Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

গোলাবের প্রভাবে প্রবল বর্ষণে ভাসল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল

নিম্নচাপের অতিবৃষ্টির জেরে কার্যত জলে ভাসছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। অতিবৃষ্টিতে বুধবার সকালে প্ল্যান্টে জল ঢুকে পড়ায় উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে আইওসি রিফাইনারি সহ একাধিক শিল্পসংস্থা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে হলদিয়া বন্দরের ডক এলাকার সমস্ত কা…

 




 



নিম্নচাপের অতিবৃষ্টির জেরে কার্যত জলে ভাসছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। অতিবৃষ্টিতে বুধবার সকালে প্ল্যান্টে জল ঢুকে পড়ায় উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে আইওসি রিফাইনারি সহ একাধিক শিল্পসংস্থা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে হলদিয়া বন্দরের ডক এলাকার সমস্ত কাজকর্ম। ডক এলাকায় প্রায় কোমর সমান জল জমে যাওয়ায় রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। বিভিন্ন কারখানার প্রবেশপথ এবং শিল্পসংস্থার আবাসনগুলি জলমগ্ন হওয়ায় এদিন বিপাকে পড়েন শ্রমিক কর্মচারী ও আধিকারিকরা। রাতভর বৃষ্টিতে এদিন সকালেই হলদিয়া পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নিচু এলাকা ডুবে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে থাকে। ফলে শিল্পশহরের বহু উঁচু রাস্তাও জলের তলায় চলে যায়। এর ফলে বাড়ি বা আবাসন থেকে বেরিয়ে বাজার বা কর্মস্থলে পৌঁছতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বহু মানুষ। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ ইতিমধ্যেই জলবন্দি হয়ে পড়েছেন।


আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের কেন্দ্র হলদিয়া এলাকা হওয়ায় এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এদিন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১৬ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গিয়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে একনাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় শিল্পশহর কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সকালের দিকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই শ্রমিক কর্মচারীরা বাইকে বা সাইকেলে চেপে কারখানায় যান। কিন্তু, সিংহভাগ কারখানার গেটে হাঁটু সমান জল জমে যাওয়ায় বাইক চেপে পৌঁছতে গিয়ে শ্রমিক কর্মচারীরা বিপাকে পড়েন। অনেকের ইঞ্জিনে জল ঢুকে যাওয়ায় বাইক বিকল হয়ে যায়। আইওসি রিফাইনারির কর্মীরা বলেন, কারখানার গেটে ঢোকার ইলেক্ট্রনিক পাঞ্চিং মেশিন জল ঢুকে বিকল হয়ে গিয়েছে। হাইড্রো কোকার প্ল্যান্ট সহ দু’একটি প্ল্যান্ট চালু থাকলেও ৭৫ শতাংশ ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।


বৃষ্টির জন্য মঙ্গলবার রাত থেকেই হলদিয়া বন্দরে জাহাজে পণ্য ওঠানামা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্দরের বার্থগুলিও জলমগ্ন হয়েছে। ফলে পণ্য নামিয়ে রাখার জায়গা নেই। বন্দরের শ্রমিক নেতা প্রদীপ বিজলি বলেন, কয়লা, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন ওর, কোকিং কোল, সালফার রাখার প্লটগুলি এখন এক কোমর জলের তলায়। কয়েকদিন আগেই বৃষ্টিতে সেগুলি ডুবে গিয়েছিল। জল কমার আগেই ফের অতিবৃষ্টিতে সেখানে জল বেড়েছে। বন্দরের রাস্তাগুলিও নদীর আকার নিয়েছে। কয়লার প্লটে পণ্য আনতে গিয়ে অনেকগুলি ডাম্পার অর্ধেক ডুবে গিয়ে ইঞ্জিন খারাপ হয়ে গিয়েছে। জেনারেল কার্গো বার্থের বিশাল শেডও জলে ভাসছে। এর ফলে পণ্য আমদানি রপ্তানিকারীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। 


অতিবৃষ্টিতে পুরসভার ১৩, ১৪, ১৫এর মতো নিচু ওয়ার্ডগুলি ফের জলমগ্ন হয়েছে। এদিন সকালে পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আজিজুল রহমান কোমর সমান জল পেরিয়ে ছাতা মাথায় বস্তি এলাকা ও দুঃস্থ পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন।


পুরসভার পক্ষ থেকে ত্রিপল ও ত্রাণ পাঠানোর আশ্বাস দেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটিসেন্টার এলাকা সংলগ্ন কোনও বড় ক্যানেল না থাকায় ওই এলাকা বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হচ্ছে এবং বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য জল ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। এজন্য ১৫কোটি টাকার একটি প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। আপাতত সমস্যা মেটাতে মনসাতলা ক্যানেলের নিকাশি সংস্কারের জন্য ২০ লক্ষ টাকার একটি টেন্ডার ডেকেছিল মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর। কিন্তু, ক্যানেল জবরদখল থাকায় কেউ টেন্ডারে অংশ নিতে চাইছে না। ফলে বৃষ্টি হলেই সমস্যা বাড়ছে শিল্পশহরে।

No comments