মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ভয় দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ!
হলদিয়ার তিনটি থানা এলাকার তিন যুবক সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে খোয়ালেন প্রায় সাড়ে ৭লক্ষ টাকা। সাইবার প্রতারকরা কেউ ভুয়ো ব্যাঙ্ক কর্মী, কেউ স্টক মার্কেট অ্যাডভাইসর বা মুম্বাই ক…
মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ভয় দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ!
হলদিয়ার তিনটি থানা এলাকার তিন যুবক সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে খোয়ালেন প্রায় সাড়ে ৭লক্ষ টাকা। সাইবার প্রতারকরা কেউ ভুয়ো ব্যাঙ্ক কর্মী, কেউ স্টক মার্কেট অ্যাডভাইসর বা মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ভুয়ো আধিকারিক সেজে ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে পুলিসে অভিযোগ হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আচমকা ভয়ের পরিবেশ তৈরি ওই যুবকদের আতঙ্কিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে শহর হলদিয়া এবং গ্রামীণ হলদিয়ায় প্রতারণার ছক আলাদা বলে তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকরা জানিয়েছেন। হলদিয়া, সুতাহাটা ও মহিষাদল থানায় সাইবার প্রতারণার তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সুতাহাটা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুঁকড়াহাটির ফকিরচক এলাকার বাসিন্দা মৃগাঙ্ক চাউলিয়াকে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা প্রতারকরা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। দিল্লির টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই) থেকে মৃগাঙ্গকে বলা হয়, তাঁর নামে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ এফআইআর করেছে। এরপরই তাঁর ফোন ক্রাইম ব্রাঞ্চের নাম করে একটি একটি অপরিচিত নম্বরের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। ওই নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হয়। কারণ, মৃগাঙ্কবাবু নাকি 'ইন্টারন্যাশনাল মানি লন্ডারিং'র সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, খবর ফাঁস করলে ওই সময় তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। খুনের হাত থেকে বাঁচতে মৃগাঙ্ককে একটি গুগল পে নম্বরে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা দ্রুত পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার পর ফোন কাটতেই মৃগাঙ্ক বুঝতে পারেন প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে তিনি সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
এদিকে, মহিষাদলে তিন বন্ধুর জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাইবার প্রতারকদের পাল্লায় পড়েই ওই টাকা উধাও হয়েছে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে। ভুয়ো ব্যাঙ্ক কর্মী সেজে টাকা হাতিয়েছ প্রতারকরা। পুলিস জানিয়েছে, তমাল বেরা সহ তিন বন্ধুর মহিষাদল বন্ধন ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্ট ছিল। কেওয়াইসি আপডেট করার নাম সুকৌশলে ২ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা প্রতারকরা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তমাল বেরার কাছে বন্ধন ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে একটি ফোন যায়। দীর্ঘদিন তাঁদের ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন হয়নি এমন অভিযোগ করে ওই কর্মী অ্যাকাউন্ট বন্ধের ভয় দেখায়। এরপর প্যান কার্ড ও ই মেল আইডি নম্বর চেয়ে কেওয়াইসি আপডেট করবে বলে জানায়। তমালের সন্দেহ হয় ওই ঘটনায়। তখন বিশ্বাস অর্জন করতে তমালবাবুদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য হুবহু জানাতে থাকে। শুধু তাই নয়, ভিডিও কল করেও বিশ্বাস তৈরি করে ফেলে। ওইসময় প্যান নম্বর জানাতেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যায়। ওইমুহূর্তেই তমালবাবু ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়েছেন। অন্যদিকে, হলদিয়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া টাউনশিপের সিপিটি আবাসনের কানাইলাল ঘোষ শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করতে গিয়ে প্রতারণার খপ্পরে পড়ে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা খুইয়েছেন। স্টক মার্কেট অ্যাডভাইসর সেজে ১০ শতাংশ প্রফিটের লোভ দেখিয়ে প্রতাকরা ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। তিনটি ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
No comments