Page Nav

HIDE

Grid Style

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

আজ শ্রীশ্রী নীল পূজা

"নীলের ঘরে দিলাম বাতি,সাক্ষী থেকো মা ভগবতী।"আজ শ্রীশ্রী নীল পূজা। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন নীলপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নীলকণ্ঠ হল মহাদেব শিবের অপর নাম। নীল বা শিবের পূজা হল এক শৈব আচার। এইদিন মায়েরা নিজের সন্তান এর মঙ…

 



"নীলের ঘরে দিলাম বাতি,সাক্ষী থেকো মা ভগবতী।"আজ শ্রীশ্রী নীল পূজা। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন নীলপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নীলকণ্ঠ হল মহাদেব শিবের অপর নাম। নীল বা শিবের পূজা হল এক শৈব আচার। এইদিন মায়েরা নিজের সন্তান এর মঙ্গল কামনায় নীরোগ সুস্থ জীবন কামনা করে সন্তানের কল্যাণার্থে সারাদিন উপবাস রেখে নীল পূজার পর সন্ধ্যাবেলায় শিব ঠাকুরের কাছে বাতি দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন। 

দুধ‚ দই, ঘি, মধু ও গঙ্গাজলের মিশ্রণ দিয়ে শিবলিঙ্গকে স্নান করাবেন। স্নান করানোর সময় মনে মনে এই মন্ত্রটি উচ্চারণ করবেন :--

"ॐ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্।

উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোর্মুক্ষীয় মাঽমৃতাৎ।।

ॐ তৎপুরুষায় বিদ্মহে মহাদেবায় ধীমহি

তন্নো রুদ্রঃ প্রচোদয়াৎ ॐ।" 

শিবের অন্য পূজার মতো এই পূজাতেও দিন আকন্দ ফুল ও বিল্বপত্র, চন্দন। 

পূজায় উৎসর্গ করা পাঁচটি ফলের মধ্যে অবশ্যই বেল ও কাঁচা আম ফল হিসেবে দেবেন। 

পূজার সময় শিবকে দুধ কিংবা ক্ষীর অর্পণ করুন।

পূজার সময় ‘ॐ নমঃ শিবায়ঃ’ মন্ত্রটি জপ করবেন।

পূজা শেষের পরে আরতির সময়ে শিবের একশো আটটি নাম জপ করুন। 

এরপর অবশ্যই নীল ষষ্ঠীর ব্রত কথা পাঠ করবেন।

নীল ষষ্ঠীর ব্রত কথা --

একদেশে এক বামুন আর বামুনী বাস করতো। তারা অতি ভক্তি করে সমস্ত বার–ব্রত করতো, কিন্তু তবুও তাদের ছেলে মেয়ে হয়ে একটাও বাঁচে না। তাদের মনে এই ধারণা হল যে এই সব বার–ব্রত করে কিস্যু লাভ নেই। আসলে সমস্তটাই মিথ্যে। এই বলে তারা সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে দু’জনে কাশী চলে গেল।

একদিন কাশীতে গঙ্গায় দুজনে চান করে উঠে ঘাটের ওপর বসে মনের দুঃখে দুজনে কাঁদতে লাগলো। তাই দেখে মা ষষ্ঠী বুড়ি বামনীর বেশ ধরে এসে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, “হ্যাঁগা,তোরা কাঁদছিস কেন ?”

বামুনী বললে, “সে কথা তোমায় বলে কি হবে মা ! আমরা বড় মনের জ্বালায় জ্বলছি, আমাদের পাঁচটি ছেলে আর একটি মেয়ে হয়েছিল, কিন্তু সব ক’টাই মরে গেল। তাই ভাবছি যে, সব বার–ব্রত, ঠাকুর দেবতা মিথ্যে। আমরা তো কোন বার–ব্রত বাদ দিইনি, তবে কেন আমাদের সব মরে গেল ?”

মা ষষ্ঠী বললেন, “দেখ বাছা, তোমরা সব বার-ব্রত কর বলে মনে বড় অহঙ্কার ছিল, সেইজন্যে সব মরে গেছে। শুধু কি আর বার-ব্রত করলেই হয়। ভগবানের ওপর বিশ্বাস থাকা চাই, মন পবিত্র থাকা চাই, সবার কাছে নিচু হওয়া চাই, একমনে মা ষষ্ঠীকে ডাকা চাই,তবে হয়।”

তখন বামনী বললে, “তাহলে আমাদের উপায় কি হবে মা ?”

মা ষষ্ঠী জিজ্ঞাসা করলেন, “তোরা কি নীল ষষ্ঠী করেছিস ?”

বামনী বললে, “সে কি মা ? কই ও ব্রত তো আমরা জানি না।”

তখন মা ষষ্ঠী বললেন, “সমস্ত চৈত্র মাস সন্ন্যাস করে শিব পুজো করবে, তারপর সংক্রান্তির আগের দিন, সমস্ত দিন উপোস করে সন্ধ্যার সময় নীলাবতীর পুজো করে নীলকণ্ঠ শিবের ঘরে বাতি জ্বেলে দিয়ে বলবে,

 

"নীলের ঘরে দিলাম বাতি, 

সাক্ষী থেকো মা ভগবতী।" 


তারপরে মা ষষ্ঠীকে প্রণাম করে তবে জল খাবে।” ঐ দিনকে ষষ্ঠীর দিন বলে। যারা নীল ষষ্ঠী করে তাদের ছেলে মেয়ে কখনও অল্প বয়সে মরে না।” এই কথা বলে মা ষষ্ঠী অদৃশ্য হয়ে গেলেন।

তারপর বামুন-বামনী দেশে ফিরে গিয়ে খুব ভাল করে নীল ষষ্ঠীর পুজো আরম্ভ করল। এরপর তাদের যতগুলো ছেলেমেয়ে হল, সবাই দিব্যি বেঁচে রইল।

পাড়ার সকলে বামনীর সুখ দেখে আর ঐ নীলষষ্ঠীর ব্রত জানতে পেরে সবাই নীল ষষ্ঠীর ব্রত করতে লাগল। এই ব্রত করে সবারই ছেলেপুলে নীরোগ হয়ে বেঁচে রইল।।

এরপর মহাদেবের প্রণাম মন্ত্র টি বলে মহাদেবকে  প্রণাম করবেন। প্রণাম মন্ত্র --

ॐ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে।

নিবেদয়ামি চাত্মানং গতিস্তং পরমেশ্বরম্।।

মহাদেবই হোন‚ বা মা ষষ্ঠী। সবার কাছেই মায়েদের একটাই প্রার্থনা‚ আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। তাই সন্ধ্যায় পুজো দিয়ে তবেই কিছু মুখে দিন। ঘরে ঘরে মায়েরা তাঁদের সন্তানদের মঙ্গল কামনায় বলুন --

"নীলের ঘরে দিলাম বাতি,সাক্ষী থেকো মা ভগবতী।"

No comments