বুধবার খেজুরিতে ‘হার্মাদ-মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে তৃণমূল ও বিজেপির আলাদা কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি ঘিরে হামলা, অবরোধ ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয় খেজুরি। বীরবন্দর এলাকায় তৃণমূলের সভামুখী কর…
বুধবার খেজুরিতে ‘হার্মাদ-মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে তৃণমূল ও বিজেপির আলাদা কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি ঘিরে হামলা, অবরোধ ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয় খেজুরি। বীরবন্দর এলাকায় তৃণমূলের সভামুখী কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বিজেপি। তাতে চার তৃণমূল কর্মী জখম হন। তাঁদের কামারদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। জখমদের দেখতে হাসপাতালে যান দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণকুমার মাইতি, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস প্রমুখ।
২০১০সালে ২৪ নভেম্বর হার্মাদমুক্ত হয় খেজুরি। তারপর থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘হার্মাদ-মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। এবছর তৃণমূলের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার উদ্যোগে বিজেপির আয়োজনে প্রথম হার্মাদমুক্তি দিবসে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। একই দিনে একই ইস্যুতে দুই দলের কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিলই। সেইমতো বিভিন্ন থানা থেকে প্রচুর ফোর্স নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এদিন সকালে বাঁশগোড়া থেকে কামারদা পর্যন্ত পদযাত্রা করে বিজেপি। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের স্লোগানকে সামনে রেখে সেই মিছিলে যোগ দেয় বাম জামানায় হার্মাদ বলে পরিচিত বেশ কয়েকজনকে। তারা জার্সিবদল করে বিজেপির পতাকা ধরে মিছিলে হাঁটতে থাকে। বিজেপির অভিযোগ, কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে বারাতলা এলাকায় তাদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। অটো ভাঙচুরের পাশাপাশি খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিকের ভাই পল্টুবাবুকে অপহরণ করা হয়। তার প্রতিবাদে বিজেপি কর্মীরা কুঞ্জপুর, বাঁশগোড়া ও হেঁড়িয়ায় পথ অবরোধ করে। বেলা ২টোর সময় কলাগেছিয়ার ঘোলাবাড় মাঠে তৃণমূলের হার্মাদমুক্তি দিবস উপলক্ষে সভামুখী কর্মীদের বাধা দেয় বিজেপি। তা ঘিরেও উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও পুলিস দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের কর্মসূচি বানচাল করতেই বিজেপি হামলার মিথ্যে অভিযোগ তুলে অবরোধ করেছিল।
তৃণমূলের সভায় এদিন ব্যাপক ভিড় হয়। সভাস্থলে ঢোকার ৫০০মিটার আগে থেকে ভিড়ের চোটে রাস্তা পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই সভায় আসার পথে খেজুরি-১ব্লকের বীরবন্দর এলাকায় বিজেপির লোকজন শাসক দলের কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এদিনের সভায় রাজ্যের সেচ ও জলপথ দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ২০১০সালে ২৪নভেম্বর অত্যাচারী হার্মাদরা এলাকাছাড়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে হার্মাদমুক্ত খেজুরিতে উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসে। খেজুরিতে আগে হার্মাদ ছিল এখন আর এক হার্মাদ এসেছে। শুধুমাত্র রংটা বদলেছে। লাল থেকে গেরুয়া। বাম থেকে রাম। তাই আবার হার্মাদ খেজুরি দখল করার চেষ্টা করছে। খেজুরির মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই বাহুবলী নেতা ফের হার্মাদ দিয়ে অশান্তি এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা অহিংসার পথে লড়াই করে খেজুরির মাটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করব। কোনও শক্তি খেজুরির মাটিতে দাগ ফেলতে পারবে না। সকালের পদযাত্রায় স্থানীয় ২০০জন ছিলেন। বাকিরা কাঁথি ও নন্দীগ্রাম থেকে এসেছিলেন। যতই তর্জন গর্জন করুক না কেন, ২০২৩সালে এই খেজুরি থেকে একটাও পঞ্চায়েত জিততে পারবেন না, এই চ্যালেঞ্জ করছি। ২০১০ সালের মতো ২০২১ সালেও পেশিশক্তি, অর্থশক্তির বিরুদ্ধে খেজুরির মাটিতে লড়াই চলবে। এখানে তোমাদের কোনও স্থান নেই, সেটা প্রমাণ করে দেব।
No comments