পেট্রকেমের অগ্নিকাণ্ডে টনক নড়েছে প্রশাসনের। সেজন্য হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলির দক্ষতা যাচাই করতে এবার কারখানায় আগুন নেভানোর কৌশলের উপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে কারখানা পরিদর্শকের দপ্তর। হলদিয়ার আইওসি রিফাইনারিতে শীঘ্রই এধরনের অভি…
পেট্রকেমের অগ্নিকাণ্ডে টনক নড়েছে প্রশাসনের। সেজন্য হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলির দক্ষতা যাচাই করতে এবার কারখানায় আগুন নেভানোর কৌশলের উপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে কারখানা পরিদর্শকের দপ্তর। হলদিয়ার আইওসি রিফাইনারিতে শীঘ্রই এধরনের অভিনব প্রতিযোগিতা হবে। কোন সংস্থা কত দ্রুত আগুন নেভাতে পারে সেই দক্ষতা বিচার করা হবে। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে কারখানাগুলিকে ফায়ার সেফটি নিয়ে সচেতন করতেই নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। এর আগে গত আগস্ট মাসে হলদিয়ার কারখানাগুলিকে প্রতি দু’মাস অন্তর ফায়ার মকড্রিল করার কড়া নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। মূলত অতিদাহ্য গ্যাস এবং পেট্ররাসায়নিক কারখানাগুলির জন্য বাড়তি সতর্কতা জারি হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্বকর্মা পুজোয় ফায়ার সেফটি নিয়ে থিম তৈরি করে শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিতে কারখানাগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, হলদিয়ার স্কুলগুলিতে অগ্নি নির্বাপনের পাঠ দিতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
হলদিয়ার অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ দেবায়ন দে বলেন, গত একমাস ধরে কারখানা পরিদর্শন করে ফায়ার সেফটি নিয়ে হলদিয়ার শিল্পসংস্থাগুলিকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। হলদিয়ায় বিভিন্ন ধরনের অতিদাহ্য গ্যাস ও পেট্ররাসায়নিকের ব্যবহার হওয়ায় বিপদের আশঙ্কা বেশি থাকে। সামান্য গাফিলতি বা নজরদারির অভাব ঘটলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য অগ্নি সুরক্ষা বিধি নিয়ে নতুন ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কারখানাগুলির অগ্নিনির্বাপনের দক্ষতা কৌশলের পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য আইওসি রিফাইনারিতে উপযুক্ত জায়গা ও পরিবেশ রয়েছে। তিনি জানান, হলদিয়ায় মূলত এলপিজি, হাইড্রোকার্বন, ডিজেল বা পেট্রল, ইলেকট্রিক্যাল এবং সাধারণ অর্থাৎ পাঁচ ধরনের আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। প্রতিযোগিতার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে, সেজন্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
হলদিয়ার কারখানাগুলিতে সুরক্ষা ব্যবস্থার গলদ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জেলাশাসকের নির্দেশে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তর বৈঠক করেছে। কারখানা পরিদর্শন করতে গিয়ে ধরা পড়েছে বড় বড় শিল্প সংস্থাতেই সেফটি অডিট রিপোর্ট নেই। কারখানাগুলিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত বিপর্যয় মোকাবিলা প্ল্যান এবং সেফটি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও বেশিরভাগ সংস্থা তা করেই উঠতে পারেনি। কারখানা পরিদর্শকের দপ্তর জানিয়েছে, ফায়ার সেফটির জন্য কারখানার ভিতরের সুরক্ষার পাশাপাশি বাইরের এলাকার মানুষেরও সতর্ক থাকা দরকার। একে বলা হয় অফ-সাইট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান। সেজন্য এবার বিশ্বকর্মা পুজোকে ফায়ার সেফটির সচেতনতার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হবে। কারখানাগুলি তাদের উৎপাদন ও পণ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফায়ার সেফটির বিষয়ে থিম তৈরি করে মানুষকে সতর্ক করতে পারে। এবিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুজো কমিটিকে ইতিমধ্যেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
No comments