Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ফুল চন্দনের অভ্যর্থনা ছাত্র-ছাত্রীদের

করোনা মহামারীর ধাক্কায় দীর্ঘ কয়েক মাস পর মঙ্গলবার স্কুলের আঙিনায় পা রাখল পড়ুয়ারা। ফিরে এল স্কুলের ঘণ্টার পরিচিত সেই আওয়াজ। টানা গৃহবন্দি দশা কাটিয়ে ছাত্রছাত্রীরা যাতে স্কুল চৌহদ্দির মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে উঠে সেজন্য কোথাও শিক্ষক-শিক…

 



করোনা মহামারীর ধাক্কায় দীর্ঘ কয়েক মাস পর মঙ্গলবার স্কুলের আঙিনায় পা রাখল পড়ুয়ারা। ফিরে এল স্কুলের ঘণ্টার পরিচিত সেই আওয়াজ। টানা গৃহবন্দি দশা কাটিয়ে ছাত্রছাত্রীরা যাতে স্কুল চৌহদ্দির মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে উঠে সেজন্য কোথাও শিক্ষক-শিক্ষিকারা গেটে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানালেন, কোথাও আবার চন্দনের ফোঁটায় বরণ করা হল। কচিকাঁচাদের অভয় দিতে স্কুলে গেটে হাজির ছিলেন জনপ্রতিনিধিরাও। প্রথমদিন দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে ৫০শতাংশ ছাত্রছাত্রী হাজির হয়েছিল বলে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকরা জানিয়েছেন। ধীরে ধীরে হাজিরা বাড়বে বলে তাঁদের আশা।


পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৪৬৩টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৮১টি মাধ্যমিক স্কুল এদিন খুলে গিয়েছে। তমলুক শহরের সান্ত্বনাময়ী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইলা পাড়ই মাইতি সহ অন্যান্য শিক্ষিকারা গেটের সামনে ছাত্রীদের স্বাগত জানান। ছাত্রীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে থার্মাল গানে তাপমাত্রা চেকিং করে ক্লাসরুমে পাঠানো হয়। প্রত্যেক ছাত্রীর হাতে করোনা পরিস্থিতি কী কী করণীয় লিফলেট তুলে দেওয়া হয়। করোনা নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষিকারা। মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের গেটেও করোনা বিধিনিষেধের বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়েও ক্লাস শুরু হতেই করোনার আলোচনা করেন অধ্যাপকরা। ভগবানপুরের অনলবেড়িয়া হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রফুল্লকুমার জানা বলেন, ছাত্রছাত্রীরা আসায় স্কুল প্রাণ ফিরে পেল। করোনার ধাক্কায় ওদের পড়াশোনায় খুব ক্ষতি হয়ে গেল। 

হলদিয়া রানিচক বিবেকননন্দ বিদ্যাভবন স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলার দেবপ্রসাদ মণ্ডল ছাত্রছাত্রীদের গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানান। হলদিয়ার বিভিন্ন ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলও খুলে যায়। হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি, ল’কলেজে এদিন ভিনরাজ্যের পড়ুয়ারাও যোগ দেন। তাঁদের চকোলেট ও গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। ভিনরাজ্যের পড়ুয়াদের আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কাঁথির দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ে হাজির হয়েছিলেন এসডিও আদিত্যবিক্রম হিরানি। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র বলেন, প্রথম দিন ৫০শতাংশ পড়ুয়া এসেছিল।

মেদিনীপুর, খড়্গপুর, গড়বেতা, ডেবরা, সবং, ঘাটাল সহ সর্বত্র স্কুল খোলার প্রথম দিন পড়ুয়াদের চন্দনের ফোঁটা ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। মেদিনীপুর শহরের একাধিক স্কুলের গেটে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে ফেস্টুন টাঙানো হয়। পুরবোর্ডের চেয়ারপার্সন সৌমেন খান পড়ুয়াদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেন। খড়্গপুর শহরের অতুলমনি হাইস্কুলে পাতাবাহার গাছের পাতায় ‘নব আনন্দে জাগো’ লিখে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরিচালক সমিতির সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, প্রায় ৫০শতাংশ পড়ুয়া উপস্থিত ছিল। মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিভাগে শিক্ষিকারা করতালি দিয়ে পড়ুয়াদের স্বাগত জানান। শহরের অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালক সমিতির সভাপতি সুব্রত সরকার বলেন, দূরত্ববিধি বজায় রাখতে প্রতিটি ক্লাসরুমে ৩০জন করে ছাত্রীকে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। নারায়ণগড়ের বেলটি গিরিবালা হাইস্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ দেখান। সেই কারণে স্কুল শুরু করা যায়নি।  এদিন জঙ্গলমহলের স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল অপেক্ষাকৃত কম। অনেক স্কুলে ২০-৩০শতাংশ পড়ুয়া উপস্থিত ছিল। শালবনী মৌপাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া বলেন, অনেকে চাষের কাজে যুক্ত হয়ে গিয়েছে। আবার কেউ কেউ গৃহশিক্ষকতা করছে। ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলেন, উপস্থিতি খুবই কম। কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৫০ শতাংশের বেশি ছাত্রছাত্রী এসেছিল। ঝাড়গ্রাম জেলায় ৪৭.৭শতাংশ পড়ুয়া এদিন উপস্থিত ছিল বলে জেলা শিক্ষাদপ্তর জানিয়েছে। মোট ১৬১টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে খুলল। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আগের মতো উপস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে।

No comments