মহিষাদল রাজ পরিবারের গোপালজীউর রথ১ জুলাই মহিষাদলে রথ-সংস্কৃতি শতাব্দী প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত। মহিষাদল রাজবাড়ি এবং রামবাগের দেওয়ানবাড়ির ব্যবস্থাপনায় এককালে চারটি রথ টানা হত। কোনটি রথযাত্রার সময়, কোনও রথ আষাঢ়ে পূর্ণিমায়, কোনও রথ …
মহিষাদল রাজ পরিবারের গোপালজীউর রথ
১ জুলাই মহিষাদলে রথ-সংস্কৃতি শতাব্দী প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত। মহিষাদল রাজবাড়ি এবং রামবাগের দেওয়ানবাড়ির ব্যবস্থাপনায় এককালে চারটি রথ টানা হত। কোনটি রথযাত্রার সময়, কোনও রথ আষাঢ়ে পূর্ণিমায়, কোনও রথ টানা টানা হয় দশমীতে। কালের নিয়মে মহিষাদলের রাজ রথ এখন ভক্তের রথ, জনসাধারণের রথে পরিণত। যদিও রাজবাড়ি বা দেওয়ান পরিবারের পুরনো রীতি মেনেই রথ পরিচালনা করা হয়। রথের মাঙ্গলিক আচার অনুষ্ঠান রাজবাড়ি পরিচালনা করে। আজও রথের আমন্ত্রণ জানান রাজ পরিবারের দুই সদস্য শঙ্করপ্রসাদ গর্গ ও হরপ্রসাদ গর্গ। তবে রথ ঘিরে মেলা ও অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকে স্থানীয় প্রশাসন এবং এলাকার বাসিন্দারা। মহিষাদলের রাজবাড়ির রথ এবং দেওয়ানজির রথ দু'টিই আজকের দিনে 'চলমান হেরিটেজ' হিসেবে পরিচিত। কাঠের দু'টি রথই প্রত্নবস্তু এবং রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। মহিষাদলের রথ কাঁঠাল এবং রামবাগের দেওয়ানজির রথ আখ ও কাঁকড়ার জন্য বিখ্যাত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মহিষাদল রাজবাড়ির কাঠের তৈরি দু'শো বছরের বেশি পুরনো রথ আর কোথাও সচল অবস্থায় নেই। অগ্নিকাণ্ড সহ নানা কারণে গত দেড়শো বছরে ওই রথ একাধিকবার সংস্কার হলেও কখনও আমূল বদল হয়নি। দু'শো বছরের পুরনো কাঠের মূল কাঠামো সিংহভাগই অটুট রয়েছে। ছ'তলা বাড়ির সমান উঁচু প্রায় একশো টন ভারি কাঠের রথ কীভাবে সচল রয়েছে তাও এক বিস্ময়। ১৩ চূড়ার এই রথ দেশিয় প্রযুক্তির এক বিস্ময়
নিজস্ব সংবাদদাতা, হলদিয়া, ১ জুলাই হলদিয়ার সুতাহাটায় একতা পরিষদের রথযাত্রায় শুক্রবার বিকেলে রথ টানার সময় চূড়ার ঘণ্টা ছিঁড়ে পড়ে গুরুতর জখম হয়েছেন এক যুবক। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের বাড়ি পুরসভার
বলে মনে করেন আজকের ইঞ্জিনিয়াররাও। অন্যদিকে, মহিষাদল রাজবাড়ির অদূরে দেওয়ান পরিবারের ছোট আকারের কাঠের রথও শতাব্দী প্রাচীন। একইভাবে, ওই রথ সংস্কার হলেও আমূল বদল হয়নি কখনও।
মহিষাদলের দুই আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক অধ্যাপক হরিপদ মাইতি ও অর্ণব রায় বলেন, মহিষাদলের কাঠের তৈরি দু'টি রথ গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্তু। এগুলির সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং অবশ্যই বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু রাজ্য নয়, দেশের কোথাও এত বিশাল আকারের পুরনো রথের কাঠামো সচল অবস্থায় নেই। দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরি মহিষাদলের রাজবাড়ির রথ আজকের প্রজন্মের কাছে সত্যিই বিস্ময়ের। এমন ঐতিহ্যময় প্রত্নবস্তুকে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের তরফে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন দুই গবেষক। তাঁদের বক্তব্য, রথযাত্রার সময় রথের সংস্কার হলেও সামগ্রিকভাবে এর বিজ্ঞানভিত্তিক সংরক্ষণ জরুরি। রথ সচল রাখতে এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রয়োজন। গত বছর সরকারি ইঞ্জিনিয়াররা এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রথ চালানোর সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। ঠিক ওই ঘটনার পরই রথের চাকা ভেঙে গিয়ে বিপত্তি তৈরি হয়। ফেরত রথে ডান দিকের চাকা ও এক্সেল (ধুরি কাঠ) ভেঙে যায়। ফলে ইঞ্জিনিয়ারদের ওই স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রথের কাঠামো পরীক্ষা বা স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখতে অভিজ্ঞ স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন। একইসঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে। দেশিয় কাঠের মিস্ত্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারদের টিম তৈরি করে সংরক্ষণ
১ নম্বর ওয়ার্ডের সিজবেড়িয়ায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিন একতা পরিষদের ওই রথ টেনে গুন্ডিচাবাটির দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ ঘণ্টা ছিঁড়ে পড়ে এবং তা ছিটকে গিয়ে ওই যুবকের মাথায় দরকার। আশঙ্কা রথের কাঠামো একবার নষ্ট হলে ঐতিহ্য বিলীন হতে পারে।
মহিষাদলের রথের হেরিটেজ তকমা পেতে একাধিকবার বিধানসভায় সরব হয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, কাঠের রথের সংস্কার বা সংরক্ষণের খরচ প্রচুর। প্রতিবছর ৬-১০ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে রথ সংস্কারে। বিপুল পরিমাণ খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। হলদিয়ার আইওসি জেলার হেরিটেজ সংরক্ষণে আগ্রহী বলে জেনেছি। আইওসি রিফাইনারি কর্তৃপক্ষের কাছে এজন্য আবেদন জানাব। কারণ শতাব্দী প্রাচীন এই রথ ও রথের মেলার জন্য রাজ্যে প্রসিদ্ধ মহিষাদল। মহিষাদলের রথের সূচনাকাল নিয়ে ইতিহাসকারদের দ্বিমত রয়েছে। রানী জানকীদেবীর সময়ে ১৭৭৬ কিংবা ১৭৭৮ সাল নাগাদ রথ তৈরির পরিকল্পনা ও খরচের বাজেট হয়েছিল। ১৮০৪ সাল নাগাদ সম্ভবত রথ উৎসব শুরু হয়। রথের সাতটি এক্সেলে ৩৪টি চাকা রয়েছে। চাকাগুলি এক লাইনে নেই। আগে এই চাকার উচ্চতা ছিল প্রায় সাড়ে ৬ ফুট, এখন তা কমে ৪ ফুট হয়েছে। মহিষাদলের রথের চাকার বৈশিষ্ট্য, এখানে কোনও স্পোক নেই, নিরেট কাঠের তৈরি। শুধু রথের ৩৪টি চাকার ওজন ১৬ টনের বেশি। এবছর রাজবাড়ির ২০০ বছরের পুরনো নিমকাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন ৬টি চাকা। রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনগোপালজিউর নামে পরিচিত মহিষাদলের রথ। অন্যদিকে, বিজয়াদশমীতে দেওয়ান পরিবারের রথ রামজিউর রথযাত্রা নামে পরিচিত।
সুতাহাটার একতা পরিষদের রথের চূড়া পড়ে গিয়ে মাথা এফোঁড় ওফোঁড় যুবকের আঘাত করে। যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। গাছের ডালে রথের চূড়া আটকে যায় প্রথমে, পরে সেটি খুলে গিয়ে ছিটকে নিচে পড়ে। ওই সময় চূড়ার অংশ ওই যুবকের মাথার পিছনে গেঁথে যায়। মাথায় এফোঁড় ওফোঁড় অবস্থায় যুবককে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর অপারেশন হয়েছে।
No comments