবের জন্য তৎকালীন রাজ্য সরকার বেশিরভাগ জমি তুলে দিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় এসইজেড প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। এখন ভূমি দপ্তরের অধীনে ওই জমি রয়েছে। তারমধ্যে কতটা জমিতে ফিশিং হাব, কতটা জমিতে ইকো ট্যুরিজম, সোলার প্ল্যান্ট, রাস্তাঘাট ইত্যাদি বিশদে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রকল্প রূপায়ণ হলে নয়াচরে পর্যটক আনাগোনা বাড়বে। মীনদ্বীপকে ঘিরে কর্মসংস্থান তৈরি হবে।এই মুহূর্তে নয়াচরে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। মৎস্য দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, ৪০০একর জমির উপর প্রায় ৩১৬টি পুকুর রয়েছে। দক্ষিণ ২৪পরগনা, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া এলাকার মানুষজন এখানে রয়েছেন। রাজ্য সরকার নয়াচরে ফিশিং হাব নিয়ে তৎপর হতেই ভূমি দপ্তরের জায়গার উপর বসবাসকারী দ্বীপের বাসিন্দারা উচ্ছেদের আশঙ্কায় রয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, নয়াচরে ফিশিং হাব এবং ইকো ট্যুরিজম নিয়ে শুক্রবারই নবান্নে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সরকারিভাবে ওই স্কিম নিয়ে ঘোষণা করবেন।জেলাশাসক সহ জেলা প্রশাসনের টিম আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আবারও নয়াচরে গিয়ে রাত্রিবাস করে গোটা এলাকা ঘুরে দেখার পরিকল্পনা নিয়েছে। আপাতত নবান্নে রিপোর্ট যাওয়ার পর সরকারিভাবে ঘোষণার অপেক্ষা। তারপরই মীনদ্বীপকে ঘিরে শুরু হবে কর্মযজ্ঞ। এখন তারই আগাম প্রস্তুতি চলছে।
No comments