সমস্যা মিটতেই সোমবার এসডিওকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টার দীর্ঘদিনের সমস্যা মিটতেই সোমবার এসডিওকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টার দিলেন হলদিয়া পুরসভার বাসিন্দারা। হলদিয়ার প্রাক্তন পুর প্রধানের ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে পথবাতির সমস্যায় ভুগছিলেন বাসিন…
সমস্যা মিটতেই সোমবার এসডিওকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টার
দীর্ঘদিনের সমস্যা মিটতেই সোমবার এসডিওকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টার দিলেন হলদিয়া পুরসভার বাসিন্দারা। হলদিয়ার প্রাক্তন পুর প্রধানের ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে পথবাতির সমস্যায় ভুগছিলেন বাসিন্দারা। কয়েকদিন আগে তাঁরা সরাসরি পুর প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্রিট লাইটের ছবি পাঠিয়ে সমস্যার কথা জানান। এরপরই ম্যাজিকের মতো বদলে যায় চিত্র। গত শুক্রবার পুরসভার বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজন ও ঠিকাদার গিয়ে ল্যাম্প পোস্টের টুল বক্স, লাইট, কেবল লাইন সারিয়ে দিতেই ঝলমল করে ওঠে গোটা এলাকা। তাই খুশি হয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাতিবেড়িয়া মধ্যমপল্লির বাসিন্দারা ‹এসডিওকে ধন্যবাদ› লেখা পোস্টার লাগালেন ল্যাম্প পোস্টে। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পুর পরিষেবার এই ছবি ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর কার্যালয় সংলগ্ন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলার ছিলেন শ্যামল আদক। ২০১৭ সাল থেকে তিনি পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন কয়েক বছর। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। অভিযোগ, তাঁর দল বদলের পর থেকে ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ঠিকমতো পরিষেবা পেতেন না।
২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেন, ২০-২৫টি স্ট্রিট লাইট উমপুনের পর থেকেই খারাপ ছিল। কোথাও আলো জ্বলত না, কোথাও আলো দপদপ করত। জনবহুল এলাকায় অন্ধকারে চলাচলে সমস্যা হতো। বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বাড়ায় ভয়ে ছিলেন বাসিন্দারা। ছোট ছেলেমেয়েরা রাতে টিউশন পড়ে ফিরতে ভয় পেত। পুরসভায় বার বার আবেদন করেও সমাধান মেলেনি। শেষমেশ তাঁরা সরাসরি পুর প্রশাসককে হোয়াটসঅ্যাপে জানাতেই দ্রুত কাজ হয়েছে। এরপরই নতুন করে সারানো পোস্টগুলিতে পোস্টার পড়ে। হাতিবেড়িয়া মধ্যমপল্লির বাসিন্দা ও ব্রাইট স্টার ক্লাবের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‹আলোটি দীর্ঘদিন জ্বলছিল না। অসংখ্য ধন্যবাদ এসডিও স্যার।› পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, পোস্টার পড়ার বিষয়টি অভিনব ব্যাপার। এটি আমাদের টিম ওয়ার্কের কাজ। এতে পুরকর্মীরা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ পাবেন। যেহেতু এখন বোর্ড নেই, তাই পুর এলাকায় পরিষেবা দিতে দপ্তর ভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ড অফিসে গেলেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর পেতে পারেন। ওই গ্রুপের মাধ্যমে অভিযোগ করলেই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।
পুর প্রশাসক বলেন, প্রতি সপ্তাহে শনি ও রবিবার বিভিন্ন দপ্তরের পুরকর্মীদের গড়ে ৪-৫টি ওয়ার্ড ভিজিট করি। সরাসরি জনসংযোগের জন্য নিজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দিয়েছি। প্রতিদিন অনেকগুলি করে এধরনের অভিযোগ আসে এবং দপ্তরগুলিতে সেগুলি পাঠিয়ে দিই। দ্রুত কাজের জন্য এই পদ্ধতি কার্যকরী। তবে পুর পরিষেবা নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের হলদিয়ার নেতা, প্রাক্তন দুই চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল, সুধাংশু মণ্ডল একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও পুর প্রশাসকের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। যার ফলে মাস দেড়েক আগেই রাজ্যের এক বৈঠকে হলদিয়ার পুর প্রশাসককে শোকজ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বাড়তি নজর দেন হলদিয়া পুরসভার কাজকর্মে। দেড়মাসের মধ্যে তিনবার তিনি হলদিয়ায় সারপ্রাইজ ভিজিট করেন। শনিবারই তিনি পুরসভার ৫টি ওয়ার্ড ঘুরে দেখার সময় পুর পরিষেবা নিয়ে কথাবার্তা বলেন। বিশেষ করে জলনিকাশি, স্ট্রিট লাইট, রাস্তাঘাট, পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে জানতে চান জেলাশাসক। জেলাশাসক বলেন, পুর প্রশাসকের নেতৃত্বে খুবই ভালো কাজ হচ্ছে। সাধারণ মানুষের থেকে যাচাই করে দেখেছি। পুরসভার জমি দখল রুখতে এবং সবুজায়নে দু’টি বাগান তৈরি করছে, যা আগামীতে মডেল হবে। গ্রামীণ এলাকার ১০০ দিনের কাজের লোককে একাজে তারা নিয়োগ করেছে। এটা দারুণ পদক্ষেপ।
No comments