Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

করোনা মহামারীর জেরে দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলের ১৭জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে

করোনা মহামারীর জেরে দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলের ১৭জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দশম ও একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তাদের বিয়ে হয়েছে। স্কুলে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার সময় ও কন্যাশ্রী প্রকল্পে কে-টু পুনর্…

 




করোনা মহামারীর জেরে দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলের ১৭জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দশম ও একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তাদের বিয়ে হয়েছে। স্কুলে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার সময় ও কন্যাশ্রী প্রকল্পে কে-টু পুনর্নর্বীকরণ করার সময় ছাত্রীদের গরহাজিরা স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তারপর খোঁজখবর করে প্রধান শিক্ষক বিপ্লনারায়ণ পণ্ডা জানতে পারেন, একজন-দু’জন নয়, দেড় বছরে ১৭জন নাবালিকা ছাত্রী বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রধান শিক্ষক কন্যাশ্রী সেলে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে নাবালিকা বিয়ে আটকানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি বুথে সচেতনতামূলক বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছেন। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাসের কাছে গিয়েও একই আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯৩৫। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর মার্চ মাস থেকেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী গত বছর অক্টোবর থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৮৪জন নাবালিকার বিয়ের খবর প্রশাসনের কাছে আসে। তারমধ্যে ৭৬জনের বিয়ে রুখে দেওয়া হয়েছে। তবে, প্রশাসনের কাছে খবর আসার আগে নাবালিকা ছাত্রীদের বিয়ে হওয়ার সংখ্যাটা অনেক। এরকম ঘটনায় গত ন’মাসে ১৬টি এফআইআর হয়েছে। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে নাবালিকাদের একটা অংশের মধ্যে পালিয়ে বিয়ে প্রবণতাও বেড়েছে। যেমন, নন্দকুমার থানার দক্ষিণ শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের ১৭বছরের এক মেধাবী ছাত্রী ৯আগস্ট গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার কথা বলে আর বাড়ি ফেরেনি। ওই ছাত্রীকে রামতারক এলাকার ১৬বছরের এক নাবালক ফুসলিয়ে বিয়ে করেছে বলে ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন। নন্দকুমার থানার ওসি বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দু’জনের আলাপ হয়েছিল।

দেড় বছরে কোভিড সঙ্কটে একটি স্কুলে ১৭জন নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের ঘটনা থেকে পরিষ্কার, এই সময়কালে প্রচুর ছাত্রী ১৮বছর পেরনোর আগেই ছাদনাতলায় যাচ্ছে। কখনও বাড়ির লোকজন কন্যাদায় থেকে মুক্তি পেতে ১৮বছরের আগেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে ছাত্রীদের মধ্যে পালিয়ে বিয়ের ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে ভিলেনের ভূমিকা নিচ্ছে মোবাইল ফোন। মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ছাত্রীর বয়স ১৭বছর ছ’মাস পূর্ণ হওয়ার পর কন্যাশ্রী প্রকল্পে তারা ‘কে-ওয়ান’ থেকে ‘কে-টু’র আওতায় চলে আসে। পঞ্চায়েত থেকে ছাত্রীর অবিবাহিত সংক্রান্ত সার্টিফিকেট স্কুলে জমা করতে হয়। বেশ কয়েকজন অভিভাবক এই সংক্রান্ত সার্টিফিকেট জমা না করায় নাটশাল স্কুল কর্তৃপক্ষ খবর নিয়ে জানতে পারে, তাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলিদেবী বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে অনেক অভিভাবক নাবালিকা ছাত্রীদের বিয়ে দিচ্ছেন। এই খবর পাওয়া মাত্র আমরা বেশ কিছু বিয়ে আটকেছি। তবুও কিছু জায়গায় এরকম ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। অনলাইনে পড়াশোনার জন্য এখন পড়ুয়াদের হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। মোবাইল হাতে পেয়ে কিছু ছাত্রছাত্রী তার অপব্যবহার করছে। নাবালিকা বিয়ে রুখে দেওয়ার জন্যই কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো স্কিম চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার দরকার।

No comments