বাবা'র বয়স হয়েছে তাই আগের মতো আর অটো নিয়ে রোজ বেরোতে পারেন না। মা ঘরের কাজকর্ম দেখেছেন। তাই গ্র্যাজুয়েট টগরী নিজেই হাতে তুলে নিয়েছেন স্টিয়ারিং। সিটু অনুমোদিত অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের সদস্য টগরী। শহরে অ্যাম্বুলেন্সের অভাব মেটাতে সি…
বাবা'র বয়স হয়েছে তাই আগের মতো আর অটো নিয়ে রোজ বেরোতে পারেন না। মা ঘরের কাজকর্ম দেখেছেন। তাই গ্র্যাজুয়েট টগরী নিজেই হাতে তুলে নিয়েছেন স্টিয়ারিং।
সিটু অনুমোদিত অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের সদস্য টগরী। শহরে অ্যাম্বুলেন্সের অভাব মেটাতে সিটু চালু করেছে এই পরিষেবা। সিটুর ডাকে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন টগরী শীল। মানবিকতার সাথে পরিষেবা দিচ্ছেন টগরী।
কদিন আগে হেল্পলাইন নম্বর থেকে জানতে পারেন, ঢাকুরিয়ার কাছে এক বৃদ্ধ অসুস্থ। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। খবর পেয়েই ‘পিপিই কিট’ পরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে টগরী জানতে পারেন, তাঁর বাড়ির
লোকজন তখনও হাসপাতালের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেননি। এ দিকে রিপোর্ট পজ়িটিভ। বৃদ্ধকে গাড়িতে তুলে প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল এম আর বাঙুর হাসপাতালে। সেখানে ব্যবস্থা না হওয়ায় পরের গন্তব্য শরৎ বসু রোডের এক নার্সিংহোম। কিন্তু সেখানেও শয্যা না মেলায় গাড়ি এ বার ছুটল বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরের এক নার্সিংহোমে। সেখানেও সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে যেতে হল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ক্যাবের মধ্যেই ওই বৃদ্ধকে এসে পরীক্ষা করেন কর্তব্যরত এক চিকিৎসক। ঘণ্টাখানেক ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তাঁকে স্টেরয়েড পাফ দিয়ে সুস্থ করে তোলেন ওই চিকিৎসক। তার পরে ওই বৃদ্ধকে বাড়িতে রেখেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরামর্শ দেন তিনি। সকাল ১০টায় বেরিয়ে বিকেলে যখন ওই বৃদ্ধকে ঢাকুরিয়ার বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন টগরী, তত ক্ষণে ঘড়ির কাঁটা প্রায় সাড়ে পাঁচটা ছুঁয়েছে।
দিন কয়েক আগে এক বিকেলে কুঁদঘাটের বাসিন্দা, পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলা বাইপাসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বামীকে দেখতে যাওয়ার জন্য টগরীর গাড়িতে ওঠেন। হাসপাতালের কাজ মিটিয়ে বেরোতে তাঁর প্রায় ১১টা বেজে যায়। তাঁকেও নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছে দেন টগরী। একই ভাবে যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও এক রোগিণীকে উত্তর কলকাতার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। নিজের স্কুল ‘সনৎ রায়চৌধুরী ইনস্টিটিউশন ফর গার্লস’-এর প্রধান শিক্ষিকার অনুরোধে সকালের দিকে ছাত্রীদের পড়িয়েছেন লকডাউনের আগে। পরিস্থিতি আগের মতো হলে সেই কাজও চালিয়ে যেতে চান টগরী।
No comments