কোভিড১৯ আক্রান্তের দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মৃত্যুর মিছিল চলছে। আক্রান্ত শুনলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, সামাজিক বয়কোট করছে। এই সময় ব্লাড ব্যাংকে রক্তের চাহিদা মেটাতে একযোগে স্বেচ্ছাসেবী সং…
কোভিড১৯ আক্রান্তের দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মৃত্যুর মিছিল চলছে। আক্রান্ত শুনলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, সামাজিক বয়কোট করছে। এই সময় ব্লাড ব্যাংকে রক্তের চাহিদা মেটাতে একযোগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সহকারী পুলিশ আধিকারিক সকলেই রক্তের সন্ধানে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছেন ।আজ হলদিয়া নাটকের দল তারা রক্তদান শিবির আয়োজন করলেন। দলের কর্ণধর কুনাল নন্দ বললেন।এক বিপন্ন দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে আমরা সবাই যাচ্ছি,যখন করোনা ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস যৌথ ভাবে বঙ্গ বাসী ও ভারতবাসী কে মৃত্যুভয়ে আতঙ্কিত ও আশঙ্কিত করে রেখেছে।প্রিয়জন হারানোর বেদনায় আমরা সবাই অসহায় আর অস্থির বোধ করছি,এইরকম একটি সময়ে দাঁড়িয়ে হলদিয়া শিল্প নগরীর নাট্য দল সংশপ্তক নাটকের মঞ্চ থেকে একেবারে মাঠে নেমেছেন বিপন্ন ,অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে রক্তদানের মাধ্যমে।করোনার জন্য গত একবছর ধরে ব্লাড ব্যংকগুলি রক্তের অপ্রতুলতায় ভুগছে,বহু মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেননা,এক দুর্বিসহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে সবাই হাঁটছি শুধু আলোর খোঁজে।তাই মুমূর্ষু মানুষের শরীরে রক্তের প্রয়োজন পূরণের জন্যই আজ ৩রা জুন হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারের আই,ও,সি, সমবায় ভবনে এক স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে -সম্পুর্ন ভাবে কোভিড বিধিকে চূড়ান্ত মান্যতা দিয়েই।রক্তের এভাবে অনেক দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা বন্ধ আছে,এই খবরই সংশপ্তক কে এই কঠিন সময়ে এই ধরনের ধরনের শিবিরের আয়োজন করতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় রক্তের যোগান খুব অল্প,তাই মানুষের জন্য আর মানুষের পাশে থাকতে এই উদ্যোগ সংশপ্তক নিয়েছে।সংশপ্তক এর সবাই মনে করেছেন যে, মুমূর্ষুকে রক্তদান -এর চাইতে বড় ধর্ম এবং কর্ম আর কিছুই নেই।করোনার মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে যখন ডাক্তার,নার্স,স্বাস্থ্যকর্মীরা, ও সর্বোপরি রেড-ভলান্টিয়ার গ্রূপ যে ভাবে কাজ করে চলেছেন শুধু মানুষের জন্যই ,সেক্ষেত্রে যারা নাটকের সংলাপ দিয়ে মানুষের মনে অভিব্যক্তির অনুরণন তোলেন তারা তো মানুষের জীবন রক্ষার জন্য মাঠে-পথে নেমেছেন আগেও ,এবারেও নেমেছেন রক্ত জোগাতে মানুষকেই,কারন তারা বিশ্বাস করে 'দেহের একটু রক্ত দিলে যদি বাঁচে একটি প্রাণ ।ধন্য হবে জনম তোমার ,মহৎ তোমার দান' - এই নীতিতে।আজকের এই রক্তদান শিবিরের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন হলদিয়া সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক এবং সেখানকার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা,সেই সঙ্গে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালের সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্প বিভাগ ও হলদিয়া আই,ও,সি,রিফাইনারির সমবায় ব্যাংক তাদের অডিটোরিয়াম ও কয়েকটি কক্ষের ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে।সংশপ্তক হলদিয়া এর মুখ্য উদ্যোক্তা কুনাল নন্দ জানালেন যে ,'খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই শিবিরের আয়োজন সম্ভব হয়েছে সবার ঐকান্তিক সহযোগিতার জন্যই'।উপস্থিত ব্লাড ব্যাঙ্কের ডাক্তারবাবু উদয় সরকার জানালেন যে, 'রক্ত মানব দেহের একটি প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য উপাদান।রক্ত মানবদেহে সঞ্জীবনীশক্তি দান করে এবং জীবনধারাকে অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে।কোনো রোগভোগের কারনে বা দুর্ঘটনা ঘটলে দেহ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে শরীরে রক্তের ঘাটতি পড়ে।সেই ঘাটতি পূরণের জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়।মানুষের দেহে অন্যকোন প্রাণীর রক্ত দেওয়া যায় না।মানুষের রক্তই মানবদেহে সঞ্চারিত করতে হয়।তাই রক্তের প্রয়োজনে মানুষ মানুষের কাছেই ছুটে আসে।সতেজ ও বিশুদ্ধ রক্তের ছোঁয়ায় মুমূর্ষু মানুষ প্রাণ ফিরে,আর এখানেই রক্তদানের স্বার্থকতা।' বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ শৌভিক মুখার্জী ,তিনি বললেন যে,'এই ধরনের উদ্যোগ কে কুর্নিশ জানাই,এখানে উপস্থিত হতে পেরে সত্যি ভীষন ভালো লাগছে,উদ্যোক্তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই'। ৪০ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন,প্রত্যেকেই সংস্থার পক্ষ থেকে একটি করে গাছ ও স্যানিটাইজার কিট দেওয়া হল সময়ের দাবি মেনেই।রক্তদান তো এক মহৎ কর্ম কারন একটু রক্তদান মানেই একটি জীবন দান।
No comments