প্রৌঢ়ার গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশরাস্তার পাস থেকে এক প্রৌঢ়ার গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত কাল রাত্রে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ ব্লকের হীরাসাগর গ্রামে । বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ পটাশপ…
প্রৌঢ়ার গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ
রাস্তার পাস থেকে এক প্রৌঢ়ার গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত কাল রাত্রে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ ব্লকের হীরাসাগর গ্রামে । বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ পটাশপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মৃত বৃদ্ধা পেশায় সবজি ব্যবসায়ী। সবজি ব্যবসায়ী ওই মহিলা ব্যবসা সেরে রাতে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীরা তার টাকা পয়সা ও গায়ে থাকা সোনার গয়না ছিনতাই করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের আনুমান ছিনতাইর সময় চিনে ফেলায় ওই মহিলার গলা কেটে তাকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মৃত প্রৌঢ়া আরতি জানার বয়স প্রায় ৬০, বাড়ি কাটাপুকুরিয়ায়। ঘটনার খবর জানাজানি হতে এলাকার মানুষ ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পটাশপুর থানার কাঁটাপুকুরিয়া এলাকার সব্জি ব্যবসায়ী এক বিধবা বৃদ্ধা নৃশংসভাবে খুন হলেন। বুধবার সাতসকালে পার্শ্ববর্তী ব্রজলালপুর মৌজায় রাস্তার পাশে গলাকাটা অবস্থায় ওই বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতার নাম আরতি জানা (৬২)। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ব্রজলালপুরে ঢালাই রাস্তা সংলগ্ন ঝোপের পাশে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তাঁর গলা কাটা ছিল। ইট দিয়ে মাথা ও মুখ থেঁতলে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়। এমনকী মুখে মাটি ঢুকিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। কান থেকে ছিঁড়ে নেওয়া হয় সোনার দুল। হাত থেকে বালা খুলে নেওয়া হয়। টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। কিছু সব্জি ভরা অবস্থায় তাঁর ব্যাগটি পাশেই পড়েছিল। সাতসকালে বৃদ্ধার ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন স্থানীয় মানুষজন। এলাকার প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় জমান।
খবর পেয়ে পুলিস দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে পুলিসের ধারণা, ওই বৃদ্ধা রাস্তায় বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় এবং দুষ্কৃতীদের মুখ দেখে চিনে ফেলায় তাঁকে খুন করা হয়। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, সেটাও জানার চেষ্টা করছে পুলিস। বৃদ্ধার ছেলে কমল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে পুলিসকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন।
বৃদ্ধার স্বামী গুণধর জানা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলের কাছেই থাকতেন আরতিদেবী। পটাশপুরের অমর্ষি বাজারে সব্জি ব্যবসা করতেন তিনি। অমর্ষি গার্লস হাইস্কুলের পাশ দিয়ে হীরাসাগর হয়ে কাঁটাপুকুরিয়া যাওয়ার রাস্তা রয়েছে। প্রতিদিন সকালে টোটোয় চেপে ওই রাস্তা ধরে অমর্ষিতে ব্যবসা করতে যেতেন এবং দুপুরে ফিরতেন। ফের বিকেলে একই রাস্তায় বাজারে যেতেন। তবে রাতে অমর্ষি থেকে সিংদামোড় হয়ে কাঁটাপুকুরিয়ায় বাড়িতে ফিরতেন। ভাই গণেশ বেরার দোকান রয়েছে সিংদামোড়ে। ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরা ছিল তাঁর প্রতিদিনের রুটিন। তবে মঙ্গলবার রাতে সিংদামোড় হয়ে বাড়ি ফেরেননি আরতিদেবী। যে পথে বাজারে যান, সে পথেই ফিরছিলেন। নির্জন, শুনশান সেই রাস্তায় দুষ্কৃতীরা তাঁর পথ আটকে ছিনতাই এবং হামলা চালায়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। এদিকে রাত বেড়ে গেলেও আরতিদেবী বাড়ি না ফেরায় ছেলে ও ভাই খোঁজখবর শুরু করেন। গভীর রাত পর্যন্ত খুঁজলেও তাঁরা আরতিদেবীর সন্ধান পাননি। প্রতিদিন একই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরলেও কেন মঙ্গলবার তিনি অন্য রাস্তা ধরলেন, সেটাই পুলিসকে ভাবাচ্ছে।
কমল বলেন, কী কারণে মা’কে এমনভাবে খুন হতে হল বুঝতে পারছি না। এর সঙ্গে যারা যুক্ত, পুলিস তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। স্থানীয় বাসিন্দা, সংশ্লিষ্ট ব্রজলালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান নির্মল সামন্ত বলেন, বৃদ্ধার কোনও শত্রু ছিল না বলে আমরা জানি। তাঁকে কারা এভাবে নৃশংসভাবে খুন করল, সেটাই আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। পুলিসকে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি। এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা খুনের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করছি। তবে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
No comments