Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

দীর্ঘ ২৭ বছর জেল খাটার সময় , নেলসন ম্যান্ডেলা

দীর্ঘ ২৭ বছর জেল খাটার সময় , নেলসন ম্যান্ডেলা সূর্য কি জিনিস চোখে দেখেননি । তারপর তিনি  দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর একদিন তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে বললেন : -চলো আজ শহর দেখি । চার দেয়ালের ভিতর বন্দি থেকে , জীবনের দীর্ঘ সময় কেটে গেলো…

 




দীর্ঘ ২৭ বছর জেল খাটার সময় , নেলসন ম্যান্ডেলা সূর্য কি জিনিস চোখে দেখেননি । তারপর তিনি  দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর একদিন তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে বললেন : -

চলো আজ শহর দেখি । চার দেয়ালের ভিতর বন্দি থেকে , জীবনের দীর্ঘ সময় কেটে গেলো । এখন  নিজের শহরটি কেমন হয়েছে , নিজের চোখে না দেখলেই নয় ।

সহকর্মীদের সাথে নিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা শহরের অলিতে গলিতে  হাঁটলেন । তাঁর খুব ক্ষিদে পেলো । ক্ষিদে লাগার পর ম্যান্ডেলা বললেন : -

চলো , সামনের মোড়ে যদি কোনো রেস্তোরাঁ পাই  ,

সেখানেই কিছু খেয়ে নিতে চাই । সহকর্মীরা তো অবাক !  বুঝতে পেরে ম্যান্ডেলা বললেন , অবাক হওয়ার কিছুই নেই ,  ক্ষিদে পেয়েছে , খাবো । জেলখানার ওই বিভৎস খাবার খেয়েও যেহেতু মরিনি , তাই এতো সহজে মরবো না ।

সবাই মিলে টেবিলে খেতে বসেছেন ।

অল্পদূরে আরেকজন ভদ্রলোক বসে আছেন , বেশ বয়ষ্ক । হোটেলের ওয়েটারকে ডেকে ম্যান্ডেলা বললেন , একটা চেয়ার এনে আমার পাশে রাখো এবং ওনাকে বলো ,  আমার টেবিলে বসে খেতে ।

ভদ্রলোক আসলেন । এসে তাঁর পাশের চেয়ারটায় বসলেন । খেতে খেতে সবাই গল্প করছেন । কিন্তু পাশে বসা ভদ্রলোকটি কিছুই খেতে পারছেন না । ওনার হাত কাঁপছে । চামচ থেকে খাবার প্লেটে পড়ে যাচ্ছে । ম্যান্ডেলার সহকর্মীদের একজন বললেন , 

আপনি মনে হয় অসুস্থ । ভদ্রলোক চুপচাপ রইলেন । কিছুই বললেন  না ।

ম্যান্ডেলা নিজ হাতে ওনাকে খাবার খাইয়ে দিলেন এবং ওয়েটারকে ডেকে বললেন , ওনার খাবার বিলটা আমরা পরিশোধ করবো ।

খাবার শেষে সেই বয়স্ক ভদ্রলোক বিদায় নেয়ার জন্য প্রস্তুত হলেন । কিন্তু সবাই অবাক চোখে দেখলো , লোকটি ভালো করে দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারছেন না । শরীরের কাঁপুনি ক্রমবর্ধমান । 

ম্যান্ডেলা নিজ হাতে ওনাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন এবং সহকর্মীদের একজনকে বললেন , ওনাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসতে ।

সহকর্মীদের মধ্যে আরেকজন বললেন , এতো অসুস্থ শরীর নিয়ে উনি বাড়ী পৌঁছাতে পারবেন তো ! এই সময় ম্যান্ডেলা বলতে শুরু করলেন , 

আসলে উনি অসুস্থ না । আমি জেলের যে সেলে বন্দি ছিলাম উনি ছিলেন সেই সেলের গার্ড । প্রচন্ড মার খেয়ে আমার খুব তৃষ্ণা পেতো । পিপাসায় কাতর আমি যতবার জল জল বলে আর্তনাদ করতাম , ততবার উনি আমার সমস্ত শরীরে প্রসাব করে দিতেন । আজ আমি দেশের প্রেসিডেন্ট ।

দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মানুষ হওয়ার পর ,  আমি ওনাকে আমার টেবিলে একসাথে খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেছি ! তাই সেই সব দিনগুলোর কথা মনে করে উনি খুব ভয় পেয়েছেন ।

কিন্তু ক্ষমতাবান হয়েই ক্ষমতাহীন মানুষকে শাস্তি দেয়া তো আমার আদর্শের পরিপন্থী । এটা আমার জীবনের এথিকসের অংশ নয় । তাই শাস্তি পাওয়ার পরিবর্তে উনি ভালোবাসা পেয়েছেন । আমার মুখে আর শরীরে উনি প্রসাব করেছেন । কিন্ত ওনার মুখে আমি খাবার তুলে দিয়েছি । আমি আপনাদের যেমন প্রেসিডেন্ট , তেমনি ওনারও প্রেসিডেন্ট ।

প্রতিটি নাগরিককে সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব । শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়ার মানসিকতা'ই একটি তৈরী রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিতে পারে ।

আর সহনশীলতার মানসিকতা একটি ধ্বংস হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রকে তৈরী করতে পারে ।

No comments