কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রাঘাত, দক্ষিণবঙ্গে মৃত ৬
রবিবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির ফলে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক মহিলাসহ পাঁচজন মারা গিয়েছেন বজ্রাঘাতে। বজ্রাঘাতে মৃতদের মধ্যে তিনজন কৃষক। সকালে তা…
কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রাঘাত, দক্ষিণবঙ্গে মৃত ৬
রবিবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির ফলে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক মহিলাসহ পাঁচজন মারা গিয়েছেন বজ্রাঘাতে। বজ্রাঘাতে মৃতদের মধ্যে তিনজন কৃষক। সকালে তাঁরা মাঠে চাষের কাজে ছিলেন। তখনই বজ্রাঘাতে তাঁদের মৃত্যু হয়। বজ্রাঘাতে তিনজন জখম হওয়ারও খবর মিলেছে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে একজনের। দীঘা সংলগ্ন উদয়পুর সমুদ্র সৈকতে এদিন সন্ধ্যায় বাজ পড়ে দুই পর্যটক সহ তিনজন জখম হন। পর্যটকরা নদীয়ার বাসিন্দা। তৃতীয় ব্যক্তির বাড়ি উদয়পুর অঞ্চলে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে অমরপুরে ঝড়ের দাপটে বাঁশের সেতু থেকে একটি যাত্রীবাহী প্রাইভেট গাড়ি দামোদর নদে পড়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ে কিছু ঘর-বাড়িরও ক্ষতি হয়েছে।
রবিবার ভোর থেকে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রমেঘের সঞ্চার হয়। বেশি মাত্রায় ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনায়। মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওই জেলাগুলিতেই। কলকাতার কেন্দ্রস্থল ধর্মতলায় দুপুরে বড় ধরনের বজ্রপাত হয়। তাতে কেউ হতাহত না-হলেও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। শক্তিশালী বজ্রাঘাতে মেট্রো মলের ছাদের উপরের পিলারের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। সেখানে রাস্তায় একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। মলের ভাঙা অংশটি তার উপরে পড়ায় গাড়িটির ছাদ তুবড়ে গিয়েছে। সৌভাগ্যবশত, চালক বিনোদ প্রসাদ সেইসময় ওই গাড়ির বাইরে ছিলেন। ফলে তিনি পুরো রক্ষা পেয়েছেন। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাসের অনুমান, বজ্রপাতের প্রচণ্ড শব্দ ও কম্পনেই পিলারটি ভেঙে গিয়েছে।
শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কার পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দপ্তর। যেসব জেলায় ক্ষতি বেশি হয়েছে, সেখানকার জন্য ছিল কমলা সতর্কতা। আজ সোমবারের জন্যও থাকছে বজ্রমেঘ থেকে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা। তবে উপকূল সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কিছু এলাকায় ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাতের মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অধিকর্তা। উত্তরবঙ্গে বুধবার পর্যন্ত ঝড়বৃষ্টি চলতে পারে। রবিবার শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা শনিবারের তুলনায় প্রায় ৭ ডিগ্রি কমে ৩০ ডিগ্রিতে নেমে আসে। সোমবারের পর দক্ষিণবঙ্গে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ফের ধাপে ধাপে বাড়বে। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বর্ণবেড়িয়া এলাকায় নেপাল হালদার (৩৯), দত্তপুকুরের মিরহাটি এলাকায় ইমদাদুল দর্জি (৪৪), হুগলির তারকেশ্বরের পিয়সারা গ্রামে লক্ষ্মণ মালিক (২৬) মাঠে চাষ করার সময় বজ্রাঘাতে মারা যান। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির চাঁচাই এলাকায় বজ্রপাতে মারা গিয়েছেন ভীম কর (৫০) নামে এক ব্যক্তি। অন্যদিকে, হুগলি জেলায় ধনেখালি মোল্লাপাড়ায় আলিয়া বেগম (৪০) নামে এক মহিলাও বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন। হুগলিরই পুড়শুড়ার বলরামপুরে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে আনন্দ পাড়ুইয় (৪২) নামে এক যুবকের। ওই ঘটনায় তাঁর ভাই প্রণবেশ এবং এক মেয়ে গুরুতর জখম হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা এদিন কিছুক্ষণ রাস্তা অবরোধ করেন। অন্যদিকে, প্রবল ঝড়ে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ও মেমারি এলাকা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় দেগঙ্গার মাটিকুমড়া গ্রামে বেশ কিছু ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে।
No comments