পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সাফল্য চুরি হয়ে যাওয়া ১০টি মোটরবাইক উদ্ধারপুরনো বাইক কেনার টোপ দিয়ে বাইক চুরি চক্রের পর্দা ফাঁস করল কাঁথি থানার পুলিস। এই ঘটনায় গ্যারাজের মালিক সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ১০টি বাইক বাজেয়াপ…
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সাফল্য চুরি হয়ে যাওয়া ১০টি মোটরবাইক উদ্ধার
পুরনো বাইক কেনার টোপ দিয়ে বাইক চুরি চক্রের পর্দা ফাঁস করল কাঁথি থানার পুলিস। এই ঘটনায় গ্যারাজের মালিক সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ১০টি বাইক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। বুধবার থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে এই খবর জানান কাঁথির অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার, মহকুমা পুলিস আধিকারিক দিবাকর দাস, থানার আইসি প্রদীপ দাঁ। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল হুগলি জেলার খানাকুলের ময়ালবন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা গ্যারাজ মালিক সৈকত সামন্ত ও বাইক বিক্রির এজেন্ট মন্দারমণি কোস্টাল থানার কালিন্দীর বাসিন্দা প্রসেনজিৎ জানা। এদিনই তাদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাতদিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন। জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরে কাঁথি ও রামনগর এলাকায় পরপর বাইক চুরি হচ্ছিল। বাইক মালিকরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পুলিস বাইক চুরি চক্রকে ধরার পরিকল্পনা নেয়। সম্প্রতি পুলিস সোর্স মারফত খবর পায়, কাঁথির পিছাবনি এলাকায় কালিন্দীর এক যুবক পুরনো চোরাই বাইক বিক্রি করে। এরপর থানার টাউন অফিসার গৌতম সাঁতরার নেতৃত্বে পুলিস সাদা পোশাকে এলাকায় নজরদারি শুরু করে। ওই অফিসার ক্রেতা সেজে পুরনো বাইক কেনার কথাবার্তা শুরু করেন। এজন্য ফোন মারফত প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। ১০ হাজার টাকায় একটি বাইক কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে এক হাজার টাকা পেমেন্টও করে দেওয়া হয়।
সোমবার প্রসেনজিৎ বাইক নিয়ে পিছাবনি এলাকায় বিক্রি করতে এলে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ওই চোরাই বাইকটি আটক করা হয়। প্রসেনজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে, রামনগরের দেউলিবাংলো এলাকার একটি গ্যারাজের মালিক বাইক চুরি চক্রের পান্ডা। পুলিস সেখানে গিয়ে গ্যারাজ মালিক সৈকতকে গ্রেপ্তার করে। তার থেকে আরও ন’টি বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিস জানতে পারে, সৈকত দেউলিবাংলায় দোকানঘর ভাড়া নিয়ে গ্যারাজ চালাত। পরিবার নিয়ে এলাকাতেই ভাড়াবাড়িতে থাকত। বিভিন্ন মেলা ও অনুষ্ঠানে পৌঁছে যেত সে। তারপর ডুপ্লিকেট চাবির সাহায্যে বিশেষ কায়দায় বাইকগুলি চুরি করে সোজা গ্যারাজে নিয়ে চলে আসত। আসল নম্বর প্লেট খুলে ভুয়ো নম্বর প্লেট লাগিয়ে দিত। চোরাই বাইক বিক্রির এজেন্টের কাজ করত প্রসেনজিৎ। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) বলেন, এরা আন্তঃরাজ্য বাইক চুরি চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে আমরা মনে করছি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা জানারও চেষ্টা করছি।
সূত্র মারফত খবর পেয়ে কাঁথি থানা অভিযান চালিয়ে দুই দুষ্কৃতীকে আটক করে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গ্রামীণ ও কাঁথি এর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকগণের জেরার মুখে দুষ্কৃতীরা জানায় যে বিভিন্ন জেলা থেকে তারা মোটর সাইকেল চুরি করে অবৈধ ভাবে বিক্রী করে। তাদের দেখানো মত রামনগর থানা এলাকা থেকে চুরি যাওয়া মোট ১০ টি বাইক উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনানুগ বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে।
No comments