জিএসটি গেরোয় উধাও সুগার-প্রেশার সহ ৪০০ ওষুধ!মানুষের খরচ কমাতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদি সরকার। ওষুধভেদে ৪.৭৭ থেকে ১১.০২ শতাংশ জিএসটি কমার ঘোষণাও হয়েছে। তাতেই দেখা যাচ্ছে নতুন বিপদ। লোকসানের আশঙ্কায় …
জিএসটি গেরোয় উধাও সুগার-প্রেশার সহ ৪০০ ওষুধ!
মানুষের খরচ কমাতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদি সরকার। ওষুধভেদে ৪.৭৭ থেকে ১১.০২ শতাংশ জিএসটি কমার ঘোষণাও হয়েছে। তাতেই দেখা যাচ্ছে নতুন বিপদ। লোকসানের আশঙ্কায় বাজারের বিভিন্ন দোকান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কয়েকশো জনপ্রিয় ওষুধ। কোথাও তার বিকল্প মিলছে। কোথাও সেটুকুও মিলছে না। ওষুধ ব্যবসায়ীদের একাংশের সাফ কথা, ৬-৭ শতাংশ লোকসান করে কে ব্যবসা করবে? যতদিন না নতুন প্রিন্টে ওষুধ বাজারে আসছে, এই জটিলতা চলবে।
রাজ্যের ওষুধের দোকানের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। তার মধ্যে ৭০ শতাংশই খুচরো দোকানদার। সিংহভাগেরই খাতায়কলমে বার্ষিক ৪০ লাখ টাকার নীচে লেনদেন। সেক্ষেত্রে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়। কম্পোজিট স্কিমের (বার্ষিক লেনদেন দেড় কোটি টাকা) আওতাতেও রয়েছেন অসংখ্য ব্যবসায়ী। দু’ক্ষেত্রেই নয়া জিএসটি নিয়মে স্টক বাড়ালে লোকসানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই জের চলছে এখনও। তাই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল, প্রস্টেট, ব্যথার সহ বিভিন্ন ধরনের দরকারি ওষুধ ও ইঞ্জেকশনের অভাব শুরু হয়েছে।
শহরের একটি বড় ওষুধ চেইনের ম্যানেজার জানালেন, একটি বহুজাতিক সংস্থার প্রায় কোনও ধরনের ইনসুলিন কার্টিজই নেই। নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ট্রামাডোল গ্রুপের ব্যথার ওষুধও অমিল। মেদ কমানোর ইঞ্জেকশন পাওয়া যাচ্ছে না। সল্টলেকের আর একটি ওষুধ চেইনের কর্মী জানালেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের রোসুভাসটাটিন নেই। একই সমস্যা বহুল বিক্রি হওয়া ইউরিক অ্যাসিডের ওষুধের ব্র্যান্ডেরও।
খুচরো দোকানদারদের একাংশ স্বীকারও করছেন, নয়া জিএসটি হারের জন্য বেশি দামে কেনা পুরানো স্টক সস্তায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই ভরসা ধীরে চলো নীতি। একাংশের বক্তব্য, ‘জিএসটি নথিভুক্ত দোকানদারদের লোকসান পুষিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের লোকসান হবে।’ আবার একাংশ বলছেন, ‘এই আশঙ্কা অমূলক।’ এক পোড়খাওয়া ব্যবসায়ী জানালেন, আসল কথা হল, বহু ওষুধ কোম্পানিই নতুন প্রিন্টে ওষুধ আনার আগে স্টক ক্লিয়ার করতে চাইছে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আছে। নতুন এমআরপি প্রিন্ট আসার আগে আর উৎপাদন বাড়াতে চাইছে না তারা।
পুজোর জন্য স্টকিস্টদের সেন্টার বন্ধ ছিল বেশ কিছুদিন। লক্ষ্মীপুজোর পর খুললেও বাজার এখনও স্বাভাবিক হয়নি। নয়া জিএসটি নিয়ম অনুযায়ী সফ্টওয়্যারের পরিবর্তন করতে হচ্ছে ছোট-মাঝারি-বড় দোকানদারদের। সবমিলিয়ে ভুগছে সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে আবার বেশ কিছু হেলথ সাপ্লিমেন্টের দাম বাড়ায় আশ্চর্য ক্রেতারা!
ই এম বাইপাসের বড় ওষুধ চেইনের কর্তা অমর্ত্যআলোক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘প্রচুর ওষুধের স্টক নেই অথবা কম আছে। যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে নতুন প্রিন্ট সমেত ওষুধ আসছে, আমাদের মতো অনেকেই স্টক বাড়ানোর ঝুঁকি নিচ্ছি না। নেবও না।’ দোকানদারদের শীর্ষ সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডিএ) অন্যতম শীর্ষকর্তা শঙ্খ রায়চৌধুরির অবশ্য দাবি, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কিছু ওষুধ অমিল হতে পারে। কিন্তু বিকল্প ব্র্যান্ড আছে। সামগ্রিকভাবে ওষুধের অভাব নেই।
No comments