Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পূর্ণতীর্থ আঁটপুর

আঁটপুর, হুগলি জেলার একটি গ্রাম। এটি তারকেশ্বর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আঁটপুরের সবথেকে বিখ্যাত মন্দির হল রাধাগোবিন্দজিউ মন্দির। এটি প্রায় ১০০ ফুট উঁচু । বর্ধমান রাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র এই মন্দিরটি গঠন করান। মন…

 






 

আঁটপুর, হুগলি জেলার একটি গ্রাম। এটি তারকেশ্বর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। 

আঁটপুরের সবথেকে বিখ্যাত মন্দির হল রাধাগোবিন্দজিউ মন্দির। এটি প্রায় ১০০ ফুট উঁচু । বর্ধমান রাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র এই মন্দিরটি গঠন করান। মন্দিরটি নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৭০৮ শকাব্দে)। মন্দিরটির গায়ে অসাধারণ টেরাকোটা বা পোড়ামাটির কারুকার্য আছে। মন্দিরের ভিতের ইঁটগুলি গঙ্গামাটি ও গঙ্গাজলে তৈরি। মন্দিরটির গায়ের টেরাকোটাগুলিতে ভারতের ইতিহাস পুরান এবং সর্বধর্ম সমন্বয়কে সার্থকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে রাধাকৃষ্ণ, দুর্গা ও চণ্ডী, বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া যুদ্ধের বিভিন্ন দৃশ্যও স্থান পেয়েছে। যুদ্ধের টেরাকোটা ভাস্কর্যগুলিতে অশ্বারোহী, গজারোহী এবং উটারোহী সৈন্যদের দেখা যায়। এছাড়া কামান এবং বন্দুক নিয়ে সৈন্যদের টেরাকোটাও দেখা যায়। হিন্দু পুরান ও ঐতিহাসিক চরিত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন মুসলমান বাদশা, এবং ইউরোপিয়ানদেরও তুলে ধরা হয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে। 

 রাধাগোবিন্দজিউয়ের মন্দিরটি কালের প্রভাবে বর্তমানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ। তবুও বেশিরভাগ টেরাকোটাই এখনো ভাল অবস্থায় আছে। নিরাপত্তার কারণে বর্তমানে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।

রাধাগোবিন্দজিউয়ের মূল মন্দিরটি ছাড়াও এখানে রয়েছে আরো পাঁচটি শিবমন্দির। এগুলির নাম হল যথাক্রমে গঙ্গাধর, রামেশ্বর (বড়শিব), বাণেশ্বর, জলেশ্বর, ফুলেশ্বর, এছাড়া রয়েছে দোলমঞ্চ। প্রত্যেকটি শিবমন্দিরের গায়েই টেরাকোটার কারুকার্য রয়েছে।

রাধাগোবিন্দজিউয়ের মূল মন্দিরের উত্তরদিকে রয়েছে খড়ের ছাউনির চণ্ডীমণ্ডপ। এটি অসাধারণ কাঠের কাজের অন্যতম নিদর্শন। এটি প্রায় তিনশো বছরের পুরোনো এবং এর গায়ে কাঁঠাল কাঠের অসাধারণ কারুকার্য আছে। কৃষ্ণরাম মিত্রের পিতামহ কন্দর্প মিত্র এই চণ্ডীমণ্ডপে তার গুরুদেবের সাথে মহামায়ার পূজা করেছিলেন।

আঁটপুরের আর এক দর্শনীয় স্থান ঘোষের (যিনি পরবর্তীকালে স্বামী প্রেমানন্দ বলে পরিচিত হন) গ্রামের বাড়ি। আঁটপুরেই স্বামী বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের আরো আটজন শিষ্য ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর তারিখে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন।

আঁটপুরে স্বামী প্রেমানন্দের জন্মস্থানের উপর রামকৃষ্ণ-প্রেমানন্দ আশ্রম গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এই স্থানটি রামকৃষ্ণ মিশন দ্বারা সংরক্ষিত।


No comments