দিঘাতে ৫২৪ টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
দীঘার জগন্নাথধাম নির্মাণ প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে দীঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল প্রশাসন। সবুজ বাঁচানোর লক্ষ্যে এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্…
দিঘাতে ৫২৪ টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
দীঘার জগন্নাথধাম নির্মাণ প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে দীঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল প্রশাসন। সবুজ বাঁচানোর লক্ষ্যে এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে খুশি পরিবেশবিদ সহ বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, পুজোর পরই জগন্নাথধাম উদ্বোধন হওয়ার কথা। মন্দিরের দরজা খুলে গেলে দীঘায় ব্যাপক ভিড় বাড়বে। রাস্তায় পর্যটক, পুণ্যার্থী থেকে সাধারণ মানুষের জনসমাগম বাড়বে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে পুরনো জগন্নাথ মন্দির অর্থাৎ ‘মাসির বাড়ি’ পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার অঙ্গ হিসেবে জাতীয় সড়কে দীঘা থানা থেকে স্টেশন পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশ চওড়া করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে পূর্তদপ্তরকে এব্যাপারে ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য দু’পাশে ৫২৪টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয় পূর্তদপ্তর। তার মধ্যে ছিল ৩০-৪০ বছরের পুরনো বট, আকাশমণি, ছাতিম, দেবদারু, ঝাউ, মেহগনি, বটলব্রাশ প্রভৃতি গাছ। প্রতিটি গাছই পূর্ণবয়স্ক।
পূর্তদপ্তরের আবেদনের ভিত্তিতে গাছ কাটার ছাড়পত্র দেয় বনদপ্তর। গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর সেইসব গাছের গায়ে হলুদ রঙের পোঁচ পড়ে এবং নম্বরও দেওয়া হয়। তবে গাছ কাটার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ঘিরে সর্বত্র বিতর্ক শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যেখানে দীঘা সহ সর্বত্র পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে গাছ লাগানোর উপর বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে, সেখানে গাছ কাটলে পরিবেশের উপর যথেষ্ট প্রভাব পড়বে এবং পাখিরা ঠাঁইহারা হবে। এমনই নানা বিষয়কে সামনে রেখে সমালোচনায় মুখর হন পরিবেশবিদরা। শেষ পর্যন্ত সবদিক বিবেচনা করে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। পূর্তদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত রাস্তার দু’পাশে কালো পিচের অংশ দু’মিটার করে চওড়া করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জন্য কোনও গাছ কাটা হবে না। গাছ বাঁচাতে রাস্তার দু’পাশে পেভার ব্লক দিয়ে মুড়েই ফুটপাত করা হবে।
এবিষয়ে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা মহকুমা শাসক সৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কোনও গাছ কাটা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য আগের ডিপিআর বাতিল করা হয়েছে। পূর্তদপ্তরকে নতুন করে ডিপিআর তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা ডিপিআর তৈরি করেছে। তিনি এও বলেন, গাছ তো কাটা হবে না, উপরন্তু দীঘার দু’টি মৌজায় এলাকায় ১০৫৬টি কাজুবাদাম সহ অন্যান্য গাছ লাগানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। চারা রোপণের জন্য একটি ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে।
পূর্তদপ্তরের(সড়ক) কাঁথি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মিঠুন রাউল বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ বাঁচিয়ে রাস্তা সম্প্রসারণের প্রস্তাব আমাদের কাছে আসে। সেইমতোই রাস্তার কাজ হবে বলে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বর্তমানে কাজ শুরু করার প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। চলতি সপ্তাহেই কাজ শুরু হবে।
No comments