Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

নোনা জলের ছোবল, যশের গ্রাসে উপকূলবর্তী এলাকায় পানীয় জল সংকটের আশংকার বার্তা বিজ্ঞানীদের.....

০৬ জুন, পূর্ব মেদিনীপুর-গত ২৬ মে প্রকৃতির তিথি অনুসারে ভরা কোটালের দিনেই হানা দিয়েছিল আমপান পরবর্তী সুপার সাইক্লোন যশ।তার আঘাতের তীব্রতা এতটাই প্রকোপ ছিল যে,বাংলা-উড়িষ্যা দুই রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা গুলি কঙ্কালের চেহারা ন…

 





০৬ জুন, পূর্ব মেদিনীপুর-গত ২৬ মে প্রকৃতির তিথি অনুসারে ভরা কোটালের দিনেই হানা দিয়েছিল আমপান পরবর্তী সুপার সাইক্লোন যশ।তার আঘাতের তীব্রতা এতটাই প্রকোপ ছিল যে,বাংলা-উড়িষ্যা দুই রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা গুলি কঙ্কালের চেহারা নিয়েছে ।যার চিত্র ফুটে উঠবে উপকূল এলাকা গুলি ঘুরে দেখলে। উপকূল জুড়ে শুধু জল আর জল,সঙ্গে ভগ্ন পাকা-কাঁচা মাটির বাড়ী ও সারি সারি গাছের লাশ পড়ে আছে ।এধরণের চিত্র গুলি অনেক সিনেমায় দেখানো হতো দর্শকের মন কাড়বার জন্য।কিন্তু,বাস্তব চিত্র যে কতখানি ভয়ঙ্কর হতে পারে। তার সাক্ষ্মী থাকলো নিজেদের চোখে দেখা উপকূল এলাকার সব হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন।এই ধ্বংসের কারণে আজও অনেক মানুষ দুবেলা আহার টুকু পেট পুরে খেতে পায় না পরিবারের সাথে।শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য কোনোরকমে চেয়েচিন্তে ও সাহায্য সহানুভূতিতে পরিবারের সাথে দিন গুজরানে ব্যস্ত দুর্গত এই মানুষগুলি।কবে ফিরবে সেই আগের দিন গুলি। না আদৌ ফিরবে না।সেই শোকের মাঝেই আগামীদিনে নাকি ধেয়ে আসছে জীবন সংগ্রামের কঠিন পরিস্তিতি।দরুন হতে পারে পানীয় জলের সংকট ,আশঙ্কা বিজ্ঞানিদের।সমুদ্রের নোনা জলের ছোবলেই নাকি উপকূল জুড়ে তীব্র পানীয় জলের সংকট দেখা দিতে পারে।ধারণা বিজ্ঞানি ও বিশেষজ্ঞ দলের।কারণ বলছে,স্থলভাগের উপর জমা সমুদ্রের নোনা জল দীর্ঘদিন থাকায় সেই জল ধীরে ধীরে ভূ-গর্ভস্ত মিষ্টি জলের সাথে ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে।যারফলে মিষ্টি জল,নোনা জলের সংস্পর্শে নোনা জলে পরিণত হবে। সেই জল আবার গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে বের হবে। সেটি পানীয় জলের অযোগ্য।উল্লেখ্য,সম্প্রতি এই যশ নামক শক্তিশালী সাইক্লোন বা দ্বৈত্যের দাপটে বাংলা-উড়িষ্যা উভয় রাজ্যের উপকূল বরাবর সমুদ্রের জল ঢুকে প্লাবিত হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দীঘা,তাজপুর,উদয়পুর,শঙ্করপুর, মান্দারমণি,শৌলা, জুনপুট,বাঁকিপুট,রসুলপুর,পেটুয়া বন্দর,সুন্দরবন,বকখালি,হলদিয়া, খেজুরী, বসিরহাট,পাথর প্রতিমা সহ আরও একাধিক জায়গাতেই সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়ে।সেই জল এখনও অবধি কিছু কিছু জায়গায় বেশ কয়েকদিন জমে ছিল। কোথাও কোথাও এখনও জল জমে আছে।কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড রিসার্চ সেন্টারের জীব বিজ্ঞানী অধ্যাপক পুন্যশ্লোক ভাদুড়ীর নেতৃত্বে গত কয়েকদিন ধরে একটি বিশেষজ্ঞ দল দূর্গত উপকূলবর্তী এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখছেন।শুক্রবার তাঁরাই এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির শৌলা ও রসুলপুর এলাকায়।দুর্যোগের ফলে উপকূল এলাকার প্রাকৃতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতির উপর তাঁরা রিপোর্ট করেছেন।যার তথ্য জমা দেবে রাজ্য প্রশাসনের কাছে।বিশেষজ্ঞ দলের কথায়,উপকূল এলাকার ভূ-স্তর নবগঠিত।অনেকটা ব-দ্বীপের মাটির মতো। মাটির নিচে মিষ্টি জলের সঞ্চয়ও খুব কম।ফলে সেই সঞ্চিত মিষ্টি জলস্তর নোনা জলের সংস্পর্শে নস্ট হয়ে গেলে।মিষ্টি জলের আকাল দেখা দেবে।রাজ্যে এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঠেকাতে উপকূল জুড়ে এলাকা গুলির অপরিকল্পিত উন্নয়নকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা।তাঁদের কথায়,সমুদ্র উপকূল বরাবর মাছের ভেড়ি,সি আর জেড এলাকার মধ্যে একাধিক হোটেল নির্মাণের ফলে সমুদ্রের জোয়ার ভাটা খেলার জায়গা অনেকটাই কমেছে।এছাড়াও, উপকূল এলাকায় বালিয়াড়ি,কেয়া জঙ্গল কেটে ফেলায় স্বাভাবিকভাবে উদ্ভিজ চরিত্র নস্ট হয়েছে।তাঁরা আরও বলেন, এই বিপর্যয়ের সময় বালিয়াড়ির উপর জন্মানো সাগর কলমি ও কেয়ার ঝোপ প্রাকৃতিক জলোচ্ছাস আটকাতে পারতো।তাঁদের দাবি, স্বাভাবিক বাঁধ ও উদ্ভিদ ছাড়া কংকৃট বাঁধ দিয়ে উপকূল বাঁচানো সম্ভব নয়।তাহলে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ দলের আশঙ্কা যদি সত্যি হয়!আগামীদিনে পানীয় জলের সংকট হলে এর দায় কার? আগামী প্রজন্মের জন্য পানীয় জলের সমস্যা কি আমরা এখন থেকে তৈরী করে দিয়ে যাচ্ছি? এসবের প্রশ্ন কি শুধুই থেকে যাবে।সচেতনই পারে এই সমস্যা সমাধান করে আগামীদিন গুলিকে রক্ষা করতে।

No comments