অনলাইন প্রতারণার খপ্পরে পড়ে এবার ২৫ লক্ষ টাকা খোয়ালেন হলদিয়া টাউনশিপের এক বাসিন্দা। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার নেশায় অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা বিনিয়োগ করতে গিয়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। হোয়াটসঅ্যাপে আসা লিঙ্কে ক্লিক করে তিনি …
অনলাইন প্রতারণার খপ্পরে পড়ে এবার ২৫ লক্ষ টাকা খোয়ালেন হলদিয়া টাউনশিপের এক বাসিন্দা। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার নেশায় অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা বিনিয়োগ করতে গিয়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। হোয়াটসঅ্যাপে আসা লিঙ্কে ক্লিক করে তিনি প্রতারকদের চক্করে পড়েন বলে অভিযোগ। এরপরই অনলাইন ট্রেডিংয়ের নির্দিষ্ট ছক ধরে এগতে গিয়ে মাত্র সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাঁর দু'টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পুরো ফাঁকা হয়ে গিয়েছে বলে তিনি হলদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যে অনলাইন ট্রেডিং সংস্থা তাঁকে শেয়ার বাজারে লক্ষ লক্ষ টাকা ঢালতে প্রলোভন দেখিয়েছিল, তারা টাকা হাতিয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। ওই ব্যক্তি দাবি, আরও টাকা না বিনিয়োগ করলে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। হলদিয়ার শহর ও লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় ভোট এবং আইপিএল মরসুমে অনলাইন ট্রেডিংয়ের নামে জুয়ার রমরমা বাজার ছিল। ওই সময় সাধারণ বেকার যুবকরা টাকা ধার নিয়ে অনলাইন জুয়ায় মেতে ওঠে। কারখানার শ্রমিক কর্মচারী, ব্যবসায়ী কেউ-ই বাদ ছিলেন না। এমনকী শিক্ষকদের একাংশও অনলাইন জুয়ায় রাশি রাশি টাকা ঢেলেছেন বলে অভিযোগ।
পুলিস জানিয়েছে, হলদিয়ার টাউনশিপের ব্রজনাথচক এলাকার অভিনন্দন অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা বিশ্বনাথ সামন্ত অনলাইন ট্রেডিংয়ে ২৫ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি পেশায় শিক্ষক বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পান প্রথমে। তারপর তাঁর কাছে শেয়ার কেনাবেচার( আইপিও বা ইনিসিয়াল পাবলিক অফারিং) জন্য অনুরোধ জানিয়ে ফোন আসে। একটি সংস্থার ফান্ড ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে পঙ্কজ টিবরেওয়াল নাম নিয়ে এক মহিলা ফোন করেন। এরপর লিঙ্ক পাঠিয়ে তাঁকে সংস্থায় যুক্ত করে বিভিন্ন সংস্থার আইপিও কিনতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। ওই আইপিওগুলিতে তাঁকে সাবস্ক্রাইব করতে বলা হয়। এরপরই তাঁর পিএনবি ও এসবিআইয়ের দু'টি রাষ্ট্রায়ত্ত অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ লক্ষ টাকা কর্পূরের মতো উবে যায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিসের সাইবার ক্রাইম সেল। সপ্তাহখানেক আগে তিনটি পৃথক ঘটনায় সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়ে প্রায় সাড়ে ১১লক্ষ টাকা খুইয়েছেন হলদিয়ার সুতাহাটা ও ভবানীপুর থানা এলাকার তিন যুবক।
চলতি মাসের গোড়াতেই অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা বিনিয়োগ করতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে ২২ লক্ষের বেশি টাকা খুইয়েছেন হলদিয়ার দুর্গাচক টাউনের এক তরুণী। গত এপ্রিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে অনলাইন ট্রেডিংয়ে টাকা ঢালতে গিয়ে প্রায় ৪৫ লক্ষ খুইয়েছেন ভবানীপুর থানা এলাকার বাবা এবং মেয়ে। সবমিলিয়ে হলদিয়ায় গত দেড়মাসে অনলাইন ট্রেডিংয়ে কোটি টাকার বেশি খুইয়েছেন তরুণ তরুণীরা। আবার টাকা খুইয়েও অনেকে থানায় অভিযোগ পর্যন্ত করেননি। এদিকে, দুর্গাচকে মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার পর এক যুবকের অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেড় লক্ষাধিক টাকা খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। তিনি মোবাইল হারানোর পর ব্যাঙ্কে ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে দেখেন তাঁর অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। দুর্গাচক থানার পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুপ কুমার মাইতি নামে বাসুদেবপুরের এক বাসিন্দার মোবাইল হারানোর পর অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষাধিক টাকা গায়পব হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর মোবাইলের ফোন পে ব্যবহার করে টাকা হাতানো হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজয় শাখাওয়াত এবং রচনা রাজেন্দ্র পাওয়ারি নামে দু'জনের অ্যাকাউন্টে লক্ষাধিক টাকা ট্রানজাকশান হয়েছে বলে পুলিসকে ব্যাঙ্কের নথি দিয়েছেন অনুপ।
No comments