পর্দার পিছনের খলনায়কদের বাঁচাতে যাবেন কেন? - সুমন চট্টোপাধ্যায়
সবই তো গেল। চাকরি যাবে, টাকা ফেরত দিতে হবে, মায় যে টাকা মাইনে পেয়েছেন তার ওপর ১২% হারে সুদ গুনতে হবে। সব অর্থে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সর্বহারা।
যে কোনও সভ্য ব্যবস্থায় এর …
পর্দার পিছনের খলনায়কদের বাঁচাতে যাবেন কেন? - সুমন চট্টোপাধ্যায়
সবই তো গেল। চাকরি যাবে, টাকা ফেরত দিতে হবে, মায় যে টাকা মাইনে পেয়েছেন তার ওপর ১২% হারে সুদ গুনতে হবে। সব অর্থে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সর্বহারা।
যে কোনও সভ্য ব্যবস্থায় এর দায় মাথায় নিয়ে গোটা মন্ত্রিসভার ইস্তফা দেওয়া উচিত। অসভ্য-শাসিত পশ্চিমবঙ্গে তা হবেনা আমরা জানি। মুখ্যমন্ত্রী দূরস্থান কেউ এর দায় নেবেনা। সব দায় জেল-বন্দী এক প্রাক্তন মন্ত্রী, কয়েক জন আমলা আর খুচরো দু-চার পিস ফড়েদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলের প্রধান সেনাপতি আকাশ বিহারী হয়ে ভোটের মঞ্চ দাপিয়ে বেড়াবেন।
শাসকের লজ্জা নেই, আমাদের আছে। এমন বীভৎস কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হওয়ার পরে বাঙালি বলে আর পরিচয় দিতে কুন্ঠা হবে। এই কেলেঙ্কারি সর্ব অর্থে আমাদের জাতিসত্তার ওপর পরমানু বিস্ফোরণের সমতুল। এই ধ্বংসাবশেষ থেকে পুনর্নিমানের কোনও আশু সম্ভাবনা নেই।
তবে আমাদের সামনে কাকতালীয়ভাবে একটি নতুন ঐতিহাসিক সম্ভাবনা উপস্থিত। আমাদের রাজ্যে সবে তিনটি লোকসভা আসনে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। বাকি আরও ৩৯ টি আসন। ভাবুন, নতুন করে ভাবুন, দলীয় স্বার্থ, ধর্মের সুড়সুড়ানির ঊর্ধ্বে উঠে ভাবুন। মাতৃজঠরের লজ্জা যারা তাদের চিহ্নিত করে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করার এটা ঐতিহাসিক সুযোগ, সময়ের দাবি। সংশয়ে ভারাক্রান্ত হয়ে থাকার অবসর আর নেই।
যাঁদের চাকরি গেল তাঁদের প্রতি আমার কোনও আক্রোশ নেই। বরং আমি তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাঁরা যে অন্যায়টা করেছেন তার দায় যতটা না ব্যক্তিগত তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যবস্থার যেখানে ঘুষ বিনে চাকরি হওয়ার জো নেই। চাকরি হারানোদের উচিত কারা তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়েছিল সেই নামগুলো প্রকাশ্যে এসে জানিয়ে দেওয়া এবং তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার করা। সবই যখন গেল তখন আর পর্দার পিছনের খলনায়কদের বাঁচাতে যাবেন কেন?
No comments