অমৃত স্নানে প্রথম অধিকারপূর্ণকুম্ভ। ১২ বছর পর এক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী প্রয়াগরাজ। গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গম। শাস্ত্রে কথিত আছে, অমৃত স্নানের দিন ত্রিধারার সঙ্গমে অবগাহন করলে ঈশ্বরের আশীর্বাদ মেলে। মুক্তি মেলে সমস্ত সঙ্কট ও পা…
অমৃত স্নানে প্রথম অধিকার
পূর্ণকুম্ভ। ১২ বছর পর এক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী প্রয়াগরাজ। গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গম। শাস্ত্রে কথিত আছে, অমৃত স্নানের দিন ত্রিধারার সঙ্গমে অবগাহন করলে ঈশ্বরের আশীর্বাদ মেলে। মুক্তি মেলে সমস্ত সঙ্কট ও পাপ থেকে। জীবনে আসে সুখ-সমৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক পূর্ণতা লাভ করেন সাধু-সন্তরা। তাই বছর বছর এই সময় ভিড় করেন কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু, কুম্ভমেলায় শাহি স্নানে সবার আগে সুযোগ পান নাগা সন্ন্যাসীরাই। যুগ যুগ ধরে এই নিয়মই চলে আসছে। কিন্তু, কেন? গৃহী ভক্ত, অন্যান্য সাধু-সন্তদের ছেড়ে নাগারাই কেন এই অধিকার পান? লোকমুখে এর নানা কারণ শোনা যায়। কেউ কেউ বলেন, প্রাচীনকাল থেকে যখনই সনাতন হিন্দু ধর্মের উপর আঘাত এসেছে, তখনই ধর্ম রক্ষার্থে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন নাগা সাধুরাই। জীবনের বাজি লড়ে সনাতন ভাবধারাকে আগলে রেখেছেন। সেই অবদানের জন্যই কুম্ভ মেলায় সর্বদাই নাগা সাধুরা আগে শাহি স্নানের সুযোগ পান। আবার অনেকের মতে, মুঘল আমলেও ত্রাতা হিসেবে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। অস্ত্র হাতে অসহায় পুণ্যার্থীদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন নাগা সাধুরাই। মুঘল সেনার সঙ্গে রক্তক্ষয়ী লড়াইও করেছিলেন। তাই নাগা সাধুদের সনাতনী ধর্মের রক্ষাকর্তা বলে মনে করা হয়। আর একটি সূত্রের মতে, নাগা সাধুদের নিয়ে একটি দল গঠন করেছিলেন আদি শঙ্করাচার্য। লক্ষ্য ছিল হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করা। ধর্মরক্ষার স্বার্থে তাই প্রথমে নাগাদের অমৃত স্নানে আহ্বান জানান অন্যান্য সাধু-সন্তরা। অন্য মত অনুযায়ী, নাগা সাধুরা শিবের উপাসক। তাঁদের কঠোর সাধনা ও তপস্যাকে সম্মান জানাতেই প্রাচীন কাল থেকেই এই রীতি চলে আসছে। ভারতের চারটি প্রান্তে কুম্ভের আসর বসে। সমুদ্র মন্থনের সময় ওঠা অমৃত কলস নিয়ে লড়াই বেঁধে যায় দেবতা ও অসুরের মধ্যে। কলস নিয়ে কাড়াকাড়ির সময় অমৃতের চারটি ফোঁটা চারটি জায়গায় পড়েছিল। সেকারণেই হরিদ্বার, প্রয়াগরাজ, উজ্জ্বয়নী ও নাসিকে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
No comments