নব দুর্গা ও যজ্ঞ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন
বাসুদেবপুর এইচএফসি ময়দানে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছর শুরু হল নবদূর্গা ও যজ্ঞা অনুষ্ঠান। ৯ই এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে চলবে আগামী ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত প্রত্যেকদিন সকাল থেকে যজ্ঞ অনুষ্ঠান এবং দু…
নব দুর্গা ও যজ্ঞ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন
বাসুদেবপুর এইচএফসি ময়দানে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছর শুরু হল নবদূর্গা ও যজ্ঞা অনুষ্ঠান। ৯ই এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে চলবে আগামী ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত প্রত্যেকদিন সকাল থেকে যজ্ঞ অনুষ্ঠান এবং দুর্গার যে নবরূপ সেই রূপের বিভিন্ন দিনের পূজা অনুষ্ঠান। কমিটি তরফ থেকে জানান হলদিয়া বাসীসহ এলাকার মানুষের সুখ সমৃদ্ধি কামনার জন্যই এই নবরাত্রি নবযজ্ঞ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। তারই সাথে শ্রী শ্রী মদনচাঁদ জীউর কে এখানেই আনা হয় এবং তার মহা প্রসাদ সকল ভক্তের জন্য দেওয়া হয়। এই যজ্ঞ অনুষ্ঠানে হিমালয় থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন সন্ন্যাসীগণ। বৈদিক মন্ত্রী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে বাসুদেবপুর এইচএফসি মাঠ থেকে ক্ষুদিরাম স্কয়ার পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে বৈদিক মন্ত্র। আজ জানালেন কমিটির সভাপতি কোষাধ্যক্ষ এবং যুগ্ম সম্পাদক সহ আয়োজক সংস্থার সদস্য ও সদস্যা বৃন্দ।
দুর্গাপুজোর সঙ্গে ৯ শব্দটির সম্পর্কটি বেশ আশ্চর্যের। যদিও বাঙালিরা ষষ্ঠী থেকে দশমী অবধি মা দুর্গার পুজোয় সামিল হই আমাদের অনেকেরই বোধহয় জানা নেই যে মহলায়ার অমাবস্যার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদ তিথি থেকেই কিন্তু দেবীপক্ষের সূচনালগ্ন ঘোষিত হয় এবং সেই তিথি থেকে পরপর ন'দিন কিন্তু দেবী দুর্গার জন্য পালিত হয় নবরাত্রি। তাই দুর্গা পুজো আর নবরাত্রি আলাদা নয় একে অপরের পরিপূরক। ভারতবর্ষের বহুস্থানেই নবরাত্রি বেশ সাড়ম্বরে পালিত হয়। বাঙালীদের স্মরণে মননে এই সময় দুর্গা থাকলেও নবরাত্রির সঙ্গে হয়ত তাদের বিশেষ পরিচিতি নেই। অথচ হিন্দু পুরাণশাস্ত্র অনুসারে দেবী দুর্গার নয়টি রূপ বা নবদুর্গার পুজোই হয় ন'দিন ব্যাপী নবরাত্রিতে। ৯ রাত্রিতে ৯ ভিন্ন রূপে দেবী পূজিতা হন। প্রতিপদ-এ তিনি গিরিরাজ হিমালয়-কন্যা দেবী শৈলপুত্রী, দ্বিতীয়া-য় তপশ্চারিনী দেবী ব্রহ্মচারিনী, তৃতীয়া-য় শান্তি ও কল্যাণের দেবী চন্দ্রঘন্টা, চতুর্থী-তে ব্রহ্মাণ্ডউৎপন্নকারিনী দেবী কুষ্মান্ড,পঞ্চমীতে কুমার কার্তিকেয়র মাতা দেবী স্কন্দমাতা, ষষ্ঠীতে মহর্ষি কাত্যায়নের কন্যা দেবী কাত্যায়নী, সপ্তমীতে দুষ্টের দমনকারী দেবী কালরাত্রি, অষ্টমীতে মহাদেব-পত্নী দেবী গৌরী এবং নবমীতে সর্বসিদ্ধি প্রদায়িনী দেবী সিদ্ধিদাত্রী। এই হল দুর্গার নয়টি ভিন্ন রূপ। আবার সপ্তমীর ভোরে আমরা যে নবপত্রিকা স্নান করাই তিনিই জ্যান্ত দুর্গার প্রতীক। মৃন্ময়ী দুর্গা মূর্তি কল্পনার আড়ালে নবপত্রিকার পুজো আমাদের কৃষি প্রধান দেশের ন'টি ভেষজ উদ্ভিদ স্বরূপিণী বলে দুর্গারই পুজো। কৃষিভিত্তিক সমাজ গঠনের পর্বে শস্যদায়িনী পৃথিবীমাতার আরাধনাই প্রকৃতপক্ষে নবপত্রিকার পুজো। পুরাণ অনুসারে দেবীর ন'টি রূপের প্রতিনিধি স্বরূপ কলাগাছ, কালোকচু, মানকচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক ও ধানগাছ কে শ্বেত-অপরাজিতার লতা ও হলুদ রঙের সুতো দিয়ে বেঁধে তৈরি হয় ‘নবপত্রিকা’।
কলাগাছ ব্রাহ্মণী-র, কালোকচু কালিকা-র, মানকচু চামুণ্ডা-র, হলুদ দুর্গা-র, জয়ন্তী কার্তিকী-র, বেল শিব/শিবানী-র, ডালিম রক্তদন্তিকা-র, অশোক শোকরহিতা-র, ধান লক্ষ্মী-র প্রতীক।
৯ সংখ্যাটির সঙ্গে একটি শুভ সংযোগ আছে নিউম্যারলজিতে। অতএব দুয়ে দুয়ে চার করে বলি নবরাত্রিতে নবপত্রিকা স্বরূপিণী নবদুর্গার পুজোও একটি শুভমুহূর্ত বাঙালি সহ সারা ভারতবর্ষের কাছে।
*আরো নিত্য নতুন আপডেট খবর দেখতে
আমাদের whatsapp চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন*
WhatsApp channel link - https://whatsapp.com/channel/0029VaCqqNUGk1FyEgWxaZ2r
No comments