বন্দরের ছাঁটাই নিয়ে সেটিং গুঞ্জন, শ্রমিকরা অথৈ জলে!
বন্দরের স্টিভেডরিং এজেন্সি এএমই এন্টারপ্রাইজে ছাঁটাই শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবি বাম তৃণমূলের লাগাতার বিক্ষোভেও চিঁড়ে ভেজেনি। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা আদৌ কাজ ফিরে পাবেন কি না তা নিয়…
বন্দরের ছাঁটাই নিয়ে সেটিং গুঞ্জন, শ্রমিকরা অথৈ জলে!
বন্দরের স্টিভেডরিং এজেন্সি এএমই এন্টারপ্রাইজে ছাঁটাই শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবি বাম তৃণমূলের লাগাতার বিক্ষোভেও চিঁড়ে ভেজেনি। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা আদৌ কাজ ফিরে পাবেন কি না তা নিয়েও সংশয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলি। বরং বিরোধীরা এই ঘটনাকে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে ওই সংস্থার সেটিংয়ের অভিযোগ তুলেছে। তাদের বক্তব্য, ওই সংস্থা শতাধিক লোক ছাঁটাই করতে চাইছে। তার আগে কমজনকে ছাঁটাই করে জল মাপছে। শাসকদলের মদত ছাড়া এঘটনা ঘটে না। শাসকদলের বিধায়ককে পর্যন্ত পাত্তা দিচ্ছে না,। এঘটনাই অন্য ধরনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এনিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও সরব বিরোধীরা। তবে, বিরোধী সিটু জানিয়েছে, তারা আধুনিকীকরণের বিরোধী নয়, তবে ছাঁটাই না করে অন্য পথ দেখতে হবে। গত ২ জুলাই বুধবার ফের ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে তাদের সঙ্গে নিয়ে বন্দরের বেসরকারি সংস্থার অফিস ঘেরাও করেন বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। ওই শ্রমিকরা হলদিয়া বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজে যুক্ত একটি স্টিভেডরিং এজেন্সিতে কাজ করতেন।
গত ১২ জুন ওই সংস্থা ৫০জন শ্রমিককে বিনা নোটিসে ছাঁটাই করে বলে অভিযোগ। এঁরা ২০-২৫ বছর ধরে ওই সংস্থায় কাজ করছেন। তাঁদের অভিযোগ, অফিসে ডেকে চা বিস্কুট খাইয়ে তাঁদের ছাঁটাই বলে ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এমনকী, শ্রমিকদের আইডি লক করে দেওয়ায় কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকরা গেটে আটকে পড়েন। সিআইএসএফ তাঁদের বেআইনি ট্রেসপাসার্স বলে আটকায়। শেষমেস তাদের হাতেপায়ে ধরে মুক্তি পান ওই শ্রমিকরা। এরপরই ওই ছাঁটাই শ্রমিকরা তাঁদের কাজে পুনরায় নিয়োগের আবেদন জানিয়ে বিধায়কের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অসহায়তার কথা জানিয়ে বিধায়ককে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এবিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া আর্জি জানান শ্রমিকরা। এরপরই হলদিয়ার বিধায়ক গত ১৮ জুন প্রথমবার শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে ওই সংস্থার অফিস ঘেরাও করেন। তবে ওইদিন সংস্থার কেউই বিধায়কের সঙ্গে দেখা করা বা কথা বলতে চায়নি। পরে ওই সংস্থা আলোচনার জন্য সময় চেয়ে নেয়। ওই শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে আইএনটিটিইউসির পাশাপাশি পথে নামে শ্রমিক সংগঠন সিটু'ও। আইএনটিটিইউসি শ্রমিক পুনর্বহালের দাবিতে চাপ বাড়াতে থাকে।
শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের কাজে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত অফিস খুলতে দেওয়া হবে না। ফলে এদিন ওই সংস্থার অফিসার ও কর্মীরা এবং সংস্থার মালিকও অফিসে ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ। সকাল ৯টা থেকে সন্ধে পর্যন্ত দিনভর ওই সংস্থার অফিস ঘেরাও করে রাখা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিস মোতায়েন ছিল। অভিযোগ, ছাঁটাই শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য এদিন বন্দরের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। তবে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা তৃণমূলের ডাকে সাড়া দেয়নি। অভিযোগ, তৃণমূলের এক নেতা নেতৃত্ব দিচ্ছিল, যার বিরুদ্ধে বন্দরে শ্রমিকদের বঞ্চনা করা অভিযোগ রয়েছে। বন্দরের শ্রমিকদের পিএফ, ইএসআইএর টাকা জমা দেয়নি বলে তার নামে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি বার বার নাম না করে অভিযোগ করেছেন। এমনকী দিল্লিতেও অভিযোগ করেছেন। তারপরও কীভাবে ওই নেতা ছটাই শ্রমিকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
No comments