Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বীরাঙ্গনা বলে উল্লেখ করায় -মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র

অসম কি মাতঙ্গিনী হাজরা’! স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বীরাঙ্গনা বলে উল্লেখ করায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত…

 





অসম কি মাতঙ্গিনী হাজরা’! স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের বীরাঙ্গনা বলে উল্লেখ করায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বও। সোমবার ‘খেলা হবে’ দিবস পালন উপলক্ষে জেলাজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানের সময় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এর প্রতিবাদ করেন। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে রামচন্দ্রপুর হাইস্কুলে খেলা হবে দিবস উদযাপনের সময় মাতঙ্গিনী হাজরার ছবি সহ প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদে শামিল হন রাজ্যের সেচ ও জলপথ দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাতে যোগ দেন মাতঙ্গিনী হাজরা পরিবারের সদস্য তথা শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ হাজরা।

সৌমেনবাবু বলেন, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের হোগলা এবং আলিনান দু’টি গ্রামে মাতঙ্গিনী হাজরার বাল্যকাল থেকে সাংসারিক জীবন সবটাই কেটেছে। তমলুকে বানপুকুরের পাড়ে তিনি ইংরেজ পুলিসের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন। অথচ ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মাতঙ্গিনী হাজরা অসমের! একথা শুনে বড় কষ্ট হয়। মেদিনীপুরবাসী এবং এই এলাকার বিধায়ক হিসেবে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। এত বড় স্বাধীনতা সংগ্রামীর ইতিহাসকে বিকৃত করার ঘটনা রাজ্যের মানুষ কিছুতেই সহ্য করবেন না। মানুষ এর প্রতিবাদ করবেনই। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের স্পর্শ বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছেছে। কিন্তু, দেশ আজকে পিছিয়ে পড়েছে। আগামী ২০২৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরেই আবর্তিত হবে দেশের রাজনীতি। আলিনান গ্রামের হাজরা পরিবারের বর্তমান সদস্য রাজেশ হাজরা বলেন, প্রধামন্ত্রী যেভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন, তারজন্য দেশবাসীর কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমরা এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি। হোগলা গ্রামে মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম। বাবা ঠাকুরদাস মাইতি ও মা ভগবতীদেবী। ১২বছর বয়সে আলিনান গ্রামে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁর স্বামীর নাম ত্রিলোচন হাজরা। বিয়ের পর আলিনান গ্রাম থেকেই তাঁর যাবতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মকাণ্ড শুরু। অথচ মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসম রাজ্যের বলে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। এই বিকৃত তথ্যের জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

এব্যাপারে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক ব্রহ্মময় নন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা আগে থেকেই লিখে দেওয়া হয়। এধরনের বক্তব্য লেখার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। স্বাধীনতা দিবসের দিনে লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভুলভ্রান্তি হতে পারে কিংবা বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে, এমন কোনও বিষয় থাকা উচিত নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের বাংলার ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তারমধ্যে অবিভক্ত মেদিনীপুরের সংগ্রামের ইতিহাস ছিল বিশেষভাবে স্মরণীয়। সেই অবিভক্ত মেদিনীপুরে জন্মেছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। এখন সেই জায়গাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে পড়ে। সুতরাং তিনি অসমের হলেন কী করে? এই ভুলটা সংশোধন করে নিলে ভালো হয়। উল্লেখ্য, ১৯৪২সালে ২৯সেপ্টেম্বর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে ব্রিটিশের গুলিতে শহিদ হন মাতঙ্গিনী হাজরা। তমলুক কোর্টে তেরঙ্গা পতাকা তোলার শপথ নিয়ে স্বদেশিদের একটি মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। পুলিসের নিষেধাজ্ঞাকে হেলায় উড়িয়ে একহাতে তেরঙ্গা পতাকা ও অন্যহাতে শঙ্খ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ‘গান্ধীবুড়ি’। ব্রিটিশের গুলি খেয়েও লুটিয়ে পড়ার মুহূর্তে বন্দেমাতরম ধ্বনি তুলে বুকের উপর পতাকা রেখেছিলেন। সেটি ভূলুণ্ঠিত হতে দেননি। শহিদের মৃত্যু বরণ করেছিলেন।

No comments