মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ছট পুজো কমিটির তরফ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিলেন
বন্দর শহর হলদিয়ায় এখন নতুন পার্বন ছটপুজো। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বাঙালিদের জগদ্ধাত্রী পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অবাঙালিদের ছটপুজোর অনুষ্ঠান। ছটপুজো ঘিরে রীতিম…
মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ছট পুজো কমিটির তরফ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিলেন
বন্দর শহর হলদিয়ায় এখন নতুন পার্বন ছটপুজো। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বাঙালিদের জগদ্ধাত্রী পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অবাঙালিদের ছটপুজোর অনুষ্ঠান। ছটপুজো ঘিরে রীতিমতো উৎসবে মেতেছে শিল্পশহরের বাঙালিরাও। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে সকলের অজান্তেই জুড়ে গিয়েছে নয়া পার্বন ছটপুজো। গত দেড় দশকে হলদিয়ায় ছটপুজোর প্রচলন বেড়েছে কয়েকগুণ। পুরসভার সহযোগিতা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির উদ্যোগে ছটপুজোর ব্রতীদের জন্য হলদিয়ায় বড় আয়োজন করা হয়। এবছর হলদিয়া পুর এলাকায় দুর্গাচক আইটিআই মাঠ, মঞ্জুশ্রী মোড় সংলগ্ন এইচএফসি মাঠ, টাউনশিপ নদীঘাট এবং ক্ষুদিরামনগরে ছটপুজোর আয়োজন করা হয়েছে। দুর্গাচকের শ্রী শ্রী সঙ্কটমোচন সেবা কেন্দ্রের উদ্যোগে ছটপুজো মহা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে দুর্গাচক আইটিআই ময়দানে। এটিই হলদিয়ার সবচেয়ে বড় ছটপুজোর উৎসব হিসেবে পরিচিত। তিন চার দিন আগে থেকেই হলদিয়ায় পুরসভা এবং সঙ্কটমোচন কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে জোরকদমে ছটপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আইটিআই ময়দানে বিশাল মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ব্রতীদের জন্য। গত ৫ নভেম্বর কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়েছে এবছরের ছটপুজো। ছটপুজোর এক পুরোহিত বলেন, মূলত সূর্য ষষ্ঠী ব্রত হওয়ার দরুণ একে ছট বলা হয়। ষষ্ঠী দেবীর উপাসনা থেকেই ছট মা বা ছটী মাঈ নামটি এসেছে। অস্তগামী সূর্য ও উদিত সূর্যকে পুজো করা হয় এই ধর্মীয় উত্সবে। বৃহস্পতিবার আইটিআই সংলগ্ন পুরসভার ইকো পার্কের পুকুরে ব্রতীদের ভিড় উপচে পড়ে। ছটি মাঈয়ার গান গেয়ে প্রার্থনা ও পুজো পাঠের পর জলে নেমে অস্তগামী সূর্যকে প্রণাম সারেন মহিলা ও পুরুষ ব্রতীরা। এদিন ছটপুজোর মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা 'জয় জয় ছট্টি মাঈয়া' গান আবহ সঙ্গীতের মতো সারাক্ষণ বেজেছে মাইকে। আইটিআই ময়দানে সূর্যাস্তের আগে ছটপুজো মহা উৎসবের উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর, হলদিয়ার মহকুমাশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়, দুই বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী ও সুকুমার দে, হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার মনোরঞ্জন ঘোষ, এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী এবং পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলাররা। সংস্থার সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, বাঙালির উৎসব মরসুমের মধ্যে অবাঙালিদের এই উৎসব সবাইকে একসূত্রে গেঁথেছে। হলদিয়ায় অবাঙালির সংখ্যা কর্মসূত্রে অনেক বেড়েছে। ছটপুজোর আয়োজকদের মধ্যে বাঙালির সংখ্যাই বেশি। সংস্থার সম্পাদক অজয় সিং বলেন, ছট উৎসব উপলক্ষে হলদিয়ার পুর প্রশাসন দারুণ সহযোগিতা করেছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বন্যাত্রাণের জন্য ছটপুজো কমিটি ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দিয়েছে। এছাড়া কয়েকশো পুরুষ ও মহিলাকে শীতবস্ত্র এবং হেলমেট তুলে দেওয়া হয়েছে। ছটপুজো উপলক্ষে পুরসভার পক্ষ থেকে আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছে আইটিআই ময়দান ও ইকো পার্ক। এছাড়াও হলদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জল এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহিলাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ছটপুজোর ব্রতী রিনাদেবী পাল, মঙ্গলজিৎ পাণ্ডে, নওলকিশোর মিশ্র বলেন, পুরসভা এবং সঙ্কটমোচন সেবা কেন্দ্রের আয়োজন খুবই ভাল। তাঁরা বলেন, চারদিনের এই ব্রতের প্রথম দিনে ব্রতী নিরামিষ খেয়ে নহায়-খায় পালন করেছে। পরদিন থেকে ব্রতী দিনভর নির্জলা উপবাস পালনের পর সন্ধ্যায় পুজোর শেষে ক্ষীরের ভোগ খরনা খান। তৃতীয় দিন ও চতুর্থ দিনে সূর্যকে অর্ঘ্যপ্রদানের পর উপবাস ভঙ্গ করেন।
হলদিয়া পৌরসভার উদ্যোগে শ্রী শ্রী শংকরমোচন সেবা কেন্দ্র পক্ষ থেকে ছট পুজো হলদিয়া আইটিআই মাঠে। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার সময আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনে উপস্থিত হলদিয়া উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর,হলদিয়া মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়, মহিষাদলের বিধায় তিলক চক্রবর্তী, নন্দকুমারের বিধায়ক নন্দকুমার মিশ্র,দুর্গাচক থানার ওসি গোপাল পাঠক, মিলন মন্ডল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সংকট মোচন কমিটির উদ্যোগে আজ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান্ত হবে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দিলেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময়করের হাতে জ্যোতির্ময় কর হাতে।
No comments