মধুবন বানাতে বানাতে মধুসুদন মণ্ডলের গলায় শোনা যায় "
২০ রকমের আইটেম দিয়ে মধুবন বানাতে বানাতে মধুসুদন মণ্ডলের গলায় শোনা যায় "জয় জয় রঘুপতি রাঘব রাজা রাম/ দিনে দিনে বাড়ে দেখো জিনিসের দাম", আবার কখনও জেলের থালা বড় জ্বাল…
মধুবন বানাতে বানাতে মধুসুদন মণ্ডলের গলায় শোনা যায় "
২০ রকমের আইটেম দিয়ে মধুবন বানাতে বানাতে মধুসুদন মণ্ডলের গলায় শোনা যায় "জয় জয় রঘুপতি রাঘব রাজা রাম/ দিনে দিনে বাড়ে দেখো জিনিসের দাম", আবার কখনও জেলের থালা বড় জ্বালারে/ এই ছোঁড়া এই তো গেলি আবার এলি/ আইন আছে সে তো কানারে।" এই মধুসুদন মণ্ডল হলদিয়ার একসময়ের চারণ কবি, বর্তমান কিষান ক্ষেতমজুর তৃণমূল কংগ্রেসের হলদিয়া শহর কমিটির সভাপতি। স্বনির্ভর হওয়ার জন্য দোকান পেতে এখন এমনই সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
হলদিয়ার দুর্গাচক টাউন স্টেশনের রেল ক্রসিংয়ের পাশেই এক সময় ছিল তাঁর 'আপ্যায়ন' নামে হোটেল ছিল। কিন্তু নকশাল আন্দোলনের নেতা, নন্দীগ্রাম জমি রক্ষার আন্দোলনের যখন ভিড়েছিলেন, তখন তাঁকে দেশদ্রোহীতার কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। ১২ বছর জেল জীবনের পর ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বেকসুর খালাস হন। তারপর থেকেই নিজেকে সমাজের মূল স্রোতে রেখে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন রূপায়নে উদ্যোগী হয়েছেন। এখন আপ্যায়ন হোটেলের সেই জায়গায় গড়ে উঠেছে মুখরোচক টিফিনের দোকান। তিনি নিজে হাতে তৈরি করছেন। রেলযাত্রী থেকে পথচলতি মানুষ তাঁর তৈরি টিফিন কিনতে ভিড় করছেন। মধুদার ঝালমুড়ির পাশাপাশি টিফিন
'মধুবন' ইতিমধ্যে দারুন সাড়া ফেলেছে। সুজি, আটা, পরিমাণ মতো লবণ, গাজর, নারকেল আখের গুড়, কারি পাতা টমেটো সস, পোস্ত এমন কুড়ি রকম খাদ্যবস্তু দিয়ে তৈরি মধুবন জিভে জল এনে দেওয়ার মতো টিফিন। ইতিমধ্যে সমাজ সচেতনতার প্রচারে তিনি দেড়শো গান লিখে ফেলেছেন। বিভিন্ন সভা সমিতিতে নিজের গান তৈরি করে সুর দিয়ে নিজেই গিয়ে থাকেন। আবার টিফিন তৈরি থেকে বিক্রির সময়কালে গুনগুনিয়ে নারা গান ক্রেতাদের বাড়তি প্রাপ্তি। তিনি বলেন, "জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর নিজের পায়ে দাঁড়াবার নানা অংক কষেছি। শুধু গান লিখে কিংবা সমাজ সচেতনতা ভাষণ দিয়ে তো আর পেট ভরবে না। আমাকে কিছু করতে হবে। সেই ভাবনা থেকে আজকের টিফিনের দোকান পেতে বসেছি। ঝালমুড়ির পাশাপাশি আমার তৈরি মধুবন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। আগামিদিনে আরও বিভিন্ন রকমের টিফিন তৈরি করে দুটো পয়সা উপার্জনের পাকাপাকি রাস্তা তৈরি করতে চাই।" স্কুলের টিফিন বাক্সে একটি মধুবন মানে একরাশ আনন্দ। বলেই ফেললেন তেমনই একজন অভিভাবক ক্রেতা। সকালের শিফটে চাকুরীজিবিদের খাওয়ারের এটি একটি মজাদার আইটেম। এখন মধুদার মধুবন আগামিদিনে আরও বেশি মধুময় হবে ।
No comments