সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান
কোম্পানি টানা লোকসানে চলছে। ট্যাক্স পর্যন্ত দিতে পারছে না। কিন্তু নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা দেওয়া বন্ধ করেনি। এক-দু’…
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান
কোম্পানি টানা লোকসানে চলছে। ট্যাক্স পর্যন্ত দিতে পারছে না। কিন্তু নির্বাচনী বন্ড কিনে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা দেওয়া বন্ধ করেনি। এক-দু’টি নয়, অন্তত ৩৩টি কোম্পানি এভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলকে দিয়েছে প্রায় ৪৩৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা! সর্বভারতীয় সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’তে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে চোখ কপালে তুলে দেওয়া এই তথ্য।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান সামনে আসছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে ভয় দেখিয়ে বা সুবিধা পাইয়ে দিতে বন্ড মারফৎ সিন্দুকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঢুকিয়েছে বিজেপি। শুধু তারা নয়, অন্য রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলেও ঢুকেছে বহু সন্দেহজনক কোম্পানির অনুদান। সবচেয়ে বেশি লাভবান বিজেপি। কিন্তু এবার যে তথ্য সামনে এসেছে, তা আরও চমকপ্রদ। লোকসানে চলা ৩৩টি কোম্পানি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ৫৮২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। তার ৭৫ শতাংশই পেয়েছে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর পার্টি। সেটা কোনওমতেই ৪৩৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকার কম নয়। অথচ ২০১৬-১৭ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত সাত বছরে ওই কোম্পানিগুলির লোকসানের বহর কম নয়। অঙ্কটা প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ঘাটতিতে থাকা কোম্পানিগুলি কীভাবে কোটি কোটি টাকার বন্ড কিনতে পারে? তারা কি আয়-ব্যয়ের ভুল হিসেবে দিয়েছে? নাকি ঘুরপথে অন্য কারও টাকা হাত বদল হয়েছে? যা উস্কে দিয়েছে আর্থিক তছরুপের জল্পনা।
ওই প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবর অনুসারে, এমন ৪৫টি কোম্পানি রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিয়েছে, যাদের টাকাপয়সার উৎসই সন্দেহজনক। কোম্পানিগুলি মোট ১ হাজার ৪৩২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার বন্ড কিনেছে। তার মধ্যে ৭৪ শতাংশ (১ হাজার ৬৮ কোটি ৪০ টাকা) ভাঙিয়েছে বিজেপি। লাভ-লোকসান ও কর প্রদানের তথ্যের ভিত্তিতে ওই কোম্পানিগুলিকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে থাকা ৩৩ কোম্পানি গত সাত বছরে জমাখরচের হিসেবে লাভের ঘরে শূন্য বা লোকসান দেখিয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি আবার কোনও করই দেয়নি। অথচ তারা ৫৮২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। তার মধ্যে ৪৩৪ কোটিই দিয়েছে বিজেপিকে।
দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকা ছ’টি কোম্পানি আবার ওই সাত বছরে যত লাভ দেখিয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অঙ্কের অনুদান দিয়েছে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। সেই অঙ্কটা প্রায় ৬৪৬ কোটি টাকা। তার ৯৩ শতাংশ অর্থাৎ ৬০১ কোটি টাকাই গিয়েছে বিজেপির ঘরে। তৃতীয় শ্রেণির তিনটি কোম্পানি সাত বছরে মোট ১৯৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বন্ডে অনুদান দিয়েছে। এরমধ্যে বিজেপির ভাগ্যে জুটেছে ২৮ কোটি ৩০ লক্ষ (প্রায় ১৫ শতাংশ)। এই কোম্পানিগুলি লাভ দেখালেও প্রত্যক্ষ কর প্রদানের কোনও তথ্য নেই। চতুর্থ শ্রেণির তিনটি কোম্পানির প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা অনুদানের ৩০ শতাংশ পেয়েছে বিজেপি। এই কোম্পানিগুলির সাত বছরে মোট লাভ বা প্রত্যক্ষ কর প্রদানের কোনও তথ্য নেই। ফলে সেগুলি আর্থিক তছরুপের সঙ্গে যুক্ত শেল কোম্পানি কি না, এমন প্রশ্ন উঠেছে
No comments