হলদিয়ায় প্রতিবন্ধীদের জন্য অভিনব রথযাত্রা প্রতিবন্ধী পড়ুয়া ও মানুষজনের জন্য অভিনব রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করেছে হলদিয়ার নরনারায়ণ সেবা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। ২১ জুলাই রবিবার শ্রাবণী পূর্ণিমায় হলদিয়ার বাড়বাসুদেবপুর গ্রামে গৌরনিতাই র…
হলদিয়ায় প্রতিবন্ধীদের জন্য অভিনব রথযাত্রা
প্রতিবন্ধী পড়ুয়া ও মানুষজনের জন্য অভিনব রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করেছে হলদিয়ার নরনারায়ণ সেবা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। ২১ জুলাই রবিবার শ্রাবণী পূর্ণিমায় হলদিয়ার বাড়বাসুদেবপুর গ্রামে গৌরনিতাই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হল। গুরু পূর্ণিমার রথে আনন্দে মেতে ওঠেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। হলদিয়া, সুতাহাটা, মহিষাদল থেকে প্রতিবন্ধীরা শামিল হয় রথযাত্রায়। তাঁরাই ওই রথের মূল চালিকাশক্তি। প্রতিবন্ধীরা রথ টেনে নিয়ে যায় মাসির বাড়িতে। শুধু রথযাত্রায় আনন্দ উদযাপন নয়, উৎসব উপলক্ষ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্য অভিনব জব ফেয়ার। তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয় ওই ট্রাস্ট। একইসঙ্গে কৃত্রিম অঙ্গদানের জন্য প্রতিবন্ধীদের নাম নথিভুক্তকরণ ও পরীক্ষা করা হবে। জনসাধারণের জন্য চোখের পরীক্ষা এবং চশমা দেওয়া হবে বিনামূল্যে। ট্রাস্টের অন্যতম কর্মকর্তা পান্নালাল দাস তিন দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানো এবং স্বনির্ভর করার কাজ করছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রতিবন্ধী সংগঠনের দায়িত্বেও রয়েছেন পান্নালাল। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা উৎসবে প্রায়ই উপেক্ষিত থাকে। তাই স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ওদের জন্যই স্পেশাল রথের আয়োজন করেছি। বাড়বাসুদেবপুরের দাস পরিবার এক্ষেত্রে দারুণ সহযোগিতা করেছে। রথে একাধিক সামাজিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রবিবার রথের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে প্রতিবন্ধীদের জন্য জব ফেয়ার। একটি নামী সংস্থা যারা প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সংস্থায় কাজের সুযোগ করে দেয়, তারা নাম নথিভুক্ত করে এবং প্রাথমিক ইন্টারভিউ নেয়। জব ফেয়ারে ২০ জনকে কাজের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে। এছাড়া হাত বা পা নেই এমন ৪০ জন প্রতিবন্ধী মহিলা বা পুরুষকে কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চোখের পরীক্ষা করে হলদিয়ার রামকৃষ্ণ সারদা মিশন আশ্রমের নেত্রালয় হাসপাতাল।
নরনারায়ণ সেবা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট জানিয়েছে, বাড়বাসুদেবপুরের পূর্ণিমার পিতলের রথ তৈরি হয়েছে পুরীর রথের ধ্বজা, কাঠ, তিরুপতির পিতলের কারুকাজের মতো বিভিন্ন তীর্থস্থানের সামগ্রী দিয়ে। রথের দেবতা হলেন বৃন্দাবনের ব্রজগোপাল ও নবদ্বীপের গৌরনিতাই। ট্রাস্টের বৃন্দাবনেও একটি নতুন শাখা তৈরি হয়েছে। সেখানে ব্রজগোপাল আশ্রমে এবছর থেকে ১০ দিনের রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছে। বৃন্দাবনের সেই রথযাত্রা উৎসব শেষ হচ্ছে হলদিয়ায় পূর্ণিমার রথে। বাড়বাসুদেবপুরের দাস পরিবার প্রাঙ্গণ থেকে পিতলের ২০ ফুট উঁচু রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এক কিলোমিটার দূরে অম্বরীশ দাসের বাড়ি। ব্রজগোপাল রথে চেপে পৌঁছবেন মাসির বাড়ি। বলরাম পদ্মাবতী স্মৃতিচারণে গৌরনিতাই রথযাত্রার অনুষ্ঠান হবে দু’দিন ধরে। রথ পরিক্রমায় থাকবে ইসকনের ৪০জনের কীর্তন ও নৃত্যগীতের দল। বৃন্দাবন থেকে আসছেন সাধুরা। রথ উপলক্ষ্যে সোমবার প্রায় দু’হাজার মানুষকে ভোগপ্রসাদ বিতরণ করা হবে।
No comments