Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

দলের প্রার্থীর দিকেই আঙুল তুলছেন হলদিয়ার ঘাসফুল নেতারা

দলের প্রার্থীর দিকেই আঙুল তুলছেন হলদিয়ার ঘাসফুল নেতারা
ভোটে হারের পর থেকে হলদিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কার্যত কপূরের মতো উবে গিয়েছেন।প্রকাশ্যে কারও দেখাই মিলছে না। এখন আড়ালে থেকে লোকসভার নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কাটাছেঁড়ার সময় তাঁর…

 



দলের প্রার্থীর দিকেই আঙুল তুলছেন হলদিয়ার ঘাসফুল নেতারা


ভোটে হারের পর থেকে হলদিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কার্যত কপূরের মতো উবে গিয়েছেন।

প্রকাশ্যে কারও দেখাই মিলছে না। এখন আড়ালে থেকে লোকসভার নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কাটাছেঁড়ার সময় তাঁরা পরস্পরকে দোষারোপ শুরু করেছেন। কে দিনে ঘাসফুল, রাতে পদ্মফুলে মধু খেয়েছেন, সেই নিয়ে জোর গুঞ্জন শিল্পশহরের তৃণমূল শিবিরে। নেতাদের সন্দেহের তির ছোঁড়াছুঁড়ি চলছে। তৃণমূলের প্রবীণ নেতারা যুব তৃণমূল নেতার 'চূড়ান্ত ঔদ্ধত্য' নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করছেন। মাদার তৃণমূলের নেতা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাকে 'বহিরাগত' তকমা দিয়ে উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। হলদিয়া পুর এলাকায় তৃণমূল বিজেপির চেয়ে ১৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে। ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকে শহরের তৃণমূল নেতারা নিজেরাই একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। হলদিয়ায় তৃণমূলের চিরাচবিত গোষ্ঠীকোন্দলের ছবি আরও প্রকট হয়েছে। হলদিয়ার একাধিক নেতা, প্রাক্তন কাউন্সিলারের সঙ্গে 'কাঁথি'র গোপন যোগসাজশ নিয়ে ভোটের আগে থেকেই চর্চা চলছে। সেই সূত্রে এবার শিল্পাঞ্চলে ভোটে পিছিয়ে থাকার ক্ষেত্রে তৃণমূলের অন্দরে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বটিও বড় হয়ে উঠেছে।

হলদিয়া পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডের মাত্র ৬টিতে এবার লিড পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২, ৭, ১২, ১৬, ১৭ এবং ২৭ নম্বর এই ওয়ার্ডগুলিতে তৃণমূলের লিড হয়েছে। কিন্তু বাকি ২৩ ওয়ার্ডে লিড রয়েছে বিজেপির। পুর এলাকায় ১৪ হাজার ৮২টি ভোটের লিড রয়েছে বিজেপির। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের

তুলনায় এবার পুর এলাকায় বিজেপির লিড সামান্য কমেছে। ওই সময় সাড়ে ১৪ হাজার লিড ছিল পদ্ম শিবিরের। তৃণমূল সেবার ৩টি ওয়ার্ডে লিড পেয়েছিল, এবার তা বেড়ে ৬টি হয়েছে। হারের মাঝে এটুকুই তৃণমূলের সান্ত্বনা। শহর তৃণমূলের এক নেতা বলেন, পুর এলাকায় ৭ শতাংশের মতো সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। যে ওয়ার্ডে সংখ্যালঘু ভোট বেশি সেখানেই একমাত্র তৃণমূল লিড পেয়েছে। এতে কোনও নেতার কৃতিত্ব নেই। কিন্তু উচ্চ নেতৃত্বের কাছে হারের লজ্জা ঢাকতে 'লিড দিয়েছি' বলে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। তিনি স্বীকার করেছেন, আমাদের মধ্যে কোনও সমন্বয় ছিল না। ভোটের সময় কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করেনি। সিংহভাগ নেতাই লোক দেখানো মিটিং মিছিল

করেছে। এমনকী দেবাংশু ভট্টাচার্য প্রার্থী

হওয়ায় শুরুতে শহর তৃণমূলের একাংশ

প্রচারে গা লাগাতে চায়নি।

লোকসভা নির্বাচনে হলদিয়া নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। প্রচারের শুরুতেই তাই হলদিয়াকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে বন্দর শহরে এসে তমলুক লোকসভার নেতাদের নিয়ে মিটিং করেন সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মিটিং করে হলদিয়া ১০জন নেতাকে মাইক্রো পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেন। ২৯টি ওয়ার্ডের নির্বাচনী দায়িত্ব তাঁদের উপর ছিল। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে

হলদিয়া শহরে এই প্রথম নির্বাচনী জনসভা করেন। কিন্তু এত করেও শেষরক্ষা হয়নি। হলদিয়ায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শহর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিলন মণ্ডলের নিজের বুথে তৃণমূল হেরেছে। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডল। ওই ওয়ার্ডে বিজেপির লিড ১২৪৫ টি ভোট। তৃণমূলের হলদিয়া পুর এলাকার এক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, প্রার্থীর তো আমাদের সঙ্গে কথা বলারই সময় ছিল না। হলদিয়ার তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠীকোন্দল ভালভাবে নেয় নি শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক মহল এবং সাধারণ মানুষ। মানুষের বক্তব্য, হলদিয়ায় তৃণমূলের নেতা কে, কাকে ভোট দেব? রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, শিল্পাঞ্চলে যে ১৮-২০ হাজার শ্রমিক পরিবার বসবাস করেন, নানান ক্ষোভের কারণে তাদের সিংহভাগ ভোট তৃণমূল পায়নি। তাছাড়া, পোর্টালের মাধ্যমে কারখানায় কাজ দিতে গিয়ে স্থানীয়রা বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ। সেইসঙ্গে পুরভোট না হওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে পুরসভার সাধারণ মানুষের মধ্যে। হলদিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বুক সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি, দু'মাস ধরে খেটেছি। কিন্তু নির্বাচনী কমিটি তৈরির সময় কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। হারের পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।

No comments