মেট্রোর পর গঙ্গার নীচ দিয়ে যান চলাচলও?
দেশের মধ্যে প্রথম নদীর তলা দিয়ে মেট্রোয় যাত্রী পরিবহণ শুরু হয়েছে কলকাতায়। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত চালু হয়েছে এই পরিষেবা। এবার নদীর তলা দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থাও গড়ে উঠতে চলেছে …
মেট্রোর পর গঙ্গার নীচ দিয়ে যান চলাচলও?
দেশের মধ্যে প্রথম নদীর তলা দিয়ে মেট্রোয় যাত্রী পরিবহণ শুরু হয়েছে কলকাতায়। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত চালু হয়েছে এই পরিষেবা। এবার নদীর তলা দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থাও গড়ে উঠতে চলেছে এই শহরে। পোর্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে গঙ্গার তলদেশে তৈরি হবে নয়া টানেল। সেখান দিয়েই যান চলাচল করবে। মূলত পণ্যবাহী গাড়িগুলি চালানোর জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (এসএমপি) কর্তৃপক্ষ গঙ্গার নীচ দিয়ে টানেল নির্মাণ করতে চাইছে। সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই টানেল নির্মাণের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ চলছে। তা হয়ে গেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
কলকাতা বন্দরে যেসব পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করে, সেগুলির বেশিরভাগই বিদ্যাসাগর সেতু ব্যবহার করে। কলকাতা শহরে বড় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের উপর কিছু বিধিনিষেধ আছে। দিনের একটা বড় সময় শহরের রাস্তা দিয়ে বড় ট্রাক চালানো যায় না। বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে রাতে ট্রাকগুলিকে যেতে দেওয়া হয়। রাতে প্রচুর ট্রাক এসে যাওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। গঙ্গার তলা দিয়ে টানেল তৈরি হলে এই সমস্যা থাকবে না। সেক্ষেত্রে অনেক দ্রুত ট্রাকগুলি বন্দর ছেড়ে যেতে পারবে ও সেখানে আসতে থাকবে। গতি আসবে পণ্য পরিবহণে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ একসময় বড় জলযানের মাধ্যমে ‘রো রো’ সার্ভিস চালু করে পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে গঙ্গা পার করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু তা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। কয়েক বছর আগে গঙ্গার তলা দিয়ে টানেল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সমীক্ষা করানো হয় একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে। সমীক্ষার রিপোর্ট আসার পর এখন ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। এরপর প্রকল্প রূপায়ণের জন্য আগ্রহপত্র ও টেন্ডার ডাকা হবে। বেসরকারি বিনিয়োগেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করায় জোর দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেলজিয়ামের অ্যান্টোয়াপ বন্দরে নদীর তলা দিয়ে এই ধরনের একটি টানেল আছে। সেটিকেই মডেল হিসেবে সামনে রাখা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ৬ লেনের টানেলটি তৈরি করতে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। টানেলের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১.৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৮০০ মিটার থাকবে গঙ্গার তলায়। কলকাতা বন্দরের নেতাজি সুভাষ ডক সংলগ্ন এলাকা থেকে টানেলটি হাওড়ার দিকে শালিমার-বটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে উঠবে। টানেল থেকে বেরনোর পর পণ্যবাহী গাড়িগুলি কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে যাবে। টানেলটি তৈরি হলে বন্দরে আসা ট্রাকগুলিকে খিদিরপুর এলাকার রাস্তাঘাট ব্যবহার করতে হবে না। সেখানকার রাস্তাগুলিতে এখন ব্যাপক যানজট হয় বন্দরের ট্রাকের জন্য।
No comments