মহিষাদলে লোক শিল্পকে বাঁচাতে চারুকলা উৎসব
বাংলার গ্রামীণ লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে ‘চারুকলা উৎসব’-এর আয়োজন করেছে মহিষাদলের বিশ্বকলা কেন্দ্র। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সর্বাধিনায়ক স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশচন্দ্র সামন্তের জন্মদিন উদযাপন উ…
মহিষাদলে লোক শিল্পকে বাঁচাতে চারুকলা উৎসব
বাংলার গ্রামীণ লোকশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে ‘চারুকলা উৎসব’-এর আয়োজন করেছে মহিষাদলের বিশ্বকলা কেন্দ্র। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সর্বাধিনায়ক স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশচন্দ্র সামন্তের জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে চারুকলা উৎসবের আয়োজন করে বিশ্বকলা কেন্দ্র। গত ১১ বছর ধরে তারা চারুকলা উৎসব করছে। ১৫ ডিসেম্বর সতীশচন্দ্র সামন্তের জন্মদিন ছিল। এই দিনটি উৎসবের আকারে পালিত হয় হলদিয়া ও মহিষাদলে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পাশাপাশি ক্লাব গুলি তাঁর জন্মদিন উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করে। মহিষাদলের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিশ্বকলা কেন্দ্র এই দিনটি উদযাপন করে ভিন্ন ধারায়। সতীশবাবু আঞ্চলিক সংস্কৃতি বিকাশে গুরুত্ব দিতেন। মেদিনীপুরের সংস্কৃতি বিকাশে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। বিশ্বকলা কেন্দ্রও চারুকলা উৎসবের মাধ্যমে বাংলা ও মেদিনীপুরের সংস্কৃতি বিকাশে গুরুত্ব দিয়েছে। ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর দু›দিন ধরে আলপনা আঁকা, গয়নাবড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা আয়োজন করে।
এবার সতীশচন্দ্র সামন্তের ১২৫তম জন্মদিবস। বিশ্বকলা কেন্দ্রের উদ্যোগে মহিষাদলের রবীন্দ্র পাঠাগার ঘিরে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর শনিবার চারুকলা উৎসবের সূচনা হয়। ওইদিন দুই মেদিনীপুরের প্রায় ৬০জন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। গয়েশ্বরী গার্লস স্কুল রোড জুড়ে আলপনা আঁকা দেখতে ভিড় করেন শয়ে শয়ে মানুষ। ওইদিন বিকেলে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও তাৎক্ষণিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ছিল নজর কাড়া। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘বাংলা সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ বিপন্ন’।
রবিবার সকাল ৭টায় সতীশচন্দ্র সামন্তের জন্মভিটে গোপালপুরে তাঁর আবক্ষ মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিশ্বকলা কেন্দ্রের সদস্যরা। এর পর সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ছোটদের ও সর্বসাধারণের আঁকা প্রতিযোগিতা। বড়দের আঁকা প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল সতীশচন্দ্র সামন্ত অথবা মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী। এর পাশাপাশি রবীন্দ্র পাঠাগারের সামনে বাসস্টপে শুরু হয় গয়না বড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা। শীতের সকালের মিষ্টি রোদে বসে বিউলি ডাল দিয়ে নানা নকশার বড়ি তৈরি করে চমক দেন মহিলারা। সারা বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার জন্য অপেক্ষা করেন দুই মেদিনীপুরের মহিলারা। প্রায় ৫৫জন মহিলা যোগ দিয়েছিলেন এবার। এছাড়াও দিনভর স্কুল পড়ুয়া, অভিভাবিকা এবং শুভানুধ্যায়ীদের আবৃত্তি-কোলাজ, শ্রুতিনাটক, সংগীতানুষ্ঠান ও নৃত্যানুষ্ঠান মন ভরিয়ে দেয় দর্শকদের।
সংস্থার সম্পাদক বিশ্বনাথ গোস্বামী বলেন, বাংলার নিজস্ব ঘরানার আলপনা চর্চা বাড়াতে এবং গয়নাবড়ির সংস্কৃতি বাঁচাতেই চারুকলা উৎসব। মহিষাদলের গয়নাবড়ি জিআই স্বীকৃতি পেতে সবাইকে লড়াই করতে হবে। শুধু চারুকলা উৎসব নয়, বিশ্বকলা কেন্দ্র বছরভর নানা সামাজিক কাজ করে থাকে।
No comments