৪ কোটি টাকা দূষণরোধী প্রকল্পে হলদিয়ায় খরচা করতে পারল না পৌরসভা, কড়া বার্তা
দূষণরোধী প্রকল্পে হলদিয়ায় খরচ হয়নি ৪ কোটি টাকা, পুরসভাকে কড়া বার্তা শহরকে দূষণমুক্ত করার প্রকল্পের প্রায় ৪ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে হলদিয়ায়। শেষ হওয়ার মুখে চ…
৪ কোটি টাকা দূষণরোধী প্রকল্পে হলদিয়ায় খরচা করতে পারল না পৌরসভা, কড়া বার্তা
দূষণরোধী প্রকল্পে হলদিয়ায় খরচ হয়নি ৪ কোটি টাকা, পুরসভাকে কড়া বার্তা
শহরকে দূষণমুক্ত করার প্রকল্পের প্রায় ৪ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে হলদিয়ায়। শেষ হওয়ার মুখে চলতি অর্থ বর্ষের মেয়াদ, কিন্তু এখনও টাকা খরচ করে উঠতে পারেনি হলদিয়া পুরসভা। 'ন্যাশনাল ক্লিয়ার এয়ার প্রোগ্রাম' সংক্ষেপে এনক্যাপ তহবিলের ওই টাকা সময়মতো খরচ করতে না পারলে, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের দূষণ প্রতিরোধের বরাদ্দ আগামীতে কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি মার্চের মধ্যে পুরসভাকে ওই অর্থ খরচের জন্য বিভিন্ন স্কীমের মাধ্যমে টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সরকারি এজেন্সি। এনক্যাপ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই কার্যত নড়েচড়ে বসেছে পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, এনক্যাপের অধীনে একাধিক পরিবেশবান্ধব প্রকল্প নিয়ে টালবাহানা চলেছে মাসের পর মাস। পাশাপাশি, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের গড়িমসির কারণেও এনক্যাপ প্রকল্পের কাজ ধাক্কা খেয়েছে। এবিষয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে সোমবার ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে কড়া ভাষায় ধমক দিয়েছেন হলদিয়ার পুর প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়। এরপরই টেন্ডার কমিটিকে নিয়ে বসে বকেয়া কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষে গ্রীণ সিটি গড়ার জন্য এনক্যাপ প্রকল্পে ৫ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য। সবচেয়ে বেশি ফান্ড পেয়েছিল দুর্গাপুর ও হলদিয়া। ৯-১০টি স্কীম বাস্তবায়িত করতে হলদিয়া ওই টাকা চেয়েছিল এবং তা অনুমোদনও করে রাজ্য। কিন্তু কয়েকটি স্কীমের কাজ হলেও পঞ্চাশ শতাংশ কাজ এখনও বকেয়া রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষের টাকা পুরসভা হাতে পায় পরের বছর। অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষে এনক্যাপের টাকা খরচ শুরু করে পুরসভা। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও সেই টাকা খরচ করতে পারেনি পুরসভা। অভিযোগ, যে প্রকল্প করতে চেয়ে পুরসভা এনক্যাপের বরাদ্দ পেয়েছিল, তার সিংহভাগই এখনও কার্যকর হয়নি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এনক্যাপ প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করে, তার ৭৫ শতাংশ অর্থ খরচের 'ইউটিলাইজেশান সার্টিফিকেট' দিলে তবেই পরের বছরের অর্থ বরাদ্দ হয়। গত কয়েক বছরে কখনওই বরাদ্দের পুরো অর্থ খরচ করতে পারেনি পুরসভা। ফলে প্রতি বছরই অগের বছরের টাকা নতুন করে তহবিলে জমা হয়। ২০২১-২২ অর্থ বর্ষ থেকে এনক্যাপের কাজ শুরু হয়েছে হলদিয়ায়। সবমিলিয়ে হলদিয়া পুরসভা গত ৪ বছরে ১০কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পেয়েছে পুরসভা। মার্চের শুরু অব্দি ৬৪ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে।
হলদিয়ায় দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এনক্যাপের বরাদ্দকৃত অর্থে মেগা প্রকল্পগুলি এখনও কার্যকর করে উঠতে পারেনি পুরসভা। ২০২৩-২৪ সালের অ্যাকশান প্ল্যানে সৌর বিদ্যুৎ তৈরি এবং ইভি চার্জিং স্টেশনের মতো বড় প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ চায় পুরসভা। এনক্যাপ সেই অ্যাকশান প্ল্যান দেখে অনুমোদনও দেয় এবং বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করে। কারণ, ২০২৩-২৪ সালে তার আগের তিন বছরের তুলনায় এনক্যাপ পুরসভাকে প্রায় তিনগুণ অর্থ বরাদ্দ করে। এনক্যাপের অর্থে শহরে সবুজায়ন, বাগান তৈরি, হাতিবেড়িয়া সতীশ পার্কে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন, ধূলিকণা ক্যানন বা কুয়াশা-কামান কিনেছে। ওই প্রকল্পে সৌর বিদ্যুতের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। পুরসভার ছাদে সোলার প্ল্যান্ট তৈরি হলেও টাউনশিপ সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডে এখনও কাজ বাকি। অভিযোগ, ওই সোলার প্ল্যান্টের জন্য বাসস্ট্যান্ডে একটি সিঁড়ির এস্টিমেট করতে গিয়েই পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা মাসের পর মাস কাটিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, তৈরি হয়নি আড়াই কোটি খরচে ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল চার্জিং স্টেশন সহ কয়েকটি প্রকল্প। পুর প্রশাসক বলেন, কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য এনক্যাপের প্রচুর চাপ রয়েছে। সেজন্য চলতি সপ্তাহেই টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। তবে ইভি চার্জিং স্টেশন টাউনশিপে হওয়ায় খরচ কম হবে। ওই টাকার একাংশ পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক শ্মশান চুল্লিতে খরচ হবে।
No comments