Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পরিষেবা নেই, শুধু টাকা খাওয়া!’ প্রশাসনিক সভায়-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ মমতা

পুলিশ এবং অফিসারদের মধ্যে একটা গ্রুপ তৈরি করে নিয়েছে। যেখানে সরকারি জায়গা দেখছেন সেখানেই  বসিয়ে দিচ্ছে।মিউনিসিপ্যালিটি, মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন প্রতিনিধি দের প্রশাসনিক সভায় এমনি মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপ…

 




পুলিশ এবং অফিসারদের মধ্যে একটা গ্রুপ তৈরি করে নিয়েছে। যেখানে সরকারি জায়গা দেখছেন সেখানেই  বসিয়ে দিচ্ছে।মিউনিসিপ্যালিটি, মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন প্রতিনিধি দের প্রশাসনিক সভায় এমনি মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


‘পরিষেবা নেই, শুধু টাকা খাওয়া!’ প্রশাসনিক সভায়-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ মমতা

বিস্ফোরক অগ্নিকন্যা। ১৩ বছরের শাসনপর্বে দলের নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কদের সমালোচনার এমন ‘বিধ্বংসী’ মুডে বাংলার প্রশাসককে দেখা যায়নি। নাগরিক পরিষেবা নিয়ে বাংলার শহুরে এলাকায় যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে, তা উপলব্ধি করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝেছেন, দলের বিধায়ক-মন্ত্রী-পুরসভার চেয়ারম্যান-কাউন্সিলারদের একাংশের অনৈতিক কাজকর্মই সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বৃদ্ধির ‘নেপথ্য কারণ’। আর তাই সোমবারের বৈঠকে ঘটেছে বিস্ফোরণ। তবে নিশানায় শুধু জনপ্রতিনিধিরা নন, মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েছেন আমলা ও পুলিস আধিকারিকদের একাংশও। আলাদাভাবে রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা চালানোর পর কর্পোরেশন, মিউনিসিপ্যালিটির কাজকর্ম সংক্রান্ত যে রিপোর্ট এসেছে, তার কাগজ এবং ছবি তুলে ধরে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরসভার বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ মমতা বলেছেন—‘কী অবস্থা! আবর্জনা সাফ হচ্ছে না। এবার কি আমায় ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নামতে হবে!’

‘টাকা খেয়ে’ লোক বসানো এবং বেহাল পরিষেবা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তিরে বিদ্ধ হয়েছেন বিধাননগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুজিত বসু, মন্ত্রী অরূপ রায়, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং হাওড়ার তিন বিধায়ক। এমনকী হাওড়া সদর সহ রাজ্যের আরও দুই প্রান্ত হলদিয়া ও রানাঘাটের মহকুমা শাসকও ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায়। নাম না করলেও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ সহ আরও কয়েকজন এসেছেন সমালোচনার ‘স্ক্যানারে’। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্যের কর্পোরেশন, পুরসভাগুলির কাজের গতি খতিয়ে দেখতে সোমবার নবান্ন সভাঘরে ‌জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকে ‘অগ্নিকন্যা’র স্পষ্ট হুঁশিয়ারি—‘সরু সুতোর মতো পিলারের উপর বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, যেখানে সেখানে জবরদখল চলছে, ফুটপাত দখল হচ্ছে। পরিষেবা নেই, শুধু টাকা খাওয়া! টাকা তোলার মাস্টার নয়, জনসেবক চাই! না হলে ছুড়ে ফেলে দেব। জমি, বালি, কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত কাউকে রেয়াত করব না।’ তাঁর স্পষ্ট বার্তা—‘ভালো জামা-কাপড় পরব, গাড়ি চড়ব, ভালো রেস্তরাঁয় খাব, খান। কিন্তু নিজের কাজের যে জায়গা... পুরসভা, ওয়ার্ড, এলাকা—সেটার যত্ন তো নেবেন! কাউকে পোষার জন্য এখানে আসিনি। দায়বদ্ধতা শুধু মানুষের প্রতি।’ সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনী পর্বে ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে এহেন দলীয় জনপ্রতিনিধিদের কয়েকজন যে বিজেপিকে টাকা দিয়েছেন, নাম না করে সেটাও স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পংক্তিতে তিনি ফেলেছেন সরকারি আমলা ও পুলিসের একাংশকেও।  

লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছে শাসক তৃণমূল। ১২৬টি পুরসভার মধ্যে ৭৬টিতে এগিয়ে পদ্মপার্টি। ফল ঘোষণার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের মূল কাজই হল নাগরিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। সেটা না পারলে পদ আঁকড়ে থাকার যোগ্যতাই আপনার নেই।’ সেই সুরেই এদিন ‘অকেজো পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া’ এবং জনপ্রতিনিধিদের ‘ছুড়ে ফেলার’ মতো চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। বৈঠকের শুরু থেকে তাঁর সুর ছিল চড়া—‘অনেক শুনেছি, আর নয়! আজ আমি বলব, আপনারা শুনবেন!’ দক্ষিণবঙ্গ, কলকাতা হয়ে উত্তরবঙ্গ—পরিষেবা নিয়ে মানুষের ক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে নেতা-মন্ত্রীদের ভর্ৎসনায় ‘ফালাফালা’ করেছেন। যেমন কাঠগড়ায় তুলেছেন ২০১১ সাল থেকে সাড়ে ৫১ হাজার কোটি টাকা পাওয়া নগরোন্নয়ন দপ্তরকে, তেমনই সতর্ক করেছেন বিদ্যুৎ দপ্তরকেও। সভায় মমতা বলেন, ‘টাকা দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ দপ্তরকে। সেই টাকা অন্য খাতে খরচ হয়ে যাচ্ছে কীভাবে? এমনটা চললে টাকা দেওয়াই বন্ধ করে দেব।’ বিদ্যুৎ অপচয়ের প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও সতর্ক হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

No comments