এবার সব পুরসভায় এলাকাভিত্তিক সম্পত্তিকর
এতদিন শুধু কলকাতা পুরসভার বাসিন্দারা যে সুবিধা ভোগ করেছেন, এবার তা পাবেন রাজ্যের সব পুরসভার নাগরিক। স্ব-মূল্যায়ন বা সেলফ অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে তাঁরা নিজেরাই সম্পত্তি কর নির্ধারণ করতে পারবেন…
এবার সব পুরসভায় এলাকাভিত্তিক সম্পত্তিকর
এতদিন শুধু কলকাতা পুরসভার বাসিন্দারা যে সুবিধা ভোগ করেছেন, এবার তা পাবেন রাজ্যের সব পুরসভার নাগরিক। স্ব-মূল্যায়ন বা সেলফ অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে তাঁরা নিজেরাই সম্পত্তি কর নির্ধারণ করতে পারবেন। অর্থাৎ, কলকাতা পুর এলাকায় বেশ কয়েকবছর আগে চালু হওয়া ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি রাজ্যের বাদবাকি পুরসভায়ও চালু হতে চলেছে শীঘ্রই। ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতিটি ঠিক কী? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সম্পত্তির অবস্থান ও প্রকৃতি, কোন এলাকা, কোন কাজে লাগানো হচ্ছে ইত্যাদি বেশ কয়েকটি মাপকাঠিতে বিবেচনা করে প্রতি বর্গফুট অনুযায়ী সম্পত্তি করের হার নির্ধারণ করার একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি এটি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সম্পত্তি করের সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট বা স্ব-মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন করদাতা নিজেই।
সোমবার বিধানসভায় ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সংশোধনী বিল’ এবং ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সংশোধনী বিল’ পাশ হয়। সংশোধনী নিয়ে বলতে গিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বাম আমলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর নির্ধারণের কাজ চালাতেন আধিকারিকরা। সেই সময় বাম সরকার ইনসপেক্টর-রাজে ভরসা রাখত। কিন্তু আমাদের সরকার বিশ্বাস করে, সবার উপর মানুষ সত্য। তাই সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে এই সংশোধনী আনা হচ্ছে, যা রাজ্যের সব পুরসভা এলাকায় ইউনিট এরিয়া অ্যাসসমেন্ট চালু করার প্রথম ধাপ।’ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ ভ্যালুয়েশন বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট পুরসভা প্রতিটি স্কিম সংক্রান্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার পর স্ব-মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন করদাতারা। নাগরিকদের জমা দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক বছরের মধ্যে সম্পত্তি করের পরিমাণ চূড়ান্ত করবে পুরসভাগুলি। এক্ষেত্রে করদাতারা কোনও কারচুপি করে ধরা পড়লে মোটা টাকা জরিমানাও গুনতে হবে। এমনকী নির্ধারিত সম্পত্তি করের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। অনলাইনে বা নির্ধারিত ফর্মে সেল্ফ অ্যাসেসমেন্টের তথ্য জমা দেওয়ার সুযোগ থাকবে প্রতিটি পুরসভায়।
তবে কয়েকটি পুরসভায় সম্পত্তি কর মূল্যায়নের (ভ্যালুয়েশন) কাজ পাঁচ বছর ধরে হয়নি। সেসব ক্ষেত্রে নয়া কর নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত আগের তুলনায় ১০ শতাংশ সম্পত্তি কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সমস্ত এলাকায় ভ্যালুয়েশনের কাজ শেষ হলে যদি দেখা যায় সম্পত্তি করের হার আরও বেড়ে গিয়েছে, তাহলে তা কমানোর আইনি সংস্থানও থাকছে বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক।
মন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘সম্পত্তি কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি পুরসভায়। বর্তমানে বাংলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নগরোন্নয়নের গতিও নজরকাড়া। তাই সব পুরসভার নাগরিককেই আমরা এই সুবিধা দিতে উদ্যোগী।’
No comments