বিদ্যুৎ গ্রাহকদের রাজ্য সম্মেলন সফল করুন!গতিশীল মানব সমাজে বিদ্যুৎ এখন যেমন অত্যাবশ্যকীয়,তেমনই দেশের একচেটিয়া পুঁজিপতিদের কাছে সর্বোচ্চ মুনাফার হাতিয়ার। স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার লাগানোর উদ্যোগ কেন? কেন এই অতি উন্নত প্রযুক্তির …
বিদ্যুৎ গ্রাহকদের রাজ্য সম্মেলন সফল করুন!
গতিশীল মানব সমাজে বিদ্যুৎ এখন যেমন অত্যাবশ্যকীয়,তেমনই দেশের একচেটিয়া পুঁজিপতিদের কাছে সর্বোচ্চ মুনাফার হাতিয়ার। স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার লাগানোর উদ্যোগ কেন? কেন এই অতি উন্নত প্রযুক্তির স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধতা করতে হবে? প্রযুক্তির উন্নয়ন সমাজের অগ্রগতির স্বার্থে না পুঁজিপতিদের মুনাফার স্বার্থে--এটাই প্রশ্ন। উন্নত বিজ্ঞানের ব্যবহার মানুষের জীবনকে নিংড়ে শুষে ধনকুবেরদের পুঁজির পাহাড় তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে। তাই এর প্রতিরোধ দরকার। তাই স্মার্ট মিটার প্রতিরোধ কমিটি গড়তে হবে।
আমরা সকলেই জানি, এই স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার বসানো হচ্ছে কেন্দ্রের বি জে পি সরকারের রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টার স্কিমের মাধ্যমে। যৌথ তালিকাভুক্ত বিদ্যুতের বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত রাজ্য মানতে বাধ্য নয়। যেহেতু এই মিটারের রিডিং নিতে মিটার রিডারের প্রয়োজন থাকবে না, ফলে রাজ্যের হাজার হাজার মিটার রিডার বেকার হবে। কৃত্রিম মেধার কন্ট্রোলে এই মিটার একজন অপারেটর পরিচালনা করবে-একটা গ্রুপ সাপ্লাই এর চল্লিশ/ পঞ্চাশ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহককে। ফলে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীদের চাকরি থাকবে না। সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে অপারেটরের ইচ্ছামত প্রি-পেইড মুড অর্থাৎ আগে টাকা পরে বিদ্যুৎ,বা বর্তমানে চলমান পোস্ট পেইড মুড করা যাবে। দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রেট চালু করা যাবে, যাকে টি ও ডি সিস্টেম বলা হচ্ছে। রিয়েল টাইম মনিটরিং পদ্ধতি চালু করে বিদ্যুতের চাহিদা যখন যেমন বাড়বে, দামও ইচ্ছামত বাড়িয়ে আদায় করা যাবে। তার সাথে অপারেটর চাইলেই এলাকার অনেকের লোডশেডিং করে টাকাওয়ালাদের সঙ্গে চুক্তি করে তাকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
এখনও যতটুকু গ্রাহক স্বার্থে আইনের ব্যবহার করে ভুতুড়ে বিল, খারাপ বন্ধ মিটারের বিল, খারাপ মিটারের পরিবর্তন, অন্যায়ভাবে লাইন কাটা বা নতুন লাইন নিতে ইচ্ছাকৃত দেরি করার বিরুদ্ধে গ্রাহকরা লড়াই করতে পারে, এই মিটার লাগানোর পর সেই সমস্ত করার সুযোগ আর থাকবে না। কারণ, সকল গ্রাহকদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই যাবতীয় কাজ ম্যাসেজের দ্বারাই সম্ভব।
নতুন নতুন কলকারখানা না গড়ে তুলে এখন শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সরকারি পরিকাঠামো সহ ব্যবহার করে মুনাফাকেই একমাত্র লক্ষ্য একচেটিয়া শিল্পপতিদের। তাদের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যেই কেন্দ্র -রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ। বিদ্যুৎ শিল্পের সার্বিক বেসরকারিকরণের লক্ষ্যেই রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির এলাকায় ফিক্সড চার্জ দ্বিগুন, মিনিমাম চার্জ তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। সি ই এস সি-তে এফ পি পি এ এস (ফুয়েল অ্যান্ড পাওয়ার পারচেজ অ্যাডজাস্টমেন্ট সারচার্জ)-নামে মাসে মাসে ইচ্ছামত শতকরা হারে বিদ্যুতের বিলের উপর বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি লোডবৃদ্ধির নাম করে অতিরিক্ত সিকিউরিটির টাকা এবং তার সাথে বেআইনিভাবে নতুন কানেকশানের মত সার্ভিস কানেকশান চার্জ আদায়ের বিল পাঠানো হচ্ছে। অথচ প্রথম বিদ্যুৎ কানেকশান নেওয়ার সময় গ্রাহকরা যে সিকিউরিটির টাকা জমা রেখেছে কোম্পানির কাছে, সেই টাকার উপর আইন ও রেগুলেশন মেনে সুদের প্রাপ্য টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যুৎ আমরা চাই, কৃষিতে এবং গৃহস্থে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে, গ্রাহকদের টাকা স্মার্টলি লুট করার যন্ত্র স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার চাইনা, বর্ধিত ফিক্সড চার্জ ও মিনিমাম চার্জ প্রত্যাহার করার সাথে সি ই এস সি-তে এফপিপিএএস-এর নামে বাড়তি টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে। গ্রাহকদের জমা দেওয়া সিকিউরিটির উপর আইনানুগ সুদ ফেরত দিতে হবে। লোডবৃদ্ধির নামে অতিরিক্ত সিকিউরিটির টাকা ও সার্ভিস কানেকশনের টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে।
এই দাবিতে আগামী ১-২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিদ্যুৎ গ্রাহকদের রাজ্য সম্মেলন, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই সম্মেলন সফল করুন।
No comments