Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

অভিনব ভাবে জনসংযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু

চৈতন্যপুর অঞ্চলে সারাদিন অভিনব ভাবে জনসংযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশুমোদির গ্যারান্টি বনাম দিদির লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! এই দুই অস্ত্র নিয়ে জোর টক্কর চলছে হলদিয়া-সুতাহাটার গ্রামে। ভোট প্রচারে চলছে পদ্ম শিবিরের চমক বনাম  ঘাস…

 



চৈতন্যপুর অঞ্চলে সারাদিন অভিনব ভাবে জনসংযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু

মোদির গ্যারান্টি বনাম দিদির লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! এই দুই অস্ত্র নিয়ে জোর টক্কর চলছে হলদিয়া-সুতাহাটার গ্রামে। ভোট প্রচারে চলছে পদ্ম শিবিরের চমক বনাম  ঘাসফুল শিবিরের আবেগের লড়াই। ভোটারের মন পেতে বিজেপির প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যরা নতুন এক রঙা পাটভাঙা শাড়ি, পাঞ্জাবি পরে পৌঁছে যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে ঘরের ছেলে বা মেয়ের দাবি নিয়ে বাড়ির উঠোনে হাজির হচ্ছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই সুতাহাটা ব্লকের প্রায় ১৫ হাজার পরিবারে এক রাউন্ড ঘুরে ফেলেছে বলে দাবি ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের। সেই দাবির প্রমাণ মিলেছে সোমবার দিনভর সুতাহাটার চৈতন্যপুর অঞ্চলে তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের প্রচারে। দশ মাস আগে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করেছে। বিজেপির অঞ্চলে এদিন টোটো চড়ে দেবাংশুর প্রচারের সময় মানুষের উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা দেখে লিডের আশায় বুক বাঁধছে তৃণমূল। ভোট প্রচারের এই ভিড়কে অবশ্য গুরুত্ব দিতে রাজি নয় পদ্ম শিবির। কিন্তু আড়ালে পদ্ম নেতারা স্বীকার করছেন, এটা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের এফেক্ট। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি বনাম গেরুয়া সংগঠনের নেতাদের ঠান্ডা লড়াই ভোটের ময়দানে টেনশন বাড়িয়েছে বলে মানছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারাই। 

ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁই ছুঁই। মেঘলা আকাশ আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে এদিন গরমের তেজ তেমন ছিল না। উত্তর রানিচক গ্রামে রাস্তার পাশে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঠায় দাঁড়িয়ে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধ মুরারীমোহন দাস। হাতে রজনীগন্ধার গোড়ে মালা। প্রার্থী দেবাংশুকে নিজের হাতে মালা পরিয়ে আবেগে টেনে নিলেন বুকে। তার কিছুক্ষণ আগেই বরদা গ্রামে আশি ছুঁই ছুঁই সাবেরা বিবি, তিরাশি বছরের গোবিন্দপুরের বাণীতোষ দিন্দা প্রাণভরে আশীর্বাদ করলেন তৃণমূলের তরুণ প্রার্থীকে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টোটো চড়ে গ্রাম পরিক্রমা, বৈঠকী সভা, সাংগঠনিক মিটিং চলে একের পর এক। বরদার পঞ্চাননতলায় মন্দিরে পুজো দিয়ে এদিন প্রচার শুরু করেন দেবাংশু। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক মিশ্র, ব্লক সভাপতি পার্থ বটব্যাল প্রমুখ। বরদা, আকুবপুর, কালীনগর, ভূপতিনগর, উত্তর রানিচক, চৈতন্যপুর, কেশবপুর, গোবিন্দপুর সহ ১৭-১৮টি বুথ এলাকায় টোটো চেপে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ভোট প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী। বিকেলে আশদতলিয়া অঞ্চলে জনসংযোগ সেরে সন্ধেয় কুঁকড়াহাটির গাজিপুরে পথসভা করেন তিনি।

এদিন দেবাংশু মূলত সুতাহাটায় বিজেপির গড়ে দিনভর প্রচার চালিয়েছেন। চৈতন্যপুর বিজেপির দখলে রয়েছে। কুঁকড়াহাটি এলাকায় বিজেপি পঞ্চায়েতে শক্তি সঞ্চয় করলেও তৃণমূল শেষমেশ দখল নিয়েছে পঞ্চায়েতের। তবে তিনটি অঞ্চলেই দেবাংশুর প্রচারে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক মিশ্রর নিজের গ্রাম এলাকা চৈতন্যপুরে তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটে পিছিয়ে। সেজন্য লোকসভা ভোটে ওই এলাকায় লিড দিতে মরিয়া প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। অশোক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিতে বিজেপির দখলে থাকা চৈতন্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেই সবচেয়ে বেশি ৩৭ লক্ষ টাকার রাস্তা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের কাজ দেখেই মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ। দেবাংশু গ্রামে ঢুকতেই মহিলারা ছুটে এসেছেন ফুল নিয়ে, কেউ শাঁখ বাজাচ্ছেন আনন্দে। 

রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, তৃণমূল বা সিপিএমের ভোট প্রচারে যে আবেগ মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির ক্ষেত্রে সেটা অনুপস্থিত। প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে সংগঠনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। পুরনো নেতা কর্মীদের এবারও মাঠে নামাতে পারছে না বিজেপি। ফলে পঞ্চায়েতে এগিয়ে থাকার সুবিধে লোকসভায় কতটা নিতে পারবে, তা নিয়ে বিজেপি রীতিমতো ধন্দে। বিজেপির জেলা নেতা সোমনাথ ভুঁইয়া বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার একটা ফ্যাক্টর ঠিকই, তবে মোদিজির গ্যারান্টি হলদিয়ার যুব সমাজে দারুণ প্রভাব ফেলেছে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া বিধানসভার সুতাহাটা ব্লকের চৈতন্যপুর ও আশদতলিয়া অঞ্চলের  বিভিন্ন এলাকায় আজ তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক লোকসভার প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য মিছিল, পথসভার মাধ্যমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জনসংযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওই ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অশোক মিশ্র, সুতাহাটা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থ বটব্যাল সহ অন্যান্য দলীয় নেতৃবৃন্দ। এই জনসংযোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়।

No comments