দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, ২৯ ও ৩০ মে সমুদ্রস্নান, ফেরি সার্ভিস বন্ধ!
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী ২৯ ও ৩০ মে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এ…
দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, ২৯ ও ৩০ মে সমুদ্রস্নান, ফেরি সার্ভিস বন্ধ!
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী ২৯ ও ৩০ মে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় এনিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে দীঘা, মন্দারমণিতে মাইকিং করে মানুষজনকে সতর্ক করা হয়। উপকূল বরাবর মন্দারমণিতে হ্যান্ড মাইকে প্রচার চলে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই দু’দিন সমুদ্রস্নান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। জেলাজুড়ে ফেরি সার্ভিসও বন্ধ থাকতে পারে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রতিটি ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম তৈরি রাখা হয়েছে। জেলাশাসক অফিসে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম নম্বর ০৩২২৮ ২৬২৭২৮।জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ২৯ ও ৩০ মে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর মতো পরিস্থিতি হলে সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। তারজন্য সব ধরনের পরিকাঠামো তৈরি আছে। ওই দু’দিন সমুদ্রস্নান ও ফেরি-সার্ভিস বন্ধ রাখার পরিকল্পনা আছে।মঙ্গলবার সকাল থেকেই উপকূলবর্তী এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল। দফায় দফায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগের মধ্যেও দুপুর পর্যন্ত দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে ১৬ হাজারের বেশি মানুষের ভিড় হয়। কাঁথি, তমলুক, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সকাল থেকে হাল্কা বৃষ্টিপাত হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে দুর্যোগ বাড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রের খবর। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে। গত ১৬ মে জেলাজুড়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় ‘মকড্রিল’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুর্গত মানুষজনকে সরানো, তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ, গাছকাটা এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার মতো দলও তৈরি আছে। বিদ্যুৎ বন্টন, কৃষি, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি সহ প্রত্যেক বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের কী ভূমিকা, তা নিয়ে গাইডলাইন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, উপকূলবর্তী এলাকায় মোট ৪৩টি মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। এছাড়াও ১৭টি ফ্লাড শেল্টার রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন হলে সবক’টি ত্রাণ শিবির রেডি থাকছে। এর বাইরে গোটা জেলায় প্রায় চারশো স্কুল ভবনকে ত্রাণ শিবির হিসেবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনার এনিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে চিঠি পাঠিয়েছেন। স্কুলঘরের চাবি আপাতত বিডিও-র কাছে থাকবে।ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস নেই। তাই এনডিআরএফ কিংবা এসডিআরএফের মতো উদ্ধারকারী দল আসার খবর নেই। তবে, জেলা প্রশাসনের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম প্রত্যেক ব্লক ও পঞ্চায়েতে রেডি থাকছে। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জল জমতে পারে। কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এনিয়ে চাষিদের সতর্ক করা হচ্ছে। দীঘা এই মুহূর্তে পর্যটকে ঠাসা। তাই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সি-বিচ বরাবর অতিরিক্ত নজরদারি রাখতে নির্দেশ পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই এনিয়ে মাইকিং হয়েছে। পর্যটকদের উদ্দেশে প্রশাসনের বার্তা, ৩০ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্র উত্তাল থাকবে। তাই সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে হবে। প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে।
No comments