তমলুক লোকসভা থেকে দেবাংশু জিতলে এক মাসের মধ্যে নন্দীগ্রামে আসবেন বলে কথা দেন- অভিষেক
তারিখটা ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি। নন্দীগ্রামের তেখালিতে ঐতিহাসিক জনসভা করে বিধানসভা নির্বাচনে জমি আন্দোলনের মাটি থেকে নিজে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করে…
তমলুক লোকসভা থেকে দেবাংশু জিতলে এক মাসের মধ্যে নন্দীগ্রামে আসবেন বলে কথা দেন- অভিষেক
তারিখটা ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি। নন্দীগ্রামের তেখালিতে ঐতিহাসিক জনসভা করে বিধানসভা নির্বাচনে জমি আন্দোলনের মাটি থেকে নিজে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। এপর্যন্ত ভিড়ের নিরিখে সেটাই নন্দীগ্রামে বড়চেয়ে বড় জমায়েত। বুধবার ষষ্ঠদফা নির্বাচনে প্রচারের শেষলগ্নে নন্দীগ্রামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন। সেই সভায় ভিড় তিন বছর আগের তেখালির মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে স্মরণ করিয়ে দিল। এদিন উপচে পড়া ভিড় দেখে অভিষেকের চোখে মুখে প্রশান্তির ছাপ। শরীরী ভাষায় স্বপ্নপূরণের আত্মবিশ্বাস।
বুধবারের সভায় শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকা থেকে লোকজন আনার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই নির্দেশমতো ওই বিধানসভার ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে লোকজন আনা হয়। তাতেই এত জমায়েত হবে, সেটা নিজেরাও বিশ্বাস করতে পারছে না ব্লক নেতৃত্ব। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকাকে বিজেপি সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। তারমধ্যে মনুচক জালপাই, পঞ্চমখণ্ড জালপাই, জেলেমারা প্রভৃতি গ্রাম উল্লেখযোগ্য। গেরুয়া হুমকি উপেক্ষা করেই এদিন মুনচক জালপাই গ্রাম থেকে দীপঙ্কর জানা, পঞ্চমখণ্ড জালপাই থেকে বুদ্ধদেব মাঝি, বাসুলিচক থেকে দেবকান্ত মাইতিরা সভায় এসেছিলেন। তাঁরা বলেন, ২০২১ সালে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক কটাক্ষ, সমালোচনা করা হয়েছে। এবার ভোটে তারই জবাব দেওয়ার পালা। সেই লক্ষ্যে আমরা সভায় এসেছি।
এবার বিরুলিয়া, সোনাচূড়া, ভেকুটিয়া প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলকে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিরুলিয়া পঞ্চায়েতের রঙ্কিনীপুর, পশ্চিম বিরুলিয়া, বৈষ্ণবপুর গ্রামে দেওয়াল লিখতে পারেনি তৃণমূল। ২০ তারিখ রঙ্কিনীপুর গ্রামে গুরুপদ দাস নামে এক তৃণমূল কর্মীকে বিজেপি কর্মীরা ব্যাপক মারধর করে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আড়াই ঘণ্টা পড়েছিলেন। তারপর পুলিস তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। স্বরূপ কাজলি নামে এক বিজেপি কর্মীকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। এত সন্ত্রাসের পরও সেই বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে এদিন প্রচুর সংখ্যক কর্মী-সমর্থক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যান। বিরুলিয়া অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরুণাভ জানা বলেন, ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসছেন। গত বিধানসভায় ওরা হুমকি ধমকি দিয়ে আটকে রেখেছিল। এবার আর সেটা করতে পারবে না। মানুষ এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন।
এদিনের সভায় ভিড় দেখে বারবার নন্দীগ্রামবাসীর উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিষেক। মঞ্চের সামনে হাঁটু গেড়ে প্রণাম জানান। নন্দীগ্রামবাসীর পাশে থাকার বার্তা দেন। আগামী ৪ জুন তমলুক লোকসভা থেকে দেবাংশু জিতলে এক মাসের মধ্যে নন্দীগ্রামে আসবেন বলে কথা দেন। এমনকী আগামী দু’বছরের জন্য উন্নয়নের ডালি নিয়ে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন।
এদিন সভায় উপস্থিত কর্মীদের বুথ পাহারা দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দেন অভিষেক। দু’হাত তুলে কর্মীদের কাছ থেকে এই মর্মে অঙ্গীকারও আদায় করেন।
No comments