২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি হারানোর মামলা ঝুলে রইল সুপ্রিম কোর্টে
প্রথম শুনানি হয়েছিল ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল। সেই থেকে দফায় দফায় ২৫ দিন শুনানি শেষে সোমবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি…
২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি হারানোর মামলা ঝুলে রইল সুপ্রিম কোর্টে
প্রথম শুনানি হয়েছিল ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল। সেই থেকে দফায় দফায় ২৫ দিন শুনানি শেষে সোমবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি হারানোর মামলায় রায় ‘রিজার্ভ’ রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে সওয়াল করা হয়, সামান্য অনিয়ম হলেও পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়নি। শুনানির পর্যবেক্ষণে দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, ‘আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আমরা কী করতে পারি?’ সমস্ত পক্ষের বক্তব্য ও পরামর্শ শোনার পরে রায় রিজার্ভ রাখার কথা জানান তিনি। কিছুদিনের মধ্যে রায়দান হবে।
এই পরিস্থিতিতে আবেদনকারীদের উৎকণ্ঠার অপেক্ষা ছাড়া কোনও গতি নেই। কী হবে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া চাকরির ভবিষ্যৎ, সুপ্রিম কোর্টের করিডরে শুরু হয়েছে জল্পনা। আইনজীবীদের একাংশের মতে, সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে যেতেও পারে প্যানেল। আবার কারও কারও ধারণা, র্যাঙ্ক জাম্পিং, প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগ, প্যানেলের মেয়াদ শেষে নিয়োগের অংশটুকু বাতিল করে বাকি অংশের চাকরি বহাল থাকবে।
এদিন কমিশনের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত সুপ্রিম কোর্টে বলেন, ‘৫ হাজার ৪৮৫ জনের নিয়োগে বেনিয়ম হয়েছে বলেই এখনও পর্যন্ত আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করাও সম্ভব। ফলে সবার চাকরি চলে যাওয়াটা বাঞ্চনীয় নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিবিআইয়ের তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে আমরা একমত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি যে সংখ্যা দিয়েছে, তার সঙ্গে আমাদের তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। সেই ভিত্তিতে বেছে নেওয়া যেতে পারে যোগ্যদের।’ রাজ্য সরকারের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদিও বলেন, ‘সামান্য অনিয়ম হয়েছে মানছি। কিন্তু ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা।’ অশিক্ষক কর্মীচারীদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির প্রস্তাব, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং সিবিআই, উভয়েই যখন নির্দিষ্ট করে নাম দিতে পারবে বলছে, সেক্ষেত্রে যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করাই হবে প্রকৃত বিচার। যদিও নিজেদের যোগ্য দাবি করা চাকরি না পাওয়া আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর দাবি, অনিয়ম হয়েছে ১০ হাজার ৭৫০ জনের।
এদিকে, সিবিআইয়ের পক্ষে এদিন তিন পাতার নোট দিয়ে দাবি করা হয়, পঙ্কজ বনসলের থেকে পাওয়া ওএমআর শিট আসল। ডেটা স্ক্যানটেকের ইমেজের সঙ্গে তা মিলে গিয়েছে। কিন্তু বিচারপতি সঞ্জয় কুমারকে পাশে নিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি সিবিআইয়ের দাবিকেও মান্যতা দিলেন না। শুনানির পর্যবেক্ষণে তাঁর মন্তব্য, ‘সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ওটাই আসল, এমনটা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ফলে কী করা যেতে পারে? কোনও সাজেশন?’ অধিকাংশের প্রস্তাব, বাছা হোক যোগ্য-অযোগ্য।
No comments