চিরাচরিতভাবে প্রতিটি মানুষের ঘরে লক্ষ্মীর আরাধনা মেতে ওঠে আবালবৃদ্ধবনিতা ।দূর্গা উৎসব শেষ হয়েছে বিজয় দশমী কাটতে না কাটতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভবানীপুর থানার অন্তর্গত লক্ষ্মী গ্রামে চাউলখোলা ও কিসমত শিব রামনগর গ্রামে লক্ষ্মী প…
চিরাচরিতভাবে প্রতিটি মানুষের ঘরে লক্ষ্মীর আরাধনা মেতে ওঠে আবালবৃদ্ধবনিতা ।দূর্গা উৎসব শেষ হয়েছে বিজয় দশমী কাটতে না কাটতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভবানীপুর থানার অন্তর্গত লক্ষ্মী গ্রামে চাউলখোলা ও কিসমত শিব রামনগর গ্রামে লক্ষ্মী পুজো কে নিয়ে এলাকার মানুষজন মেতে ওঠেন। এই গ্রামকে লক্ষী গ্রাম নামে চিহ্নিত। হলদিয়া মহাকুমার এলাকা থেকে ঐ গ্রামে প্রতিমা দর্শনের জন্য মানুষ ভিড় জমান।
আদালতের নির্দেশ মেনে যেমন দুর্গোৎসবে মানুষ প্রদর্শন করেছেন যদিও এখনও লক্ষ্মীপুজো নিয়ে কোনো নির্দেশ আসেনি তা সত্ত্বেও পুজো কর্মকর্তারা জানান করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন দূর থেকে যাতে ভক্তরা প্রতিমা দর্শন করতে পারেন তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিটি বাঙালির ঘরে ঘরে গৃহলক্ষী আরাধনায় মেতে উঠবেন কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে যে মূল্যবৃদ্ধি এমনটাই সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে। কিন্তু পুজো করতে হবে একজন ব্রজলাল চকের ফল ব্যবসায়ী বললেন আমরা বিভিন্ন রকমের ফলের পসরা নিয়ে বসে থাকি! দুর্গাপূজা থেকে লক্ষ্মীপুজো হয়ে কালী পূজা পর্যন্ত আমরা মনে করি সারা বছর যাবত ফল বিক্রি হয় তার থেকে এই লক্ষ্মীপুজোর সময় বেশি ফলের চাহিদা থাকে। সব রকম ফল নিয়ে আমরা বসে রয়েছি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এমনটাই দাঁড়িয়েছে তাই ফল কেনার ইচ্ছা থাকলেও সাধ্যের মধ্যে নেই। তাই যতটা বিক্রি হওয়া দরকার ছিল আশা করেছিলাম অতটা হয়নি। যদিও কাল থেকে শুরু হবে একদম শনিবার পর্যন্ত মা লক্ষ্মীর আরাধনা এলাকার মানুষ মেতে উঠবেন। হয়তো পরবর্তীকালে ফলের চাহিদা আসবে। শসা থেকে আপেল খেজুর থেকে কলা সবটাই যেন আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। তা সত্ত্বেও মায়ের আরাধনার জন্য ফল বাজারে আসছেন ফল কিনছেন।
ফলের দাম বৃদ্ধি হলেও মাকে নিবেদন করতে হবে।আত্মীয়স্বজনতো কেউ আসবে না। তাই যত কিঞ্চিৎ হলেও মাকে ফল কিনে নিবেদন করব। চেষ্টা করোনাভাইরাস থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ির মধ্যেই আনন্দের কাটাবো। ফল কিনতে এসে বললেন চন্দ্রানী মিদ্যা।শিক্ষিকা সুপ্রিয়া দাস বলেন প্রতিবছর মাকে ঘটা করে বাড়িতে পুজো করি। আমরা কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা সারারাত ধরে আনন্দ করি। কিন্তু এবারে করোণা প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে আত্মীয়-স্বজন আসবে না ঠিকই কিন্তু মায়ের আরাধনা আমরা যত কিঞ্চিৎ হলেও করব। সব রকমের সামাজিক দূরত্ব মেনে সাথী চক্রবর্তী বলেন প্রত্যেক বৎসর লক্ষ্মী পুজো মানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর খাওয়া-দাওয়ার হিড়িক সারা রাত্রি ব্যাপি আমরা কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো তে সারারাত আনন্দ করতাম। কিন্তু এবারে করোনাভাইরাস এর জন্য আনন্দটাই মাটি হয়েছে ।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো নয় পূজা-অর্চনা করতে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে না ডেকে ঘরে নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি।কবিতা চক্রবর্তী বলেন লক্ষ্মী পুজো মানেই আমরা সকলেই হৈ-হুল্লোড় আনন্দ ফুর্তি করতাম ।সারা রাত্রি জাগরন এর মধ্য দিয়ে কিন্তু এবারে করোনা জন্য রাত জাগা তো যাবেই না। সার্বজনীন পাড়ায় পাড়ায় পুজো হতো সেখানে আমরা ঠাকুর দেখার জন্য সন্ধ্যা থেকে বেরিয়ে পড়তাম। কিন্তু এবছর নিজের বাড়িতে পুজো করবো কোথাও যাবো না। পুরোহিত শংকর অধিকারী বলেন লকডাউন এর জেরে আমাদের সমস্ত পুজো অনুষ্ঠান প্রায় বন্ধের পথে ।গত মার্চ মাস থেকে লকডাউন তার ফলে সমস্ত পূজা পদ্ধতি এবং বিশেষ করে চৈত্র মাস মানেই বিভিন্ন গ্রামের বাৎসরিক শোয়াল এবং তারপরে অন্নপ্রাশন থেকে শুরু করে লক্ষ্মী পূজা নারায়ণপুর এগুলো হতোই কিন্তু লকডাউন এর জেরে মানুষের হাতে পয়সা নেই আর কারোনা প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে মানুষ ভয়ে অনুষ্ঠান থেকে বিরত হয়েছেন তার ফলে সমস্ত ব্রাহ্মণরা যেমন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন ঠিক তেমনি ভাবে অন্যান্য শ্রেণীর যারা পূজারী প্যেন্ডেলওয়ালা তারাও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।
দুর্গাচক এর মিষ্টি ব্যবসায়ী শ্রীকৃষ্ণ সুইট বললেন আমরা পুজোর সময় ভিন্ন স্বাদের যেমন মিষ্টি করি এবং লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজো ভাইফোঁটা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আমরা মিষ্টির উপহার দিয়ে থাকি দূর্গা উৎসব আমরা দেখেছি কমবেশি মানুষ বেরিয়েছিলেন অল্পসংখ্যক বিক্রি হয়েছে কিন্তু রাত পোহালে লক্ষ্মী পূজা। লক্ষ্মী পূজা তে যে মিষ্টি মানুষ নিয়ে যেতেন বাড়িতে অন্যান্যবারের মতো অর্ডার নেই আর ১৫ দিন পরেই কালীপুজো এবং ভাইফোঁটা মিষ্টির আমরা করব কিন্তু এই লকডাউন করোনাভাইরাসের জন্য কত মিষ্টান্ন বিক্রি হবে সেটা এখনো আমরা বুঝতে পারছি না। কিন্তু জনসাধারণের জন্য বিক্রেতাদের জন্য আমরা অন্যান্য বারের মতো এবারেও ভিন্ন ধরনের ভিন্ন স্বাদের মিষ্টি আমরা তৈরি কোরবো।
No comments