রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের লোকভারতী কলেজ সরকারি উদাসীনতায় আজ ধ্বংসস্তুপ
মঙ্গলবার রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের ১৩৩ তম জন্মদিনেও বিগত বছরগুলির মত হল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ঔ জাতীয় পতাকা উত্…
রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের লোকভারতী কলেজ সরকারি উদাসীনতায় আজ ধ্বংসস্তুপ
মঙ্গলবার রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের ১৩৩ তম জন্মদিনেও বিগত বছরগুলির মত হল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ঔ জাতীয় পতাকা উত্তোলন ৩৩ পাউন্ডের কেক কেটে ১৩৩ টি প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে। আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মৌমিতা ঘোড়াই প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্রীকান্ত মাইতি, নারী কল্যাণ শিশু কর্মাধ্যক্ষ শিবানী মাইতি, বন ওভূমি কর্মদক্ষ শম্ভু মাইতি, আজকের সভায় দুই প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সম্বর্ধনা দেওয়া হয় প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শিমুলবাড়িয়া হাই স্কুলের সমর সিনহা ছিলেন দেউলপাতা হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অমীয় মাইতি এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ডক্টর সুজন কুমার বালা, সভায় সঞ্চালনা করেন উদ্যোগ কমিটির কানভেনার দুর্গাপদ মিশ্র তিনি বলেন সরকারি উদাসীনতা ও অনাদায়ে আরও এক বৎসরের দিকে এগিয়ে গেল লোকভারতী কলেজ। দুইবার কংগ্রেস (১৫ আগস্ট ১৯৪৭-১৪ জানুয়ারী ও ১৯৪৮ ও ১৯৭১ র ২ এপ্রিল-১৯৭১ র ২৮ জুন) ও একবার ইন্ডিপেনডেন্ট প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক এ্যালায়েন্স ফ্রন্টের (১৯৬৭ র ২০ নভেম্বর-১৯৬৮ র ২০ ফেব্রুয়ারি) মিলিয়ে তার প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ মোট তিনবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ, সেই মানুষটির হাতে গড়া হলদিয়ার বাসুদেবপুর গ্রামের বুনিয়াদী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লোকভারতী কলেজ প্রফুল্লবাবুর প্রয়াণের পর থেকে সরকারি উদাসীনতায় একটু একটু করে কধ্বংস স্তুপে পরিণত হচ্ছে। কলেজের বেশির ভাগ জমি দখল করে পাট্টা দিয়ে দিয়েছে রাজোর বিগত বামফ্রন্ট সরকার। কলেজের দরজা-জানালা-আলমারি-সহ বিভিন্ন দামি সামগ্রী চুরি করে নিয়ে গেছে নিশিকুটম্বের দল। ১৯৫৫ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার বাসুদেবপুর গ্রামে বালুহাটা-কুঁকড়াহাটি রাস্তার পাশে ৮৭ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছিলেন লোকভারতী কলেজ নামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজ্য শাসনের সাথে সাথে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠরত ছেলে- মেয়েদের পড়াতেন ডাঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ। লোকভারতী কলেজের এক সময়ের শিক্ষক অংশুমান কুইতি জানিয়েছেন, গান্ধিজীর গ্রাম স্বরাজ ও বুনিয়াদী শিক্ষার ভাবনা আগামী প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতেই প্রফুল্ল চান্দ্র ঘোষ হলদিয়ায় তাঁর এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। অংশুমানবাবু জানিয়েছেন, ১৯৫৬ সালে ৫০ টাকার বেতনে লোকভারতী কলেজে শিক্ষকতার কাজে নিযুক্ত হয়েছিলাম। ৮-৯ বছর ধরে সেই কাজ করেছিলাম। জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সময় প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ পাকাপাকিভাবে কলকাতায় চলে যান। তারপরেও বেশ কয়েকবছর ধরে কলেজটি চলে ছিল। জানিয়েছেন, প্রফুল্লবাবুর প্রয়াণের পরেও তাঁর পালিতা কন্যা সাধনা সোম কয়েক বছর প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তবে রাজ্যের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের জেরে সরাকরি উদাসীনতায় বীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ে রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের স্বপ্নের এই বুনিয়াদী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা লোকভারতী কলেজে এক সময়ে
শিক্ষকতার সাথে যুক্ত শক্তিপদ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁদের গুজরাট থেকে বুনিয়াদী শিক্ষার পাঠ পড়িয়ে এসেছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ। জানিয়েছেন, কলেজের মধ্যে তিনটি বড় পুস্করিনী, গোচারণ ক্ষেত্র, বাগান, ধান, জমি, জ্ঞান মন্দির, দাতব্য চিকিৎসালয়, পোলট্রী, ফার্ম, সংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র-সহ সবরকমের ব্যবস্থা ছিল। এমনকি চরকায় সুতো কাটা,
কাঠের কাজও শেখানো হত। শক্তিপদ চক্রবর্তী কিংবা অংশুমান কুইতিরাই নন এলাকার সকল ব্যাদ্ধ মানুষের দাবি, এইবার অত্যন্ত লোকভারতী কলেজ নিয়ে সরকারি ও প্রশাসনিক উদাসীনতার অবসান ঘটুক। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মানুষটির সাধারণ মানুষের। প্রতি, দেশের প্রতি ভালোবাসা, তাঁরকর্ম পদ্ধতি, ভাবনা তুলে ধরার ব্যবস্থা করুক সরকার।
No comments