একুশের আগে আরও প্রকট অখিল-উত্তম কোন্দল!শহিদ দিবসের প্রস্তুতি সভাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC inner clash) । তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও রামনগরের তৃণমূল বিধায়কের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই এ…
একুশের আগে আরও প্রকট অখিল-উত্তম কোন্দল!
শহিদ দিবসের প্রস্তুতি সভাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC inner clash) । তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও রামনগরের তৃণমূল বিধায়কের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই এবার এল জনসমক্ষে। পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) রামনগর (Ramnagar) বিধানসভায় তৃণমূলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনাকে কটাক্ষ করে বিজেপির দাবি, তৃণমূলের এই দ্বন্দ্ব তোলাবাজির লড়াই, আগামী ছাব্বিশের নির্বাচনে রামনগরে তৃণমূল পরাজিত হবে বলেই এসব নাটক করছে। এদিকে গত চব্বিশের লোকসভা ভোটের পরেই তৃণমূলের অন্দরে চলা এই কোন্দল বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে রাজ্যের শাসক দলকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রামনগরে তৃণমূলের টিকিটে প্রায় ১২ হাজার ভোটে জয়ী হন অখিল গিরি। গত চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক বিজেপির সৌমেন্দু অধিকারীর কাছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোটে পরাজিত হন। কিন্তু চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে রামনগর বিধানসভায় অখিল গিরি তৃণমূলের বিধায়ক থাকা সত্বেও রামনগরে প্রায় ৯ হাজার ভোট লিড পায় বিজেপি। তারপর থেকেই রামনগরের তৃণমূলের বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতির মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই নিয়ে জেলা রাজনীতিতেও বেশ গুঞ্জন উঠেছিল। তবে এবার এই ঠাণ্ডা লড়াই প্রকাশ্যে এল। কিন্তু এদিন রামনগরে হওয়া একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি মিছিলে এবং সভায় দেখা যায়নি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক ও রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে। তবে একই দিনে এবং একই সময়ে তৃণমূলে জুজুধান দুই গোষ্ঠীর শহিদ সভার প্রস্তুতি ঘিরে তৃণমূলের এই গৃহযুদ্ধকে নিয়ে রামনগরে বেশ চর্চাও শুরু হয়েছে। রামনগর ১ ব্লক যুব তৃণমূলের উদ্যোগে কৌশিক বারিক, দীপক সার, তমাল তরু দাস মহাপাত্র ও রিজিয়া বিবির নেতৃত্বে চৌদ্দমাইল ব্রীজ থেকে রামনগর বাজার পর্যন্ত বিশাল মিছিল ও রামনগর বাসস্ট্যান্ডে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। তৃণমূলের একাংশের দাবি, এই মিছিল ও পথসভার প্রধান উদ্যোক্তা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। পাশাপাশি, রামনগর ১ ব্লক তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের উদ্যোগে রামনগর আর.এস.এ ময়দান থেকে একটি বাইক মিছিল শুরু হয়ে দিঘা বাইপাস এসে শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রামনগর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি উত্তম দাস, জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বরঞ্জন মিশ্র, জাহেদুল ইসলাম, মিনাজুর ইসলাম,শতদল বেরা। তবে এটি রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি'র সৌজন্যে হয়েছে বলে দলের একাংশের দাবি। কিন্তু এবিষয়ে রামনগর ১ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি (জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক ঘনিষ্ঠ) কৌশিক বারিক জানিয়েছেন, এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত ও স্বঘোষিত কর্মসূচি। কোথাও কি হলো না হলো তা আমার জানা নেই। এটাই আমাদের বৈধ কর্মসূচি। কিন্তু এ প্রসঙ্গে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য (বিধায়ক অখিল গিরি ঘনিষ্ঠ) বিশ্বরঞ্জন মিশ্র জানিয়েছেন, এটা কোন পাল্টা সভা নয়। গোষ্ঠীকোন্দলকে অস্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন এটা দলের সভা। রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির নেতৃত্বে এই মিছিল হয়েছে। তবে তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দলকে কটাক্ষ করতে একেবারেই দেরি করেনি গেরুয়া শিবির। বিজেপির রামনগর ৩ মন্ডলের সভাপতি সত্যেন কুমার পঞ্চাধ্যায়ী বলেন, "তৃণমূলের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে, এটা সর্বজনবিদিত। আগামী ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে রামনগরে তৃণমূল হারছে।"
No comments