মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো এবং তাঁর অনুপ্রেরণায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বনদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে জেলাজুড়ে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপণের সূচনা হল। সোমবার বিশ্ব ম্যানগ্রোভ দিবসকে সামনে রেখে দী…
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো এবং তাঁর অনুপ্রেরণায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বনদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে জেলাজুড়ে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপণের সূচনা হল। সোমবার বিশ্ব ম্যানগ্রোভ দিবসকে সামনে রেখে দীঘার ন্যায়কালীমন্দির সংলগ্ন ঝাউগেড়িয়া গ্রামে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হল। উদ্বোধন করেন এলাকার বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। এদিন এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস, পশ্চিমাঞ্চল বিভাগের মুখ্য বনপাল এ পি সিং, জেলা বন আধিকারিক অনুপম খান সহ অন্যান্য আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকরা বৃক্ষরোপণ করে বনমহোৎসব কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মাসদুয়েক আগে সাইক্লোন যশের জেরে জেলার উপকূল এলাকায় ম্যানগ্রোভ সহ অন্যান্য গাছ যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে সমস্ত এলাকায় ম্যানগ্রোভ অরণ্য রয়েছে, সেখানে ক্ষতির অভিঘাত কম হয়েছে। ম্যানগ্রোভ উপকূলের রক্ষাকবচ বলেই প্রমাণিত হয়েছে। তাই ম্যানগ্রোভ অরণ্য সৃষ্টির উপর সর্বাধিক জোর দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেলার উপকূলে ৫০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে ম্যানগ্রোভ গাছ রোপণ করা হবে। এছাড়া ২০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে হাওয়ারোধক ঝাউ সহ অন্যান্য গাছ রোপণ করা হবে। এদিন দীঘায় তারই সূচনা হল। এমজিএনআরইজিএস প্রকল্প সহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণের কাজ হবে। মন্ত্রী অখিলবাবু বলেন, বৃক্ষরোপণের উপকারিতা ও উপযোগিতা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। আমাদের শুধু গাছ লাগালে হবে না। তার সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। ঢাকঢোল পিটিয়ে গাছ লাগানোর সূচনা করলাম, রক্ষণাবেক্ষণ হল না, সবকিছু নষ্ট হয়ে গেল, সেটা যেন না হয়। পঞ্চায়েত ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের এই কাজে বেশি করে নিয়োজিত করতে হবে, যাতে পরিচর্যা ও দেখভাল ঠিকমতো হয়।
জেলাশাসক বলেন, প্রকৃতির উপর অত্যাচার করলে প্রকৃতি তার প্রত্যাঘাত করবেই। যশ সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। তাই আমাদের প্রকৃতি রক্ষায় সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, প্রকৃতিকে দিয়ে প্রকৃতির তাণ্ডব আটকাতে হবে। এই ম্যানগ্রোভ রোপণ মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে দীঘা থেকে শুরু হল এই কাজ। নিজের সন্তানদের যেমন যত্ন করেন, গাছেদের তেমনভাবে নজর দিলে আমরা সকলেই বাঁচব। জেলা বন আধিকারিক বলেন, এত বিপুল পরিমাণে ম্যানগ্রোভ রোপণ এই জেলায় এই প্রথম। জেলার উপকূলে ৬৫ কিলোমিটার অর্থাৎ ওড়িশা সীমান্ত থেকে হলদিয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ হেক্টর জায়গায় কাজ শুরু হল। জেলা প্রশাসন জমি দিলে আমরা আগামীদিনে আরও ম্যানগ্রোভ অরণ্য সৃষ্টি করব। দীঘা থেকে শুরু হয়ে শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণি, কাঁথি, খেজুরি, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজ হবে।
No comments