ভারত থেকে দেশে ফিরলেন দুই শিশু ও নারী সহ তিনজন সৈয়দ খায়রুল আলম, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃদীর্ঘদিন ভারতে আটক থাকার পর মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন রাজিয়া আক্তার ও ২ শিশু সহ তিনজন বাংলাদেশি নাগরীক। (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর পাঁচটার ইনডিগো ৬ই ৫৭৫ ন…
ভারত থেকে দেশে ফিরলেন দুই শিশু ও নারী সহ তিনজন
সৈয়দ খায়রুল আলম, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃদীর্ঘদিন ভারতে আটক থাকার পর মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন রাজিয়া আক্তার ও ২ শিশু সহ তিনজন বাংলাদেশি নাগরীক।
(১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর পাঁচটার ইনডিগো ৬ই ৫৭৫ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাঙ্গালোর থেকে চেন্নাইয়ে যাত্রা বিরতি শেষে ভারতীয় সময় দুপুর সোয়া একটায় ১১১৩ ফ্লাইটে সোয়া চারটায় তাদের বহনকারী বিমানটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন ও জিজ্ঞসাবাদ শেষে সন্ধ্যা ৬টায় মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেছেন পাচারের শিকার মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলমের মিকট হস্তান্তর করেন ইমিগ্রেশন কতৃপক্ষ।
পরে বিমানবন্দরে অবস্তানরত সৈয়দ খায়রুল আলম তাদেরকে গ্রহন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। হস্তান্তর করার সময় রাজিয়া আক্তার এর বাবা আমজাদ হোসেন, মাতা মিনারা বেগম, ভাই মনির হোসেন এবং বোন রাবেয়া উপস্থিত ছিলেন। ফেরত এসে বিমান বন্দরে রাজিয়া আক্তার জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতে বাংলাদেশিদের ওপর ধরপাকড় শুরু হয়। অনেকেই আটক হয়েছে সেখানে, আমাকে স্বামী সন্তানসহ আটক করা হয় আমি দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরতে পারলেও আমার স্বামী এখন আটক আছেন ভারতের বেঙ্গালুরুে।
রাজিয়া আক্তার মা বাবাকে কাছে পেয়ে চিৎকার করে মায়ের পরম স্নেহে জড়িয়ে আনন্দে কাঁদতে থাকেন। রাজিয়ার কন্যা মাজেদা এবং শিশু সন্তান রাব্বি নানা নানিকে পেয়ে পরম আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। দেশে ফিরে আসতে পেরে তারা শুকরিয়া আদায় করে মানবিক সমাজকর্মী সৈয়দ খায়রুল আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য রাজিয়া আক্তার এর স্বামী মাথিম হাওলাদার এখনও ভারতের একটা শেল্টার হোমে অবস্থান করছে অতি দ্রুতই তাকেও দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে।
সৈয়দ খায়রুল আলম জানান বিমানবন্দরে মা-বাবাসহ স্বজনদের পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন রাজিয়া আক্তার। তিনি জানান, বিয়ের পরই স্বামীর সাথে অবৈধ পথে ভারতে যান রাজিয়া। সেখানেই জন্ম হয় তার প্রথম সন্তান মাজেদার। করোনা সময়ে দেশে ফিরে আসে রাজিয়া। এরপর দালালের মাধ্যমে আবার চলে যান ভারতে। সেখানে জন্ম নেয় তার দ্বিতীয় সন্তান রাব্বি। স্বামী সন্তান নিয়ে ভালই কাটছিলো তাদের দিন। ভারতে বাংলাদেশের অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের আটক কার্যক্রম জোরদার করলে তাদেরকে স্ব পরিবারে বিবেক নগর থানা পুলিশ আটক করে। পরে নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়া, বিবেক নগর বেঙ্গালুর শেল্টার হোমের সেফ হেফাজতে তাদের রাখা হয়। নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়া শেল্টার হোমের প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি থমাস রাজা (অটো রাজা) এবং ম্যানেজার শ্রীনিভাস সৈয়দ খায়রুল আলমকে বিস্তারিত জানালে তিনি পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের স্পেশাল বিভাগ, ডেপুটি হাইকমিশনার চেন্নাই এবং আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি থমাস রাজার(অটো রাজা) মাধ্যমে সকল রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম শেষে একাজ সফল হয়েছে বলে জানান সৈয়দ খায়রুল আলম।
পাচারের শিকার মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম আরো জানান নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং সচিব থমাস রাজা (অটো রাজা), নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়া নামে একটি নিবন্ধিত ট্রাস্টের উদ্যোগে ২৮ বছর ধরে এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম করে আসছে। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রাস্তার মধ্যে পড়ে থাকা অসহায় মানুষদের উদ্ধার করা, যারা দরিদ্র, অভাবী, গৃহহীন, অসুস্থ, সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রায়শই যক্ষ্মা, ক্যান্সার, এইচআইভি, কিডনি ও লিভারের মতো বিভিন্ন রোগে ভুগছেন, সেইসাথে বার্ধক্যজনিত কারণে আক্রান্ত মানুষের সাহায্যে করা।
বিশেষ করে পুলিশ, ১০৮ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, সরকারি হাসপাতাল, অন্যান্য এনজিও এবং সরকারের ভিক্ষুক পুনর্বাসন কেন্দ্রের সাথে সহযোগিতা করে নিঃস্ব ব্যক্তিদের উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে শেল্টার হোমের ফিরিয়ে এনে পুর্নবাসন ও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে সাহায্য করা। আমার জানা মতে গত ২৮ বছরে, এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২২,০০০ এরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুঃখজনকভাবে, ৯,০০০ এরও বেশি ব্যক্তি মর্যাদার সাথে মারা গেছেন, যেখানে ৭,০০০ এরও বেশি মানুষ পালিয়ে এসেছেন এবং ৪,০০০ এরও বেশি তাদের পরিবারের সাথে পুনর্মিলিত হয়েছেন। বর্তমানে, তাদের প্রতিষ্ঠানে ৯০০ জন বাসিন্দা বাস করেন
এ বাড়িতে নিঃস্ব বাসিন্দারা আসেন, তারা তাদের বাকি জীবন ধরে থাকেন এবং প্রতিষ্ঠাতা এবং সচিব থমাস রাজা তাদের সর্বোত্তম যত্ন নিয়ে দিনে তিনবার পুষ্টিকর খাবার, পোশাক, আশ্রয়, চিকিৎসা সেবা, পুনর্বাসন এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রদান করে থাকেন নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়া।
থমাস রাজা জানান ২৮ বছর ধরে আমরা আমাদের সকল সুযোগ-সুবিধার জন্য সাধারণ জনগণের কিছু অনুদান পেয়ে এ ধরনের কার্যক্রম নির্ভর করে আসছি, কারণ আমরা মৃত ও নিঃস্বদের সেবা করার লক্ষ্যে কোনও সরকারি সহায়তা, তহবিল বা সহায়তা পায় না বলে জানা যায়।
এছাড়াও,তারা বিদেশীদের যত্ন প্রদান করে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং যারা এ দেশে অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ এবং আফ্রিকান দেশগুলির দূতাবাসগুলির পাশাপাশি FRRO (বিদেশী আঞ্চলিক নিবন্ধন অফিস) এর সহায়তায়, তাদের জরুরি ভ্রমণ নথি (ETD) পেতে সহায়তা করি। তারা আমাদের সাথে থাকাকালীন, আমরা বিনামূল্যে আশ্রয়, জল, বিদ্যুৎ এবং কিছু খাদ্য সামগ্রী প্রদান করি এবং তারপর তাদের নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো ব্যবস্থা করি। এ প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত ৫০০ জনেরও বেশি বিদেশীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। সকল জাতির বিদেশীদের সমর্থন করতে পেরে এবং সরকার এবং FRRO-কে তাদের প্রচেষ্টায় সাহায্য করতে পেরে আনন্দিত।
দরিদ্র ও অভাবীদের সেবা করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে আপনার সমর্থন কামনা করেন মানবতার সেবায় নিউ আর্ক মিশন অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সচিব তমাস রাজা (অটো রাজা) এবং বাংলাদেশের মানবিক সমাজকর্মী পাচারের শিকার মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম।
No comments