হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে রওনা দেওয়ার পর পণ্যবাহী লরি উধাও হওয়ায় ঘটনায় শিল্পাঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলি এনিয়ে চিন্তায় পড়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার সামগ্রী সহ হাওয়া হয়ে যাচ্ছে পণ্যবাহী লরি। একটা, দু’টো নয়, ধার…
হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে রওনা দেওয়ার পর পণ্যবাহী লরি উধাও হওয়ায় ঘটনায় শিল্পাঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলি এনিয়ে চিন্তায় পড়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার সামগ্রী সহ হাওয়া হয়ে যাচ্ছে পণ্যবাহী লরি। একটা, দু’টো নয়, ধারাবাহিকভাবে এই ঘটনার নেপথ্যে ভিন রাজ্যের কোনও গ্যাং জড়িত কি না খতিয়ে দেখছে পুলিস। বেশিরভাগ ঘটনার ধরন মোটামুটি একইরকম। পণ্যসামগ্রী নিয়ে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার নির্ধারিত দিন থেকেই লরি চালকের মোবাইল বন্ধ। সম্প্রতি এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনায় হলদিয়া, দুর্গাচক ও ভবানীপুর থানায় অভিযোগ এসেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
অতিরিক্ত পুলিস সুপার(হলদিয়া) পার্থ ঘোষ বলেন, এধরনের বেশকিছু অভিযোগ আসার পরই আমরা তদন্ত শুরু করি। কয়েকটি ঘটনার কিনারাও হয়েছে। পুলিস এব্যাপারে নজরদাবি চালাচ্ছে।
সম্প্রতি হলদিয়া থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে ২৯ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার পণ্যসামগ্রী সহ একটি লরি হাপিস হয়েছে। গত ২২আগস্ট এনিয়ে হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় এফআইআর করেছেন হলদিয়ার আজাদহিন্দ নগরের বাসিন্দা উমেশকুমার পাণ্ডে। উমেশবাবু একটি ট্রান্সপোর্ট সংস্থার কর্ণধার। তিনি বলেন, আমাদের ট্রান্সপোর্ট সংস্থা হলদিয়া থেকে গোটা দেশের নানাপ্রান্তে পণ্য সাপ্লাই করে। আমাদের সংস্থার মাধ্যমে আদানি উলমার কারখানা থেকে শিলিগুড়িতে ডেলিভারি দেওয়ার জন্য একটি লরি পণ্যসামগ্রী নিয়ে গত ৩০ জুলাই রওনা দিয়েছিল। চারদিনও পরও শিলিগুড়িতে লরি পৌঁছায়নি। আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখি, লরি চালক, খালাসি, ম্যানেজার এবং ব্রোকার প্রত্যেকের মোবাইল বন্ধ। ২২আগস্ট আমরা থানায় এফআইআর করেছি।
গত ১৯ আগস্ট হলদিয়ার সিটি সেন্টারে অবস্থিত আর একটি পরিবহণ সংস্থার মাধ্যমে ইন্দোরামা কারখানা থেকে ৪৪০ বস্তা রাসায়নিক সার বীরভূমে পাঠানোর সময় মাঝপথেই উধাও হয়ে যায় সারভর্তি লরি। ওই ট্রান্সপোর্ট সংস্থাও গত ২২আগস্ট দুর্গাচক থানায় এনিয়ে এফআইআর করেছে। ট্রান্সপোর্ট সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার সুকুমার পট্টনায়েক বলেন, গাড়িতে সাত লক্ষ টাকা মূল্যের সার ছিল। লরির দুই পার্টনার এবং চালকের মোবাইল বন্ধ। এর ফলে আমাদের সংস্থার বিরাট ক্ষতি হল।
গত ৩১ জুলাই ভবানীপুর থানায় এসংক্রান্ত আরও একটি গুরুতর অভিযোগ এসেছে। হলদিয়ার দেভোগে অবস্থিত একটি ট্রান্সপোর্ট সংস্থার কর্ণধার জন এস পালনজি এনিয়ে এফআইআর করেন। ওই ট্রান্সপোর্ট সংস্থা হলদিয়া থেকে গোটা দেশের পণ্য সাপ্লাই করে। গত ৮জুলাই ওই সংস্থা একটি লরিতে ১১লক্ষ টাকা মূল্যের ম্যাঙ্গানিজ আকরিক হলদিয়া বন্দর থেকে পুরুলিয়া পাঠাচ্ছিল। ১০ তারিখ সেখানে যাওয়ার পর পার্টি জানায়, ম্যাঙ্গানিজ আকরিকের সঙ্গে অন্য সামগ্রী মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই লরি মালিক, চালক এবং ব্রোকারের ফোন বন্ধ।
সম্প্রতি হলদিয়া থেকে বিভিন্ন প্রান্তে পণ্যসামগ্রী পাঠানোর সময় এভাবেই লরি মাঝপথে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলি বেকায়দায় পড়ছে। থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘটনার কিনারা হচ্ছে না। হলদিয়া বন্দর এবং শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার পণ্যসামগ্রী বোঝাই লরি দেশের নানাপ্রান্তে রওনা দেয়। একাধিক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সেই কাজে যুক্ত। ইদানীং পণ্যবাহী লরি উধাও হওয়ার ঘটনা বেড়েছে।
No comments