অনুষ্ঠান চলাকালীন মহিলা শিল্পীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে!মহিষাদলের একটি ক্লাবে রাতে গানের অনুষ্ঠান চলাকালীন মহিলা শিল্পীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সুরেন্দু মান্না ন…
অনুষ্ঠান চলাকালীন মহিলা শিল্পীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে!
মহিষাদলের একটি ক্লাবে রাতে গানের অনুষ্ঠান চলাকালীন মহিলা শিল্পীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সুরেন্দু মান্না নামে ওই তৃণমূল নেতা মহিষাদলের ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি এবং তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। একই সঙ্গে তিনি ত্রিবেনী গোষ্ঠী ক্লাবের সম্পাদক পদেও রয়েছেন। নিজের ক্লাবের অনুষ্ঠান চলাকালীন শিল্পীর সঙ্গে সম্পাদক সুরেন্দুর ওই অভব্য আচরণ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে মহিষাদলের সংস্কৃতি মহলে। এনিয়ে একটি ভিডিও রেকর্ডিং সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। ওই ঘটনার সময় শিল্পীকে মাইক্রোফোনে তারস্বরে প্রশাসনের কাছে সহযোগিতার আর্জি চাইতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে অবশ্য তৃণমূল নেতা তথা ক্লাব সম্পাদক এলাকা থেকে গা ঢাকা দেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অনুষ্ঠান বন্ধ করে শিল্পী মঞ্চ ছাড়েন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন দলের নেতা কর্মীরাও। এদিকে ওই ঘটনায় অনুষ্ঠানে মহিলা শিল্পীদের নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
কালীপুজো উপলক্ষে চারদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মহিষাদলের গুণ্ডিচাবাটি সংলগ্ন ত্রিবেনী গোষ্ঠী ক্লাব। গত ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে তিন জন শিল্পীর নাচ ও গানের নাইট ছিল। শেষ গানের শিল্পী ছিলেন লীনা দাস। অনুষ্ঠান চলাকালীন ওই শিল্পী মঞ্চ থেকে নেমে এসে উৎসাহী মহিলা দর্শকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে গান ছিলেন। ওইসময় তৃণমূল নেতা অভ্যবতা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে একটি ভিডিও রেকর্ডিং ভাইরাল হয়েছে। ওই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান। ভিডিও দেখা যাচ্ছে, একটি গান শেষ করার পরই হঠাৎ ওই শিল্পী লীনা দাস মাইক্রোফোনে জোর উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করেন, আমার গার্ডিয়ানের গায়ে হাত দেওয়ার উনি কে? এরপরই 'প্রশাসনের লোকজন দয়া করে এখানে আসুন' বলে কাতর আর্জি জানাতে থাকেন। এরপর ওই তৃণমূল নেতার পরিচয় জেনে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, উনি সভাপতি কিংবা সম্পাদক আমি তো জানি না। কিন্তু এঘটনা কীভাবে সম্ভব? ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তৃণমূল নেতা সুরেন্দু নীল রঙের জামা পরা একজনের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিচ্ছেন। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায়।
শিল্পী লীনা দাসের দাবি, ওই নীল জামা পরা ব্যক্তি তাঁর দাদা, অভিভাবক হয়ে এসেছিলেন। মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনা তাঁর সামনে ঘটেছে। ওটি শিল্পীর নিজের মোবাইল। দর্শকদের সঙ্গে গান ও নাচের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য দাদাকে দিয়েছিলেন। সেই মোবাইল জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলা শিল্পীর নিরাপত্তা ও তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিজেপিও তৃণমূল নেতার আচরণ নিয়ে সরব হয়েছে। এরপরই কার্যত নড়েচড়ে বসে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা। রবিবার শিল্পী লীনা দাসকে ফোন করে ক্ষমা চান ওই তৃণমূল নেতা তথা ক্লাব সম্পাদক। লীনা দাস বলেন, এধরনের ঘটনাকে ধিক্কার জানাচ্ছি। আমার মোবাইল এভাবে আমার অভিভাবকের হাত থেকে আচমকা কেড়ে নেওয়া হবে ভাবতে পারছি না। একজন মহিলা শিল্পী হিসেবে নিরাপত্তাহীনতার অভাব থেকেই প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি। পুলিশ অবশ্য এসেছিলেন। তবে এঘটনা নিয়ে শিল্পী ফোরামে অভিযোগ করিনি। ওই ক্লাব সম্পাদক ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ফোন করেছিল। ওরা দুঃখ প্রকাশ করেছে। তৃণমূল নেতা সুরেন্দু বলেন, অনুষ্ঠানের শেষ গানে সামান্য ভুলবোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। বিষয়টি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। এনিয়ে আমরা একটি প্রকাশ্য বিবৃতিও দিয়েছি। বিধায়ক তিলকবাবু বলেন, এই বিষয়টি নজরে এসেছে। এখানে বিজেপি রাজনৈতিক রঙ চড়ানোর চেষ্টা করছে এবং বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
No comments